বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
আল কোরআন সর্বশেষ আসমানি কিতাব। এরপর আর কোনো কিতাব নাযিল হবে না। এই কিতাব নাযিল হয়েছে সর্বশেষ নবী ও রাসূল প্রিয়নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর। তাঁর পরে আর কোনো নবী ও রাসূলের আগমন ঘটবে না। এটাই আল্লাহ জাল্লা শানুহুর চিরন্তন সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার মধ্যে নড়চড় হওয়ার জো নেই। কেন নেই, কি জন্য নেই? এর উত্তর একটিই। তা হলো ‘আল্লাহ পাকের কালিমার কোনো পরিবর্তন নেই। রদ বদল নেই’। আল্লাহ পাকের কালিমা ‘চিরন্তন সত্য ও শ্বাসত’।
কিন্তু নিতান্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে, সম্প্রতি ভারতের আদালতে একটি রীট আবেদন করা হয়েছে যে, আল কোরআনে সন্নিবিট দশটি সূরার ছাব্বিশটি আয়াত পরিবর্তন করতে হবে। নিম্নে ক্রমিক নং অনুসারে দশটি সূরার ২৬টি আয়াতের পরিচিতি সহৃদয় পাঠকও পাঠিকাদের সামনে তুলে ধরা হলো। যথা : ১. আল কোরআনের চার নং সূরা আন্ নিসা-এর ৫৬, ৮৯, ও ১০১ নং আয়াত।
২. আল কোরআনের পাঁচ নং সূরা মায়েদাহ-এর ১৪, ৩৩, ৫১, ও ৫৭ নং আয়াত। ৩. আল কোরআনের ৮নং সূরা আন্ফাল-এর ১২, ৬৫, ও ৬৯ নং আয়াত। ৪. আল কোরআনের ৯ নং সূরা আত্ তাওবাহ-এর ৫, ১৪, ২৩, ২৮, ২৯, ৩৭, ৫৮, ১১১, ১২৩ নং আয়াত। ৫. আল কোরআনের ২১ নং সূরা আম্বিয়া-এর ৯৮ নং আয়াত।
৬. আল কোরআনের ৩৩ নং সূরা আহযাব-এর ৬১ নং আয়াত। ৭. আল কোরআনের ৩২ নং সূরা সাজদাহ-এর ২২ নং আয়াত। ৮. আল কোরআনের ৪৮ নং সূরা আল ফাতহ-এর ২০ নং আয়াত। ৯. আল কোরআনের ৬৬ নং সূরা আত্ তাহরীম-এর ৯ নং আয়াত। ১০. আল কোরআনের ৪১ নং সূরা হা-মীম আসসেজদাহ-এর ২৭, ও ২৮ নং আয়াত।
এপর্যায়ে আমরা উল্লেখিত দশটি সূরার ছাব্বিশটি আয়াতের অর্থ ও মর্ম পর্যায়ক্রমে সহৃদয় পাঠক ও পাঠিকাদের সামনে উপস্থাপন করতে প্রয়াস পাব। আসুন এবার সেদিকে লক্ষকরা যাক। (ক) ইরশাদ হয়েছে : যারা আমার আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে অগ্নিতে দগ্ধ করবই, যখনই তাদের চর্ম দগ্ধ হবে তখনই উহারস্থলে নতুন চর্ম সৃষ্টি করব, যাতে তারা শাস্তি ভোগ করে। আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (৪নং সূরা আল নিসা : আয়াত ৫৬)।
এই আয়াতে কারীমায় সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে যে, যারা আল্লাহর কালাম আল কোরআনের সাথে কুফুরী করে, আল্লাহর কালামকে প্রত্যাখ্যান করে, আল্লাহর কালামের বিরোধীতা করে তাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত অগ্নিতে দগ্ধ করবেনই। আগুনে পুড়ে তাদের চামড়া জ্বাল গেলে সাথে সাথে উহার স্থলে নতুন চামড়া সৃষ্টি করা হবে। যাতে তারা ভালোভাবে শাস্তি ভোগ করতে পারে এবং আল কোরআনের নির্দেশাবলি প্রত্যাখ্যান করার মজা হাড়ে হাড়ে উপভোগ করতে পারে। আল্লাহপাক পরাক্রমশালী। যারা আল্লাহর আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করবে, তাদেরকে তিনি প্রজ্ঞা ও দুরদর্শিতার সাথে শা¯ি Íদান করবেন। এর কোনো নড়চড় হবে না।
আল্লাহ পাকের সাথে পাল্লা দিয়ে জাহান্নামের বাসিন্দা ‘নমরূদ’ আকাশে তীর নিক্ষেপ করেছিল বিশ্ব স্রষ্টা আল্লাহতায়ালাকে বধ করার লক্ষ্যে। কিন্তু নমরূদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। বরং আল্লাহর প্রেরীত মশার কামড়ে ‘নমরূদ’ সদল বলে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে বর্তমান যুগের কোরআনবিদ্বেষীদের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা অদূর ভবিষ্যতেই প্রত্যক্ষ করা যাবে। এর কোনো ব্যত্যয় হবে না। আর হবে না বলেই ৪নং সূরা আন নিসার ৫৬ নং আয়াতের প্রতি কোরআনবিদ্বেষী দলের এতখানি উস্মা ক্ষোভ। এর পরিণাম কি দাঁড়ায় তা আমরা প্রত্যক্ষ করার জন্য সময় গুনে চলেছি দেখা যাক কি হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।