নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইউরোপের ১২টি বিখ্যাত ক্লাব এক জোট হয়ে একটি নতুন প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে একমত হয়েছে, যার নাম ইউরোপিয়ান সুপার লিগ বা ইএসএল।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, নতুন এই টুর্নামেন্ট নিয়ে ফুটবল ভক্তদের পাশাপাশি বিশ্ব ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা, ইউরোপিয়ান ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা এবং বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধানরা পর্যন্ত চরম নিন্দা জানাচ্ছেন।
১২টি ক্লাবের মধ্যে রয়েছে ইংল্যান্ডের ‘বিগ সিক্স’ বলে পরিচিত আর্সেনাল, চেলসি, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও টটেনহাম হটস্পার-সহ রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা, ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, এসি মিলান ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ।
ইএসএল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চালু হওয়ার কথা বলা হয়েছে এবং আরও তিনটি ক্লাব যোগ দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুরুষ ও নারী দুই বিভাগেই ফুটবল টুর্নামেন্টটি আয়োজিত হবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সরাসরি এই নতুন পরিকল্পনার সমালোচনা করে নিজের টুইটার পাতায় লিখেছেন, এটা ফুটবলের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
তিনি লেখেন, “ঘরোয়া লিগের মূলে আঘাত করবে এটা। ভক্তদের শঙ্কায় ফেলবে। এই ক্লাবগুলোর উচিত ভক্তদের ও ফুটবল কমিউনিটির কাছে জবাবদিহি করা।”
এই লিগে থাকবে ২০টি দল। ১২টি ক্লাব প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং আরও তিনটি ক্লাব নাম দিতে যাচ্ছে এখানে। আরও পাঁচটি ক্লাব এখানে খেলবে ঘরোয়া ফুটবলে সাফল্যের ভিত্তিতে।
প্রতি বছরই আগস্টে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ শুরু হবে সপ্তাহের মাঝে খেলাগুলো হবে। ১০টি দল করে দুই ভাগে ভাগ হয়ে ঘরের মাঠ ও প্রতিপক্ষের মাঠে খেলবে।
সেরা তিনটি করে দল কোয়ার্টার ফাইনালে সরাসরি যাবে এবং চতুর্থ ও পঞ্চম ক্লাবটি নিজেদের মধ্যে প্লে অফ খেলবে।
চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো করে দুই লেগের নকআউট পর্ব শেষে প্রতি বছর মে মাসে একটি নিরপেক্ষ স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলা হবে।
ইএসএল চ্যাম্পিয়নস লিগের চেয়ে বেশি অর্থ জোগান দেবে বলে আশাবাদী ক্লাবগুলো।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের সফলতম দল রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ দাবি করছেন, ইএসএল সব স্তরের ফুটবলের জন্যই ভালো।
তিনি বলেন, “চার বিলিয়ন ভক্ত ফুটবলের, এটাই একমাত্র বৈশ্বিক খেলা। আমাদের দায়িত্ব ভক্তদের মনের আশা পূরণ করা।”
জুভেন্টাসের চেয়ারম্যান আন্দ্রেয়া আনেলি উয়েফার নির্বাহী কমিটি এবং ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “একটা সংকটের সময় ১২টি ক্লাব একসঙ্গে হয়েছে। ইউরোপের ফুটবল বদলে দিতে দীর্ঘ পরিকল্পনা আছে আমাদের।”
এ দিকে উয়েফা কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পকে ‘জঘন্য’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, তারা সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেবে যাতে এটি বাস্তবায়ন না হয়।
উয়েফার সঙ্গে এক বিবৃতিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছে ইংল্যান্ডের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ, রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন, লা লিগা, ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এবং লেগা সিরি আ।
যেখানে বলা হয়েছে, যখন বিশ্বে সবার ফুটবলের স্বার্থে এক হওয়াটা প্রয়োজন তখন কিছু ক্লাব নিজেদের স্বার্থে এমন একটি প্রজেক্ট ভাবলো যা জঘন্য।
ফিফা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছয়টি মহাদেশের ফুটবল সংস্থা, অর্থাৎ কনফেডারেশনগুলো এই সুপার লিগের সঙ্গে জড়িত সবগুলো ক্লাবকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞা ঘরোয়া ফুটবল, ইউরোপিয়ান ফুটবল ও আন্তর্জাতিক ফুটবলে বলবৎ থাকবে।
এমনকি কোনো ফুটবলার যদি এই সুপার লিগে খেলে তাকে জাতীয় দল থেকেও বাদ দেওয়া হতে পারে।
প্রিমিয়ার লিগের ছয়টি বড় ক্লাব এই সুপার লিগের অংশ, সেই প্রিমিয়ার লিগ বলছে এই সুপার লিগ যে কোনো ভক্তের কাছে স্বপ্নভঙ্গের মতো। যে প্রক্রিয়ায় একটি ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ থেকে প্রিমিয়ার লিগে উঠে আসে এবং সেরা ক্লাবগুলোর সঙ্গে খেলে সেই প্রক্রিয়া এবং কাঠামোই ভেঙে দেবে এই সুপার লিগ।
বুন্দেসলিগা অর্থাৎ জার্মান লিগে কোনো ক্লাব চাইলেই নিজের ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। কারণ জার্মান ফুটবল মডেল অনুযায়ী অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ক্লাবের ৪৯ শতাংশ মালিকানা রাখতে পারবে। যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে ভক্তদের ভোটের প্রয়োজন হয় জার্মানিতে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ডিফেন্ডার গ্যারি নেভিল এই পরিকল্পনার ওপর ‘পুরোপুরি বীতশ্রদ্ধ’। এই ক্লাবগুলোর মালিকদের ‘বেইমান’ বলে অভিহিত করে বলেন, “এটা কেবলই লোভ।”
এ দিকে লিভারপুল, চেলসি, আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটি, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, টটেনহাম- সবগুলো ক্লাবের ভক্তরাই এই পরিকল্পনার অনাস্থা জানিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।