Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঈদকে সামনে রেখে নকল প্রসাধনীতে সয়লাব দামুড়হুদার হাটবাজার

প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম


নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে
আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাটবাজারগুলো নকল ও ভেজাল প্রসাধনীতে ভরে গেছে। শহরের নামিদামী দোকান থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের দোকানগুলোতে যে প্রসাধনী বিক্রি হচ্ছে তার বেশিরভাগই ভেজাল ও নকল। ভোক্তারা ক্ষতিকর উপাদানে তৈরি এসব প্রসাধনী কিনে একদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অপরদিকে এসব প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে চর্মরোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। দামড়ুহুদা উপজেলার দামুড়হুদা সদর, দর্শনা, কার্পাসডাঙ্গা, মদনা, কুড়ালগাছি বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারের ছোট বড় দোকানগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে এসব এসব নকল ও ভেজাল প্রসাধনী, মাথার তেল ইত্যাদি আবাধে দেদারছে বেচাকেনা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে এসব নকল ও ভেজাল পণ্যের বেচাকেনা চললেও এসব বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেই। বর্তমানে বাজারে রং ফর্সাকারী গোল্ড ক্রিম, হেনোলাক্স, মার্কোলাক্স স্পট কিওর ক্রিমসহ বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ও লোশন বিক্রি হচ্ছে। মানুষের গায়ের রঙ সাদা বা কালোর জন্য মূলত দায়ী এক প্রকার প্রাকৃতিক উপদান মেলানিন। মেলানিনের পরিমাণের তারতম্যের কারণে মানুষের গায়ের রং কালো বা সাদা হয়ে থাকে। তাই হাজারো চেষ্টায়ও মেলানিনের পরিমান কম বা বেশি করা যায় না। তাই এসব ক্রিম কিনে মানুষ অহরহ প্রতারিত হচ্ছে। সেইসাথে এসব ভেজাল ও ক্ষতিকর উপাদানে তৈরি প্রসাধনী ব্যবহার করে চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এলাকার বড় বড় দোকানগুলোতে পৃথিবীর যতসব নামকরা ব্র্যান্ডের প্রসাধনী থরে থরে সাজানো রয়েছে। যা দেখে মানুষের চোখ ধাঁধিয়ে যায়। আর এসবের মাঝেই ব্যবসায়ীরা কৌশলে নকল প্রসাধনীগুলো সাজিয়ে রাখে। দোকানদার ও প্রশিক্ষিত সেলসম্যানরা খরিদ্দার বুঝে তাদের কাছে এসব পণ্য বিক্রি করে থাকে। এসব ক্রেতাদের অনেকই বেশি দামের নামিদামী কোম্পানীর এসব নকল প্রসাধনী কিনে প্রতারিত হচ্ছে। আর নামীদামী দোকান দেখে বেশিভাগ ক্রেতারা না দেখেই এসব পণ্য কিনে আর্থিকভাবে লোকসানগ্রস্ত হচ্ছে। আর ব্যবসায়রা হচ্ছে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। সম্প্রতি পরিচালিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে যে পরিমাণ কসমেটিক্স অর্থাৎ সাবান, শ্যাম্পু, ক্রিম, লোশন পারফিউমের চাহিদা রয়েছে এসব পণ্যের ১৫ শতাংশ দেশী ১৫ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানীকৃত আর বাকি ৭০ শতাংশ নকল ও ক্ষতিকর উপাদানে তৈরি। ঢাকাসহ বড় বড় শহরের বিভিন্ন কারখানায় এসব নকল ও ভেজাল পণ্য তৈরি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে দেশে তৈরি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিনই দেশে তৈরি নানা ধরনের নুতন নুতন কসমেটিক্স বাজারে আসছে। কিন্তু তার পরও এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের আশায় বিদেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের নি¤œমানের প্রসাধনী আমদানি করছে। এছাড়া চোরাপথে ভারত থেকেও আসছে নানা ধরনের প্রসাধনী। আমদানিকৃত এসব বিদেশি অনেক প্রসাধনীর মান অনেক নি¤œমানের হলেও চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট হয়ে ভোক্তারা অবলীলায় প্রতিনিয়ত ক্ষতিকর এসব পণ্য কিনে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারিত হচ্ছে। আর সেইসাথে হমকির মুখে পড়ছে দেশীয় শিল্প। সচেতনমহল মনে করেন, দেশের জনসাধারণের অর্থ ও স্বাস্থ্য রক্ষা এবং দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোক লোকসানের হাত থেকে রক্ষা করতে এখনই ব্যাবস্থা নেয়া দরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদকে সামনে রেখে নকল প্রসাধনীতে সয়লাব দামুড়হুদার হাটবাজার
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ