খুলনা সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেকের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় এনটিভি খুলনার প্রতিনিধি আবু তৈয়ব মুন্সিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে খুলনা নগরীর নুরনগর এলাকায় নিজ বাসা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গতকাল সকালে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। ফেসবুকে সিটি মেয়রকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মামলা সূত্রে জানা গেছে। এদিকে এ সাংবাদিক তৈয়বের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে বিএনপি। আর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে পৃথক বিবৃতি দিয়েছে আ.লীগ। খুলনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম জানান, খুলনা সিটির মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক গত মঙ্গলবার বিকেলে এই মামলা করেন। সাংবাদিক তৈয়ব সম্প্রতি মেয়রকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি আপত্তিকর মন্তব্য করেন। এতে মেয়রের সম্মানহানি হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। মামলায় যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকার সাংবাদিক সবুর রানাকেও আসামি করা হয়েছে। তিনি মন্তব্য সম্বলিত পোস্টটি ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সি দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকারও খুলনা প্রতিনিধি।

নি:শর্ত মুক্তি চায় বিএনপি : দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি আ.লীগের
খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার এনটিভি’র সাংবাদিক আবু তৈয়র মুন্সীর দৃষ্টান্তমূলক ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ‘নগর সভাপতি ও সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেককে জড়িয়ে এনটিভি’র সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সি যে অসত্য, ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যে প্রনোদিত দালিলিক প্রমান ছাড়া তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ব্যক্তি আক্রোশে সংবাদ দিয়েছেন। সংবাদের মধ্যে কোন তথ্যই সত্য নয়। যে সংবাদ তার আইডিতে প্রকাশিত হয়েছে সেটা শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত আক্রোশ, এখানে সাংবাদিকতার লেশমাত্র দেখা যায়নি। বিবৃতিদাতারা হলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সুজিত কুমার অধিকারী।
অন্যদিকে, গতকাল এক বিবৃতিতে বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ‘ভোট ডাকাতির মাধ্যমে নির্বাচিত খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও খুলনার বিতর্কিত ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন’র মালিকানাধীন মুন স্টার পলিমার এক্সপোর্ট লি.শুল্ক ফাঁকি দেয়ায় মোংলা কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটিকে অর্থদন্ড ও লাইসেন্স বাতিলের ঘটনা জনসম্মুখে তুলে ধরায় তালুকদার আব্দুল খালেক গত মঙ্গলবার বিকেলে সিনিয়র সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সির বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। সিনিয়র সাংবাদিক আবু তৈয়েব মুন্সির বিরুদ্ধে মিথ্যা সাজানো মামলা দায়েরে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। বিবৃতিদাতারা হলেন, খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান মনি, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশাররফ হোসেন, জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, প্রমুখ।