পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘বাংলাদেশের গরিব মানুষরা ভারতে এসেছে কারণ, তারা নিজের দেশে খাবার পান না’ বলে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। শাহের মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয় বলে সরব হয়েছেন তিনি। তার কথায়, ‘ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক গভীর। এ ধরনের মন্তব্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে’।
সদ্য বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি। দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে আশাবাদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী। যদিও মোদির সফর ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ঢাকায়। ভারতে নির্বাচন চলাকালে এ সফরকে কেন্দ্র করে টানাপোড়েন চলেছে। তার মাঝেই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ নিয়ে করা মন্তব্যের সমুচিত জবাব দিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। বাংলাদেশ নিয়ে অমিত শাহের জ্ঞান সীমিত বলেই মনে করেন জনাব মোমেন। তার দাবি, বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ভারতের থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তৃণমূল-বিজেপির। বাংলা দখলে মরিয়া গেরুয়া বহিনী। তাই প্রচারে প্রায়ই বাংলা সফর করছেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি অমিত শাহ। বাংলায় প্রচারে এসে আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শাহ বলেন, ‘বাংলাদেশে পর্যাপ্ত খাবারের অভাব রয়েছে। সেদেশে বহু মানুষ নিজেদের রাষ্ট্রেই অভুক্ত থাকেন। ফলে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ বাড়ছে। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে এই অনুপ্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে।’
অমিত শাহর এ দাবি ঘিরেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সেই সাক্ষাতকারের প্রেক্ষিতেই প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বাংলাদেশ সম্বন্ধে শাহের জ্ঞান নিয়ে কটাক্ষ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এ ধরনের মন্তব্যকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলেছেন জনাব মোমেন। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বে এমন অনেক জ্ঞানী লোক আছেন যাঁরা দেখার পরেও দেখেন না, জানার পরেও বুঝতে পারেন না। কিন্তু অমিত শাহ যে মন্তব্য করেছেন তার জবাবে আমাকে বলতেই হচ্ছে যে, বাংলাদেশ সম্বন্ধে ওনার জ্ঞান খুবই সীমিত। বর্তমানে এ দেশে অভুক্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা নেই। এমনকি দেশের উত্তর পূর্ব প্রান্তেও ক্ষুদার জন্য হাহাকার নেই।’
একই সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, সামাজিক উন্নয়নের সূচকে একাধিক ক্ষেত্রে ভারতের থেকে এগিয়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ ভালো শৌচাগার ব্যবহার করেন, ভারতে এ সংখ্যা ৫০ শতাংশের আশেপাশে। বাংলাদেশে শিক্ষিতদের কর্মসংস্থানের ঘাটতি থাকলেও তুলনায় কম শিক্ষিতদের এমন কোনো বিপদের মুখোমুখি হতে হয় না। অন্যদিকে, প্রায় লক্ষাধিক ভারতীয় বাংলাদেশে কাজ করছেন। এখন আর কাজের জন্য বাংলাদেশিদের ভারতে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আব্দুল মোমেন।
সব শেষে তিনি মনে করিয়ে দেন, বাংলাদেশিদের ভারতে অনুপ্রবেশ নিয়ে কথা বলার আগে বক্তার সেদেশ সম্পর্কে জ্ঞানের আলো বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।
উল্লেখ্য, স¤প্রতি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘অনুপ্রবেশকারীদের ভ্যাকসিন নয়, গলাধাক্কা দেওয়া হবে’। সমপ্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ বলেন, ‘এ উস্কানির ফলে শীতলকুচিতে চারটে প্রাণ চলে গেল। এ ধরনের উস্কানি যাঁরা দেন, তাদের যদি ফিরিয়ে আনেন, তাহলে এই বাংলা বাংলাদেশ হয়ে যাবে। জয় বাংলা বলছেন, জয় বাংলা আওয়ামী লিগের সেøাগান। খেলা হবে আওয়ামী লিগের এক নেতার কথা। বলছেন খেলা হবে। কী নিয়ে খেলবেন, মানুষের জীবন নিয়ে খেলবেন? করোনা নিয়ে খেলবেন? আমফান নিয়ে খেলবেন? উন্নয়ন নিয়ে খেলবেন’?
বাংলাকে গুজরাট হতে দেব না : মমতা
এদিকে বাংলাকে গুজরাট বানাতে দেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। গত বুধবার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে নির্বাচনী জনসভা করতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘আসামে সবাইকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাচ্ছে। মনে রাখবেন আমি বাংলায় এনপিআর, এনআরসি করতে দেব না। আপনারা সবাই নাগরিক। তবে ১৮ বছর বয়স হলে দেখবেন ভোটার তালিকায় যেন আপনাদের সবার নাম থাকে। ভোটটা কিন্তু দিতেই হবে। বাংলাকে আমরা গুজরাত হতে দেব না, এটাই আমাদের শপথ’।
মমতা আরো বলেন, ‘আমি বলেছি, করোনার ভ্যাকসিন কিনব, কিন্তু ওরা দিচ্ছে না। করোনায় এক বছর আগে এত মানুষ মারা গেলেন, এক বছর সময় পেয়ে মোদি বা শাহ কেউই কিছু করলেন না। এখন বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে করোনা বাড়িয়ে দিয়ে চলে যাচ্ছে, আর পরে আমাদের ভুগতে হবে’। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।