লা লিগায় আজও কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে জিনেদিন জিদানকে। চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় অধিনায়ক সার্জিও রামোসকে দলে নেননি। প্রথম পছন্দের লেফটব্যাক ফারলাঁ মেন্দিও চোটে পড়েছেন। রাইটব্যাকেও নেই পছন্দের প্রথম দুজন। সামর্থ্যের শেষ বিন্দুতে থাকায় মাঝমাঠে মদরিচ ও ক্রুসকেও খেলানো যাচ্ছে না।
এত সব সমস্যা নিয়েই আজ ওসাসুনার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। গত ডিসেম্বরে এই ওসাসুনার বিপক্ষে বরফে ঢাকা এক মাঠে গোলশূন্য ড্র করায় চাকরি নিয়েই শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিলেন জিদান। আজ অবশ্য তেমন কিছু হয়নি। ঘরের মাঠে ওসাসুনাকে ২-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল।
এই জয়ে শীর্ষে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান দুইয়েই রাখল রিয়াল। এক ম্যাচ কম খেলে রিয়ালের চেয়ে তিন পয়েন্ট পিছিয়ে বার্সেলোনা। মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় এ সপ্তাহে অন্তত বার্সার চেয়ে পিছিয়ে যাওয়ার ভয় নেই তাদের।
সপ্তাহের মাঝে চেলসির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ, লিগে তাই পুর্ণ শক্তির দল নামাতে পারেননি জিদান। টনি ক্রুস ও লুকা মদরিচকে বিশ্রাম দেওয়ায় মাঝমাঠে সৃষ্টিশীলতার অভাব ছিল। সেটা কাটাতে চার ফরোয়ার্ড নিয়ে নেমেছিলেন জিনেদিন জিদান। করিম বেনজেমার পেছনে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, এডেন হ্যাজার্ড ও মার্কো আসেনসিও।
ম্যাচের শুরু থেকে একের পর এক গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন তারা। কিন্তু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বিদায়ের পর যা রিয়ালকে ভোগাচ্ছে, সেটা আজও ভোগাল। সুযোগ পেয়েও গোল করতে না পারার ব্যর্থতা আবারও রিয়ালের সর্বনাশ করেছে প্রথমার্ধে। ম্যাচের আধ ঘন্টার মধ্যে ১০টি শট নিয়েও গোল করতে পারেনি রিয়াল। উল্টো থিবো কোর্তোয়া দুর্দান্ত দুটি সেভ না করলে গোল খেয়ে বসতে পারত রিয়াল।
অবশ্য প্রতিপক্ষ গোলকিপারও কম যাননি। ২৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে অবিশ্বাস্যভাবে রিয়ালের তিনটি গোল ঠেকিয়েছেন সার্জিও এরেরা। হ্যাজার্ডের একটি শট ও মিলিতাওর দুটি হেড দারুণ রিফ্লেক্সে ফিরিয়েছেন ওসাসুনা গোলকিপার। এরপরও রিয়াল দুটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে। ৪৪ মিনিটে প্রায় এগিয়ে গিয়েছিল ওসাসুনা। কিন্তু চিমি এভিলা অফসাইডে থাকায় গোলটি বাতিল হয়।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই গল্প লিখেছে দুই দল। তবে সময় যত গড়িয়েছে ওসাসুনাও আক্রমণে উঠেছে বেশ কয়েকবার। ৬৪ মিনিটে মার্সেলো ও ভিনিসিয়ুসকে তুলে নেন জিদান। এরপর রিয়ালের আক্রমণের ধার বাড়ে একটু। গোল প্রয়োজন এমন অবস্থাতেও ৭০ মিনিটে চেলসি ম্যাচের কথা মাথায় রেখে হ্যাজার্ডকে তুলে নেন জিদান।
বদলি নামা ইসকোই ম্যাচের চেহারা বদলালেন। ৭৫ মিনিটে তাঁর নেওয়া কর্নার থেকে আবার হেড মিলিতাওর। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডারের হেড এবার আর ঠেকাতে পারেননি এরেরা। গোলটা যে কত গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটি জিদানের উচ্ছাস দেখেই টের পাওয়া গেছে। সাধারণত ডাগআউটে করতালিতে গোল উদ্যাপন করা রিয়াল কোচকে আজ ছুটতে দেখা গেছে!
৭৯ মিনিটে কাসেমিরোর গোলটা এসেছে ভাগ্য আর করিম বেনজেমার নৈপুন্যে। প্রায় মাঝমাঠ থেকে বল টেনে নিয়ে যান বেনজেমা।। বক্সে ঢোকার আগ মুহূর্তে থ্রু পাস দেন কাসেমিরোর দিকে। কাসেমিরো বলটা প্রথম স্পর্শে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু বুটের সামনে লাগায় আর নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়নি। কিন্তু বুটের সামনে লাগায় বলের গতি ও দিক বদলে যায় একটু। সেটাই বোকা বানায় এরেরাকে (২-০)।
এরপর আরও দুই-তিন গোল দিতে পারত রিয়াল। কিন্তু গোলের সামনে গেলেই খেই হারিয়ে ফেলার রোগটা আবার দেখা দিয়েছিল বেনজেমা-ইসকোদের।