Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খাগড়াছড়িতে ভিজিডির চাল কালোবাজারে

খাগড়াছড়ি জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৩ এএম

মানিকছড়িতে দুঃস্থ মহিলাদের উন্নয়নে বরাদ্দকৃত ভিজিডির এপ্রিল মাসের বরাদ্দ ৪৩ মেট্রিক টন আতপ চাল কালোবাজারে বিক্রি করে নিম্নমানের পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত সিদ্ধ চাল বিতরণ করা হচ্ছে। চাল উত্তোলনে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন উপকারভোগী দুঃস্থ মহিলারা।

জানা গেছে, সরকার দেশব্যাপি দুঃস্থ মহিলাদের উন্নয়নে (ভিজিডি) প্রতি মাসে ৩০ কেজি হারে খাদ্যশস্য বিতরণ করে আসছে। আর সুযোগে খাদ্য গুদামের ওসিএলএসডি ও প্রকল্প চেয়ারম্যানরা মিলে এসব অসহায় নারীদের খাদ্যশস্য নিয়ে নিয়মিত বাণিজ্য করে যাচ্ছে। উপজেলার চার ইউপির ১ মানিকছড়িতে সুবিধাভোগী ৫শ’ কার্ড, ২ নং বাটনাতলী ইউপিতে ২শ’ ৯০ কার্ড, ৩ নং যোগ্যাছোলা ইউপিতে ৩শ’ ৯ কার্ড ও ৪ নং তিনটহরী ইউপিতে ৩শ’ ৬৫ কার্ডধারী দুঃস্থ মহিলার জন্য চলতি এপ্রিল-২১ মাসের বরাদ্দ গত ১১ এপ্রিল ছাড়পত্র ইস্যু করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জুলিয়াস চাকমা।

এর সংশ্লিষ্ট প্রকল্প চেয়ারম্যানগণ (ইউপি চেয়ারম্যান) তাদের বিশ্বস্থ সচিব কিংবা নিজে খাদ্যগুদাম থেকে ছাড়পত্র অনুযায়ী বরাদ্দ পরিষদে নিয়ে বিতরণের ব্যবস্থা করেন। ইতোমধ্যে ১ নং মানিকছড়ি ইউপিতে বিতরণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অন্য ইউপিতে ১৯ এপ্রিল থেকে বিতরণ করার তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের ছাড়পত্রে দেখা গেছে বরাদ্দের সকল চাল আতপ। চার ইউনিয়নে মোট ৪৩ মেট্রিক টন ৯শ’ ২০ কেজি আতপ চাল খাদ্যগুদাম থেকে উত্তোলন করার কথা বলা হলেও সরজমিনে বিতরণ এবং ইউপির গুদামে সংরক্ষিত আছে সব পচা, দুর্গন্ধযুক্ত সিদ্ধ চাল। উক্ত প্রকল্পের সদস্য সচিব উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. কামরুল আলম ও খাদ্য নিয়ন্ত্রক জুলিয়াস চাকমা জানান, বরাদ্দ অনুযায়ী প্রতি মাসে দুঃস্থ মহিলাদের জন্য ৩০ কেজি আতপ চালের বস্তার ছাড়পত্র ইস্যু করা হয়।

১৮ এপ্রিল সকালে মানিকছড়ি ইউপিতে গিয়ে দেখা গেছে, সচিব মো. মোশাররফ হোসেন মজনু দুঃস্থ মহিলাদের কার্ড দেখে ভিজিডি বিতরণ করছেন। এ সময় প্রতিটি মহিলা বস্তা হাতে নেয়ার আগেই বলছেন এবারের চাল ভালো কী না। অনেকে সচিবের সামনে বস্তা খুলে পচা, দুর্গন্ধ ও সিদ্ধ চাউল দেখে প্রতিবাদ করছে।

কিন্তু সচিব অসহায়ের মতো বলছেন সরকার যা দিয়েছে, আমার করার কিছু নেই। এ সময় একজন অসহায় দুঃস্থ মহিলা কান্নাকাটি করে বলছেন এই রোজারয় এই পচা ও দুর্গন্ধ চাল কিভাবে খাবো। তখন প্রতিবেদকের অনুরোধে ওই মহিলার পচা চাল পরিবর্তন করে সিদ্ধ চালই বিতরণ করা হলো। এ সময় সচিব মো. মোশাররফ হোসেন জানান, খাদ্যগুদাম থেকে সিদ্ধ ও নিম্নানের এই চালই দেয়া হয়েছে।
বাটনাতলী ইউপি সচিব মো. আবদুল হাকিম জানান, এখানে ২শ’ ৯০ বস্তা চালই সিদ্ধ। ১৯ এপ্রিল বিতরণ করা হচ্ছে। পরে এ বিষয়ে যোগ্যাছোলা চেয়ারম্যান ক্যয়জরী মহাজন জানান, খাদ্যগুদাম থেকে এসব নিম্নানের সিদ্ধ চাল ছাড় করা হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বরাদ্দ আতপ কিন্তু গুদাম থেকে বা যে কোনভাবে সিদ্ধ চাল বিতরণ হয়ে থাকলে তা খতিয়ে দেখছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ