বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিনাঞ্চলে সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’এর অস্তিত্ব এখন আর খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। শুধুমাত্র আন্তঃজেলা গনপরিবহন বাদে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলাÑউপজেলাগুলোতে সব ধনের যানবাহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বরিশাল মহানগরী থেকে থ্রী-হুইলার যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে বরিশালÑঢাকা মহাসকের ১৩০ কিলোমিটার দুরের কঠালবাড়ী ঘাটে। দোকানপাট খোলা দেয়ার সুবিধার সুবাদে কোথাও আর লকডাউনের দৃশ্যমান অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যাচ্ছেনা। তবে দক্ষিনাঞ্চল করোনা সংক্রমন ও মৃত্যুর মিছিল কিন্তু থেমে নেই । শুধুমাত্র এপ্রিল মাসেই দক্ষিনাঞ্চলে সরকারীভাবে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা ৩ হাজার ২শ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৫০ জন। আর গত ১৩ মাসে এ অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। মারা গেছেন ২৬৭ জন। এমনকি গত মাস যুড়েই দক্ষিনাঞ্চলে মৃত্যুর মিছিল ক্রমশ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম ৩ দিনেই মারা গেছেন ৫ জন। দক্ষিণাঞ্চলে এখনো সনাক্তের হার ১৫.৩১%। আর এ অঞ্চলে সনাক্তের তুলনায় মৃত্যু হার এখন ১.৮২%।
কিন্তু এরপরেও স্বাস্থ্য বিধি মানা সহ নিজেকে নিরাপদে রাখার নুন্যতম কোন আগ্রহ নেই বেশীরভাগ মানুষের। আর জনস্বার্থে সরকারী স্বাস্থ্যবিধি পালনে তেমন কোন পদক্ষেপও নেই দক্ষিণাঞ্চলে। বরিশাল মহানগরী সহ এ অঞ্চলের প্রতিটি শহরেই রাস্তার মোড়ে আড্ডাবাজি সহ কিশোর সন্ত্রাশীদের বিবেকহীন নোংরামী থেকে শুরু করে উঠতি বয়সীদের সর্বক্ষেত্রে বেপরোয়া কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে। যা সবার মাঝে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করলেও করোনার মত মরন ব্যাধীও তাদের এতটুকু দমাতে পারনি। বরিশাল মহানগরীর নবগ্রাম রোড-চৌমহনী লেকের পাড়, আমতলা মোড়ের স্বাধিনতা পার্ক, কির্তনখোলা পাড়ের মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, ৩০ গোডাউনের নদীর পাড় এবং বঙ্গবন্ধু উদ্যানের মত স্পর্ষকাতর স্থানেও কিশোর গ্যাং সহ উঠতি মাস্তানদের আড্ডাবাজীর সাথে ইভটিজিংও চলছে অবাধে। এমনকি এসব পার্ক সহ চৌমহনী লেকের পাড়ে আড্ডাবাজী জমে ওঠে সন্ধার পরেই। চলে অনেক রাত অবধী। এ লকডাউনের মধ্যেও চৌমহনী লেকের পাড়ে কিছু দোকান রাতভরই খোলা থাকছে রহস্যজনক ভাবে।
আর করোনা মহামারি প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনকে কোন ধরনের পাত্তাই দিচ্ছেনা কিশোর গ্যাং সহ উঠতি মাস্তানের দল। এমনকি সাধারন মানুষের মধ্যেও সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি শ্রেণী লকডাউনকে করোনার চেয়েও বড় দূর্ভাগ্য মনে করছেন। পেশাজীবীদের মনভাবও অনেকটা একই। চিকিৎসা বিজ্ঞান যতই ‘করোনা প্রতিরোধে লাকডাউনের বিকল্প নেই’ বলে সুপারিশ করুক না কেন, তাদের ভাষায় ‘এ রোগ গরীবের কোন ক্ষতি করবে না’ বলে মনগড়া বক্তব্য অব্যাহত রাখছে। অথচ গত এক মাসে শুধু বরিশাল মহানগরীতে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের অর্ধেকেরও বেশী নি¤œবিত্ত শ্রেণীর মানুষ। এ নগরীতে করোনা সংক্রমনে এ পর্যন্ত মৃত ৬১ জনের প্রায় অর্ধেকই ছিল নি¤œবিত্ত বা নি¤œ-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। কিন্তু তার পরেও মনগড়া কথা নিয়ে লকডাউনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এক শ্রেণীর মানুষের বিবেকহীন কর্মমান্ডে সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলের জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে।
কতিপয় বিকেহীনের নজিরবিহীন কর্মকান্ডে এ অঞ্চলের জনস্বাস্থ্যই ক্রমাগত ঝুকির কবলে বলে মন্তব্য করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য বিভাগের একাধীক দায়িত্বশীল কর্মকর্তাও। পরিস্থিতি উত্তরনে দক্ষিণাঞ্চলের স্থানীয় সরকার প্রশাসনের ভ’মিকা এপর্যন্ত কখনোই জনকল্যান মুখি ছিলনা বলেও অথিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনের কর্মকান্ডও ইতোমধ্যে ঢিলেঢালা হয়ে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।