পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার বিদেশীদের খুশী করার জন্য দেশের আলেম-উলামাদের উপর নির্যাতনের স্টীম রোলার চালাচ্ছে। আলেম-উলামা ও দেশপ্রেমিক জনগণের উপর হামলা মামলা হত্যা গ্রেফতার নির্যাতন চালিয়ে সরকার তাদের পতনকেই ত্বরান্বিত করছে। আলেম-উলামাদের ঢালাওভাবে গ্রেফতার ও হয়রানির কারণে লকডাউন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত আলেম-উলামাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা মামুনুল হকসহ বিভিন্ন আলেমদের গ্রেফতারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং আটককৃত আলেম-উলামাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ গতকাল পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : আলেম-উলামাদের ঢালাওভাবে গ্রেফতার ও হয়রানির কারণে লকডাউন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের নিরীহ নিরপরাধ আলেম উলামাদের গ্রেফতার ও হয়রানির কারণে সরকারের চলমান লকডাউন কঠোরভাবে সমালোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, যে মুহুর্তে মহামারি প্রকট আকার ধারণ করছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা চরম দূর্বিষহ হয়ে উঠছে। সর্বত্র মানুষ আতঙ্কিত। এহেন পরিস্থিতিতে আলেম উলামাদের অযথা হয়রানি নির্যাতন কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, দেশে মাদরাসা শিক্ষকসহ আলেম-উলামাদের গণহারে গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর ভাষা নেই।
পীর সাহেব বলেন, পবিত্র রমাজানের শুরুতেই দেশের আলেম-উলামা ও মাদরাসা শিক্ষকদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালাচ্ছে। সরকারের এই আচরণ অত্যন্ত অমানবিক ও দুঃখজনক।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, গত কয়েক দিনে সারাদেশে শত শত নিরীহ আলেম-উলামা, মাদরাসা শিক্ষক ও ছাত্র গ্রেফতার করা হয়েছে। যেকোনো ইসলামবিরোধী ইস্যুতে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিবাদ করা দেশের আলেম-উলামাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাদের এই নৈতিক দায়িত্ব পালনে বাধা দান ও তাদেরকে গ্রেফতার মেনে নেয়া যায় না। তিনি আলেম ও মাদরাসা শিক্ষকদের গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধ এবং গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের কোন শ্রেণি ও পেশার মানুষই আজ নিরাপদ নয়। বাঁশখালীতে বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ এবং পবিত্র রমজানের ইফতার, সাহরি ও তারাবিহ ঠিক রেখে কর্মঘণ্টা নির্ধারণের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন শ্রমিকরা। কেন এবং কোন পরিস্থিতিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের গুলি চালাতে হলো তা খতিয়ে দেখতে হবে। পবিত্র রমজানে এমন হতাহতের ঘটনা মেনে নেয়া যায় না।
পীর সাহেব চরমোনাই নিহতদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ও আহতদের যৌক্তিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তিনি আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
খেলাফত মজলিস : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ও ঢাকা মহানগরী সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব এবং ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হকসহ আলেম-উলামাদের গ্রেফতার ও রিমান্ডের নামে নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে খেলাফত মজলিস। এক যৌথ বিবৃতিতে খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, সরকার বিদেশীদের খুশী করার জন্য দেশের আলেম-উলামাদের উপর নির্যাতনের স্টীম রোলার চালাচ্ছে। মাদরাসা-মক্তব, ইসলামী সংগঠনের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আলেম-উলামাদের গ্রেফতার করে সাজানো- মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালানো হচ্ছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, দেশে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। রমজান মাসে করোনার নামে লকডাউন দিয়ে আলেম-উলামাদের উপর সরকারের এ দমন অভিযান কোন ভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। আলেম-উলামা ও দেশপ্রেমিক জনগণের উপর হামলা, মামলা, হত্যা, গ্রেফতার নির্যাতন চালিয়ে সরকার তাদের পতনকেই ত্বরান্বিত করছে।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় অবিলম্বে দেশের আলেম-উলামাদের গ্রেফতার নির্যাতন বন্ধ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ও ঢাকা মহানগরী সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব এবং যুগ্মমহাসিচব ও ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মাওলানা আজিজুল ইসলাম ইসলামাবাদী, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, মাওলানা যোবায়ের আহমদ, মুফতি বশির উল্লাহ, মুফতি শরীফুল্লাহসহ গ্রেফতারকৃত উলামাদের অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন। একই সাথে সারাদেশে তৌহিদী জনতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : এদিকে, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর শায়খুল হাদীস আল্লামা ইসমাঈল নূরপুরী, নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আলী উসমান, একযুক্ত বিবৃতিতে হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকসহ অন্যান্য গ্রেফতারকৃত আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, এভাবে রমজান মাসে আলেম-উলামা ও সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও গ্রেফতার করে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। নেতৃদ্বয় হয়রানি ও গ্রেফতার বন্ধ এবং আটকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। অন্যথায় আলেম-উলামারা ঐক্যবদ্ধভাবে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, হয়রানি ও গ্রেফতার করে আলেম-উলামাদের আন্দোলনকে ঠেকানো যাবে না। দেশের জনগণ ইসলাম ও দেশের প্রয়োজনে জীবন দিতে প্রস্তুত।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : গ্রেফতারকৃত আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী ও মহাসচিব শায়খুল হাদিস মাওলানা ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম।
নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় শান্তিপ্রিয় আলেম-উলামাদের হয়রানি ও গ্রেফতার এবং নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, নিরপরাধ আলেম উলামাদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে নির্যাতনের ঘটনা কেউ মেনে নিবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।