Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি নিয়ে চট্টগ্রামে আ’লীগে তোলপাড়

প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি নিয়ে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই গ্রæপের পক্ষে-বিপক্ষে বক্তৃতা-বিবৃতি-মানববন্ধনও অব্যাহত আছে। বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির অভিযোগে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে ওই সংসদীয় আসনের আওয়ামী লীগের একাংশ। তাছাড়া তার সংসদ সদস্যপদ বাতিলেরও দাবি করা হয়েছে। নগরীর জামালখান প্রেসক্লাব চত্বর ও বন্দর নিমতল এলাকায় মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়। অন্যদিকে গতকাল (রোববার) দ্বিতীয় দিনের মতো নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে জরুরী সংবাদ সম্মেলন ডাকেন এম এ লতিফ। ঘটনায় নিজের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, সব সফলতার মধ্যে ব্যর্থতা থাকে। আমি ফেরেশতাও না শয়তানও না। এ ঘটনায় জাতির কাছে একেবারে নিলাম হয়ে গেলাম।
এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা মেনে নেব। আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু হলে সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য দিদারুল আলম, চিটাগাং চেম্বারের সহসভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, পরিচালক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এমএ লতিফ বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল তাদের আমি চিহ্নিত করেছি। তারা আমাকে উত্তর দিয়েছে আমি যে রেজুলেশনের বঙ্গবন্ধুর ছবি পাঠিয়েছি, সেই রেজুলেশনের ছবি বড় প্রতিকৃতি করার জন্য যথেষ্ট ছিল না। তাই তারা বিকল্প একটা পথ বেছে নিয়েছিল। ফেস্টুনে পরিচ্ছন্নভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উপস্থাপন করতে গিয়েই প্রতিকৃতি বিকৃতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন হায়দার প্রিন্টার্সের প্রধান ডিজাইনার কবির হোসেন বাবু।
কবির হোসেন বলেন, চেম্বারের কর্মকর্তা রাসেল দাসের কাছ থেকে এমএ লতিফের মুজিব কোর্ট পরা ছবিটা নিয়েছিলাম। তাকে বলেছিলাম বঙ্গবন্ধুর যে ছবিটা পেয়েছি সেটি দিয়ে বড় ব্যানার তৈরি সম্ভব নয়, এটি ফেটে যাবে। তাই তাকে বললাম মুজিব কোর্ট পরা কারও ছবি আছে কিনা। পরবর্তীতে তার মোবাইলে থাকা এমপির ছবিটা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর পরিপূর্ণ প্রতিকৃতি সম্বলিত ব্যানার তৈরি করি। এটা নিয়ে এত কিছু হবে জানলে আমি তা করতাম না। আমার উদ্দেশ্যটা অসৎ ছিল না। সংবাদ সম্মেলনে চেম্বারের কর্মকর্তা রাসেল দাস বলেন, ‘আমার দায়িত্বে ব্যানার আনা ও টানানোর কাজটি ছিল। কবির হোসেন মুজিব কোটওয়ালা ছবি চাওয়ার পর আমার মোবাইলে থাকা এমপির ছবিটা দিই। এরপরে কী হয়েছে তা আমি জানি না।
একই ঘটনায় শনিবার করা প্রথম সংবাদ সম্মেলনে গত সাত বছর ধরে একটি মহল তার পেছনে লেগে আছে উল্লেখ করেছিলেন এমএ লতিফ। এই ঘটনার পেছনেও ওই মহলের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন। তবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করার পর এমএ লতিফ তার আগের দিনের অভিযোগ তুলে নেন।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বিকৃতির অপরাধে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে তিনদিনের সময় দিয়েছে বন্দর-পতেঙ্গা আসনের জনগণ। এরমধ্যে ক্ষমা না চাইলে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণার হুমকি দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ থেকে এ হুমকি দেওয়া হয়। বন্দর-পতেঙ্গা আসনের সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
ফোরামের নেতা হাজী ইকবাল বলেন, শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে নিজের দোষ অস্বীকার করে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। এতে আমরা লজ্জিত। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি ও মুখমÐলের সঙ্গে এমএ লতিফের শরীর জুড়ে দেওয়ায় আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। জাতির জনকের সঙ্গে এমন বেয়াদবির উচিত শাস্তি চাই। এমপি লতিফ বাববার নিয়ম ভঙ্গ করবেন আর আমরা সহ্য করে যাবো এটা হতে পারে না। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে জাতীয় শ্রমিক লীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পরে বন্দর নিমতলা এলাকায় একই দাবিতে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগের একাংশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতি নিয়ে চট্টগ্রামে আ’লীগে তোলপাড়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ