বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চৈত্রের শেষদিকে এসে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে কালবৈশাখী ঝড়ও হয়েছে। গতকাল রোববার এই ধ্বংসলিলায় সারাদেশে প্রাণ গেছে ১৩ জনের।
এ ঝড়ে গাইবান্ধায় ১০ জন, ফরিদপুরে দুইজন এবং কুষ্টিয়ায় একজনের মৃত্যু হয়। ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, খুলনা বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আঘাত হানা এ ঝড়ে ফরিদপুরে দুইজন এবং কুষ্টিয়ায় একজনের মৃত্যু হয়।
এদিকে, জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আফতাব উদ্দিন বলেন, “ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, খুলনা বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র কালবৈশাখী বয়ে গেছে। এরমধ্যে ঢাকায় সর্বোচ্চ ৭৪ কিলোমিটার বেগে ঝড় হয়েছে।”
সোমবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আভাস রয়েছে জানিয়ে তিনি সবার প্রতি কালবৈশাখীর এ মৌসুমে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
আবহাওয়ার ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সোমবার ৯টা থেকে পরবতী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়নসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুই এক জায়গায় শিলাবৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি অথবা অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
নিহতরা হলেন, গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের বাকেরপাড়া গ্রামের ইউনুছ আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০), একই ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে আবদুল গোফ্ফার (৪২), গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ী ইউনিয়নের ঢনঢনিপাড়া গামের মিঠু মিয়ার স্ত্রী সাহারা বেগম (৪১), সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত হলদিয়া গ্রামের সোলায়মান আলীর স্ত্রী ময়না বেগম (৪৭), ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামের বিশু মিয়ার স্ত্রী শিমুলি বেগম (২৬), গাইবান্ধা সদরের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হরিণসিংগা গ্রামের হিরু মিয়ার ছেলে মুনির (৫), একই ইউনিয়নের আরিফ খান বাসুদেবপুর গ্রামের রিজু মিয়ার স্ত্রী আর্জিনা বেগম (২৮), বাদিয়াখালী ইউনিয়নের রিফাইতপুর সরকারেরতারি গ্রামের খগেন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী জোৎস্না রানী (৫৫), পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমেদপুর গ্রামের আবদুল কাদের মিয়ার স্ত্রী মমতা বেগম (৬৪) এবং ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের ডাকাতিয়ার চর গ্রামের বারেক মিয়ার ছেলে হাফিজ উদ্দিন (৬৫)।
পলাশবাড়ী থানার ওসি মাসুদুর রহমান জানান, ঝড়ে গাছ চাপায় তার এলাকায় দুইজন মারা গেছেন।
রোববার বিকেল ৩টার দিকে পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের ডাকেরপাড়া গ্রামের জাহানারা বেগম বাড়ি উঠানে সাংসারিক কাজ করছিলেন। হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ের এক পর্যায়ে একটি গাছ উপড়ে পড়লে তাতে চাপা পড়ে জাহানারা ঘটনাস্থলে মারা যান।
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আবদুল গোফ্ফার মোস্তফাপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছলে একটি গাছ তার ওপর উপড়ে পড়ে। এতে তিনি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান বলে জানানো হয়েছে বলেন ওসি।
ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান গাছ চাপায় এক নারী নিহত খবর জানিযে বলেন, বেলা সোয়া ৩টার দিকে কিশামত হলদিয়া গ্রামের ময়না বেগম বাড়ির আঙিনায় কাজ করছিলেন। এ সময় বাড়ির একটি গাছ ভেঙে পড়লে চাপা পড়ে মারা যান ময়না।
ফুলছড়ি থানার ওসি কাওছার আলী জানান, বেলা পৌনে ৪টার দিকে ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামের বিশু মিয়ার স্ত্রী শিমুলি বেগম একইভাবে বাড়ির উঠানে কাজ করার সময় গাছ চাপায় মারা যান।
মালিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আজম জানান, গাইবান্ধা সদরের ঢনঢনি পাড়ার সাহারা বেগম ঝড় শুরু হলে খড়ি কুড়াইতে বাড়ির উঠানে যান। এ সময় গাছের ডাল তার মাথায় ভেঙে পড়লে তিনি মারা যান।
এদিকে, জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা ইদ্রিশ আলী জানান, ঝড়ে শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে । গাইবান্ধা জেলার অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তবে কী পরিমাণ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে না পারলেও তিনি বলেন, ঝড়ে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা জরিপ করে দেখা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।