বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এবার যমজ বোনসহ কিশোরগঞ্জ শহরের এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২২ জন শিক্ষার্থী মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা মেলে এ প্রতিষ্ঠানটির এমন সাফল্য। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীর এই প্রতিবেদককে জানান, গত ১০ বছরে এই স্কুল থেকে কোনো ফেল নেই এবং স্কুলটি জেলায় প্রথম স্থানে অনঢ়। জানান, সরকারি মেডিকেলে ২২ জন চান্স পেলেও বেসরকারি মেডিকেলে আরও ৫০ জন হয়তো ভর্তি হবে। এমআইএসটিতে চার জন চান্স পেয়েছে। বুয়েট ও ঢাবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে আরও উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী।
স্কুল সূত্র জানায়, মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাওয়া ২২ শিক্ষার্থী হলেন- সুলতানা আক্তার সাদিয়া, নোসাইবা হোসেন সাবা, আরফাতুন নাহার সুমাইয়া, নওশীন তাবাসসুম ইসলাম, নিশাত নাবিলা, সাদিয়া হক, সিনথিয়া বিনতে মান্নান, অমৃতি অরাত্রিকা, নিভৃতি দ্যোতনা, সায়মা আক্তার, শেফা উম্মে সালমা সুস্মিতা, তাজরিয়ান রাফিন মাহি, ফারহানা আক্তার বাঁধন, আসমা সিদ্দিকা অংকন, নূসরাত আরা নিদ্রা, উম্মে হাবিবা অন্তু, অনন্যা সাহা, আনিকা তাসনিম অনি, আনজুমান আরা শাম্মী, নওশীন তাবাসসুম মৌনতা, তাসফিয়া নওশীন এবং রেজওয়ানা আফরিন ইকরা।
মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পাওয়ার এ সংখ্যা নিয়ে এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীর ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এরই মধ্যে ২২ জনের মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পাওয়ার খবর নিশ্চিত হয়েছি। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, এই ফলাফলে আমি অত্যন্ত খুশি। এমন ফলাফলের নেপথ্য কারণ জানতে চাইলে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের ছাত্রীরা অত্যন্ত মেধাবী ও পরিশ্রমী। আর পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না।পড়ানোর সময়ও আমরা বেসিক বিষয়ের উপর জোর দেই।বেসিক কোনোকিছু বাদ দেই না। এ প্লাস আমাদের উদ্দেশ্য থাকে না।গণিত, বাংলা, বিজ্ঞানসহ সব বিষয়ের বেসিক পাঠ নিশ্চিত করা হয় এখানে। ফলে তারা শুধু ভর্তিতেই নয়। চাকুরিতে এবং বাস্তব জীবনেও সফল হয়।তিনি বলেন, আমরা উপস্থিতির উপর জোর দিয়ে থাকি। মাসে তিন দিন না আসলেই অভিভাবককে এসে কারণ দর্শাতে হয়।নইলে টিসি দিয়ে দিই।স্কুলে প্রতিমাসে অন্তত একটি কালচারাল প্রোগ্রাম থাকে। ফলে মেয়েরা নিজেরা সেজেগুজে আনন্দের সাথে পাঠগ্রহণ করতে পারে। স্কুল ভীতি নয়, তাদের মধ্যে স্কুল প্রীতি গড়ে ওঠে। পরবর্তী সময়ে তারা ফেসবুকে লিখে ‘ভালোবাসার স্কুল’, ‘প্রাণের স্কুল’।তিনি বলেন, আমাদের এমন সাফল্য হঠাৎ করে নয় বরং ধারবাহিক। গত বছর ১৫ এবং তার আগের বছর ২৫ জন ছাত্রীও মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিল।
যমজ বোন অমৃতি অরাত্রিকা ও নিভৃতি দ্যোতনা মেডিকেলে চান্স পেয়ে খুবই আনন্দিত। অমৃতি অরাত্রিকা সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে এবং নিভৃতি দ্যোতনা বগুড়া মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে সুযোগ পাওয়া ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী নোসাইবা হোসেন সাবা তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে জানান, খুবই আনন্দ লাগছে। ভালো লাগছে। ছোটকালের স্বপ্ন যেন বাস্তবায়নের পথে। এ সুযোগ পাওয়ার পেছনে আমাদের শিক্ষকদের সঠিক দিকনির্দেশনা ছিল। তাই আমাদের এ সাফল্য।
জানা যায, ১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৩ সালে এস.ভি. সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্ম। কিশোরগঞ্জ শহরের এটি প্রথম ও একমাত্র সরকারী বালিকা বিদ্যালয়। কিশোরগঞ্জ সদর থানার শোলাকিয়া গ্রামে বর্তমানে যেখানে শোলাকিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অবস্থিত তার উত্তর পাশে তৎকালে বসবাসকারী এডভোকেট ভৈরব চমদ্র চৌধুরীর কন্যা সরযূ বালার নামেই উচ্চ বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় ‘‘সরযূ বিদ্যা নিকেতন’’। পরবর্তীতে কিছুটা পরিবর্তিত আকারে সরকারীকরণের পূর্ব পর্যন্ত এর পুরো নাম হয় ‘‘সরযূ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’’। কালক্রমে ১৯৬৮ সালের ১৫ নভেম্বর তারিখে বিদ্যালয়টি সরকারীকরণ করা হয়। তখন বিদ্যালয়টির নতুন নামকরণ করা হয় এস.ভি. সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের প্রথম প্রধান শিক্ষক জগৎ চন্দ্র চক্রবর্তী ও প্রথম প্রধান শিক্ষিকা মিস আজিজুন্নেছা কিশোরগঞ্জের কৃতি সন্তান। ১৯৯৩ সালে তৎকালীন প্রধান শিক্ষিকা মিসেস খাদিজা শহীদ শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে জাতীয় পুরষ্কার লাভ করেন। ১৯৯৪ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে সর্বপ্রথম এ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে বিজয়ী দল হিসেবে বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেছে। ২০১৯ সালে বর্তমান প্রধান শিক্ষক শাহনাজ কবীর জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদক লাভ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।