Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রতিবেশীর হক আদায়

মুহাম্মদ সানাউল্লাহ | প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা কখনো (পরম) পুণ্য হাসিল করতে পারবে না যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় বস্তু থেকে (কিছু) ব্যয় কর। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, অবশ্যই আল্লাহ সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত’। (আলে ইমরান : ৯২) সূরা বাক্বারার ১৯৫ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় কর এবং নিজ হাতে নিজেদের জীবনকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না। এবং সৎকর্ম কর, নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন’। আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং মানুষের বসবাসের উপযোগী সব ধরনের উপকরণ দিয়েছেন। এ পৃথিবীতে যারা বাস করে তাদের ধন-সম্পদ সমান দেননি। এটি আল্লাহ তা‘আলা মহান বৈশিষ্ট্যের একটি। সম্পদ অর্জন দোষের কিছু নয়, তবে তা কুক্ষিগত করে রাখার কোন সুযোগ নেই। এর ফলে ধনীরা আরো ধনী, আর গরীবরা আরো গরীব হয়ে যাবে। তাই আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তাদের সম্পদে হক রয়েছে সাহায্যপ্রার্থী ও বঞ্চিতদের’। (সূরা : যারিয়াত, ১৯)

কুরআন মাজীদের উল্লিখিত আয়াত ও সংশ্লিষ্ট হাদীসের ভিত্তিতে বর্তমান সময়কে আরো ঘনিষ্ঠভাবে মূল্যায়নের সময় এসেছে। আমরা একটু তথ্য তালাশি করলেই জানতে পারব যে, আমাদের অনেক প্রতিবেশী করোনা মহামারির কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অবশ্যই তাদের দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। অনেক মানুষ আছে যাদের বিভিন্ন জেলায় বাড়িঘর আছে, কিন্তু করোনার কারণে তারা বাড়ি যেতে পারেনি, হাতে অর্থ না থাকায় পারছে না ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে। এমনকি অর্থসঙ্কটে থাকলেও কারো কাছে হাত পাততে পারছে না, কারণ এ ধরনের হাত পাতার মনমানসিকতা তাদের বংশেই নেই।

সমাজে ধনী-দরিদ্র উভয়ই রয়েছে। দীর্ঘ লকডাউনে পড়ে হয়ত অনেক ধনবান মানুষও বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছেন, কিন্তু তাই বলে প্রতিবেশীকে উপেক্ষা করা যাবে না। মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সেই ব্যক্তি মুমনি নয়, যে পেট পূর্ণ করে আহার করে, অথচ তার প্রতিবেশী ক্ষুধার্থ থাকে’। (আদাবুল মুফরাদ : ১১২)

মানুষ যত বেশি দান-খয়রাত করবে তার ধন-সম্পদে তত বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। আর দান করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে প্রতিবেশীকে। কারণ, আল্লাহর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমাকে প্রতিবেশীর হকের ব্যাপারে এত বেশি তাকিদ করেছেন যে, আমার কাছে মনে হয়েছে না জানি প্রতিবেশীকে মিরাসের অংশীদার বানিয়ে দেয়া হয়’। (সহীহ বুখারী ৬০১৪; সহীহ মুসলিম ২৫২৪)।

রমজানের শেষ দশকের দ্বিতীয় দিবস আজ। রমজান যত শেষ দিকে এগিয়ে যেত আল্লাহর নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দানশীলতা ততই গতিশীল হয়ে উঠত। তার অনুসরণে বিশ্ব মুসলিমকেও দানের প্রতিযোগিতা করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের দানের হাতকে শক্তিশালী করুন ও আমাদের সম্পদে বরকত দান করুন, আমীন।

কদরের সম্ভাব্য দ্বিতীয়টি আজ দিবাগত রাতে। কাজেই যথাসম্ভব রাত জেগে কিয়ামুল্লাইল, কুরআন তেলাওয়াত, তাসবীহ-তাহলীলে কাটাতে হবে এ রাত। নিজে জাগব এবং পরিবার সদস্যদেরও জেগে আল্লাহর ইবাদাতে মশগুল থাকার তালক্বীন দেব ইন শা আল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সব ইবাদাত কবুল করুন এবং আমাদের নিষ্পাপ হিসেবে গণ্য করুন। আমীন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ