বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শমাসুল হক শারেক, কক্সবাজার অফিস : কক্সবাজারের হাটে-বাজারে স্থানীয় পশু প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। জেলার কোথাও কোরবানীর পশুর ঘাটতি না থাকলেও প্রতিদিন পশু আসছে মিয়ানমার থেকে। এবারে কোরবানীর ঈদে পশু সংকট হবে না বলেই সংশ্লিষ্টদের ধারণা। কোরবানীর ঈদ সামনে রেখে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আসছে গবাদি পশু। সেই সাথে বিস্তীর্ণ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে চোরাইপথেও আসছে প্রচুর গরু, ছাগল ও মহিষ। ব্যবসায়ীদের মতে, বর্তমানে শাহপরীর দ্বীপ করিডোর এবং টেকনাফ, সাবরাং ও শাহপরীর দ্বীপের ব্যবসায়ীদের কাছে প্রচুর গবাদি পশু বিক্রির অপেক্ষায় মজুদ রয়েছে। আর যে কয়দিন সময় আছে এতে আরও কয়েক হাজার গবাদি পশু মিয়ানমার থেকে আমদানী হওয়ার বা আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তারা। তবে দাম সহনীয় পর্যায়ে না থাকায় আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না বলে জানাগেছে।
টেকনাফ স্থল বন্দর কাস্টমস সূত্রে জানাযায়, আগস্ট মাসে মিয়ানমার থেকে ১ হাজার ১৬০টি গরু, ১ হাজার ৩৭৬টি মহিষ এবং ১১টি ছাগল আমদানী করা হয়েছে। এসব গবাদিপশু থেকে ১২ লাখ ৭০ হাজার ২০০ টাকা রাজস্ব পেয়েছে সরকার। চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ৭ দিনে শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে আমদানী হয়েছে ৪০২টি গরু, ২১৮টি মহিষ এবং ১৬টি ছাগল। এসব গবাদিপশু থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৩ লাখ ১৩ হাজার ২০০ টাকা। গত বছর আগস্ট মাসে ১ হাজার ৯৫৪ টি গরু, ১ হাজার ৬২টি মহিষ এবং ৩৮টি ছাগল আমদানী করা হয়েছিল। এসব গবাদিপশু থেকে সরকার ১৫ লাখ ১৬ হাজার টাকার রাজস্ব পেয়েছিল। জানাগেছে, টেকনাফ বিজিবি সম্প্রতি কোরবানীর ঈদে পশু সংকট মোকাবেলায় পাশর্^বর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে পশু আমদানীর ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভাও করেছেন।
তবে গবাদিপশু ব্যবসায়ীদের মতে, গত ২ মাসে করিডোরের মাধ্যমে বৈধভাবে এবং চোরাইপথে ১০ হাজারেরও বেশী গবাদিপশু এসেছে। টেকনাফের শীর্ষ গবাদিপশু ব্যবসায়ী টেকনাফ সদর ইউপি’র মেম্বার আবু ছৈয়দের মতে, বর্তমানে শাহপরীর দ্বীপ করিডোরে কয়েক শত এবং টেকনাফ, সাবরাং ও শাহপরীর দ্বীপ ব্যবসায়ীদের কাছে প্রচুর সংখ্যক গবাদি পশু বিক্রির অপেক্ষায় মজুদ রয়েছে। কিšুÍ ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যবসায়ী টেকনাফে না আসায় বেচাবিক্রি একটু কম। তিনি এবছর কোরবানির পশু সংকট হবেনা জানিয়ে বলেন, পশু আমদানি, বিক্রি ও পরিবহন ইত্যাদিতে কোন সমস্যা নেই। টেকনাফ সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ দিদার হোসেন কোরবানির পশু সংকট নেই বলে দাবি করে বলেন শুধু শাহপরীর দ্বীপ করিডোরেই ৫০০ এবং টেকনাফ, সাবরাং ও শাহপরীর দ্বীপ ব্যবসায়ীদের কাছে অন্ততঃ ১০ হাজারেরও বেশী গবাদি পশু বিক্রির অপেক্ষায় মজুদ রয়েছে। এদিকে উখিয়ার মরিচ্যা বাজার গরুর হাট, কক্সবাজার সদরের খরুলিয়া, ঈদগাঁও এবং কক্সবাজার শহরের গরুর হাট ছাড়াও চকরিয়া, পেকুয়া ও মহেশখালী কুতুবদিয়ায় পশু বেচা কেনার হাট বসেছে। এসব গরুর হাটে প্রতিদিন প্রচুর স্থানীয় গরু, ছাগল ও মহিষের মজুদ এবং বেচাবিক্রি কোরবানীর ঈদে কক্সবাজারের কোথাও পশু সংকট হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। মরিচ্যা, খরুলিয়া ও ঈদগাঁও গরুর হাটে ঘুরে দেখাগেছে, মাঝারি সাইজের বলদ গরুর চাহিদা ক্রেতাদের বেশী। কৃত্রিম উপায়ে স্বল্প সময়ে গরু মোটা তাজা করে কোরবানীর হাটে আনা হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ব্যবসায়ীরা গরু মোটাতাজা করণে কোন ইনজেকশন বা ওষুধ ব্যবহার করা হচ্ছেনা বলে দাবী করে জানান, খড়, ভূষি, দিয়ে গরুর খাবার যোগান দেয়া হচ্ছে। তা ছাড়া গরু মোটাতাজা করণে কয়েক মাস পূর্ব থেকে প্রস্তুতি নিতে হয় বলে দাবী করেন তারা। আগে সাধারণত গরু মোটা তাজা করণের ক্ষতিকর ইনজেকশন ব্যবহার করা হত। পশু হাসপাতালের নজরদারীর কারণে ব্যবসায়ীরা সচেতন হওয়ায় এখন আর ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়না। পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জেলার কিছু কিছু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গরু মোটাতাজা করতে মিয়ানমারের নিষিদ্ধ ‘ডেক্সামেথাসোন’ ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সাধারণত এসব ওষুধকে স্থানীয় ভাষায় “পাম বড়ি” বলা হয়। এসব ওষুধ খাওয়ানোর ফলে গরু দ্রæত মোটাতাজা হয় ঠিকই, কিন্তু তা পশুর পাশাপাশি মানব দেহের জন্যও ভয়ানক ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব গরুর গোস্ত মানুষের শরীরের জন্য সুদূর প্রসারী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।