Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেয়ারবাজারে লেনদেন আজ থেকে দুই ঘণ্টা

মার্কেটের সঙ্গে রুটি-রুজি জড়িত, বন্ধ করলে প্রচুর লোকের জীবিকা নষ্ট হবে : প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

লকডাউনের কারণে শেয়ারবাজারে নতুন সময়সূচি অনুযায়ী লেনদেন হবে। গতকাল প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়। যা আজ সোমবার থেকে কার্যকর হবে। নতুন সময় সূচি অনুযায়ী, আগের মতো লেনদেন শুরু হবে সকাল ১০টায়। তবে আড়াইটার বদলে দুপুর ১২টায় লেনদেন শেষ হবে। অর্থাৎ সাড়ে চার ঘণ্টার বদলে শেয়ারবাজারে লেনদেন হবে দুই ঘণ্টা।

ডিএসইর জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার থেকে ডিএসইতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লেনদেন হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না দেয়া পর্যন্ত লেনদেনের এই সময় সূচি কার্যকর থাকবে।

করোনাভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বিনিয়োগকারীদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে লেনদেন করার জন্য পরামর্শ দিয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে ডিএসইর এক কর্মকর্তা জানান, মহামারির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার এক সপ্তাহের লকডাউন দেয়ায় ব্যাংক লেনদেনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে শেয়ারবাজারে লেনদেনের নতুন এই সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লেনদেনের এই সময় সূচি নির্ধারণ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ডিএসই নিয়ন্ত্রক সংস্থার দেয়া সিদ্ধান্ত কার্যকর করছে। এর আগে গতকাল ১১ নির্দেশনা দিয়ে ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য লেনদেন সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয় সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত। লকডাউন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির আগে পুঁজিবাজার সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) ও সিএফএ সোসাইটি বাংলাদেশের আয়োজনে এক কর্মশালায় বিএসইসি চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম জানান, লকডাউনের মধ্যেও শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ হবে না। ব্যাংকের লেনদেনের সময়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে শেয়ারবাজারে লেনদেন চলবে।

প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারের লেনদেন বন্ধ করলে বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাই শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ হবে না।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আজকে (গতকাল) দেখলাম অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নিয়ে ৩০ জনের শরীরে রক্ত জমে গেছে। এরকম বিভিন্ন সময় বিভিন্ন খবর আসছে। আবার ভ্যাকসিন নিয়েও মানুষের করোনা হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে আমার ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ কয়েক বছরের মধ্যে এর কোনো সমাধান দেখতে পাচ্ছি না। তাহলে আমরা যদি কয়েক বছর ঘরে বসে থাকি তাহলে কী হবে? তাহলে মানুষের অর্থনীতির যে ব্যবস্থাপনা বা মানুষের রুটি-রুজি বা জীবিকা সেটার কি হবে উল্লেখ করেন শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম।

তিনি বলেন, সরকার কলকারখানা সব খোলা রেখেছে, কৃষি কাজও চলছে, যাতে উৎপাদনে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। উৎপাদন যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় তাহলে দেশের উন্নয়ন সব স্থবির হয়ে যাবে এবং আমরা সমনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব না।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকিং আওয়ার দেখে আমরা ট্রেডিং আওয়ার ঠিক করবো। তবে এটাও খুব সহজ কাজ না। এটার বিরুদ্ধেও চ্যালেঞ্জ আছে। কিন্তু আমরা ইকোনমির সঙ্গে থাকতে চাই। অর্থনীতি যখন চলে পৃথিবীর কোথাও ক্যাপিটাল মার্কেট বন্ধ থাকে না। আমরা তো এখন বিশ্ব থেকে আলাদা হয়ে যেতে পারি না। সব জায়গায় যে রকম, আমাদেরও ওরকম হতে হবে।

প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখে অথবা সেখানে ভালো রিটার্ন না পেলে ক্যাপিটাল মার্কেটে টাকা রাখে। তো আমি যদি বন্ধ করে রেখে দেয় মানুষ তো টাকা রাখবে না। রাখলে সে টাকা ওঠাতে পারবে না। যদি এ রকম ক্লোজ অ্যাকাউন্ট হয়ে যায়, তখন মানুষ হতাশ হয়ে ব্যাংকে টাকা রেখে দেবে। সুতরাং মার্কেট ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি বলেন, যদি ব্যাংকিং আওয়ার ছোট হয়, আমরাও ছোট করবো। ব্যাংকিং আওয়ার নরমাল থাকলে আমরাও নরমাল রাখবো। আমরা ডিজিটাল প্লাটফর্মে আছি, কাজেই আশাকরি মানুষ ঘরে বসে হলেও ডিজিটালে কাজ করতে পারবে, টেলিফোনে কাজ করতে পারবে, মোবাইল অ্যাপ দিয়ে কাজ করতে পারবে। আমরা বন্ধ করব না উল্লেখ করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান।

প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, মার্কেটে এত লোকের রুটি-রুজি জড়িত, আমরা যদি বন্ধ করে দেই প্রচুর লোকের জীবিকা নষ্ট হয়ে যাবে। আবার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং বন্ধ করে দিয়ে আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারব না।

সিএফএ সোসাইটির সভাপতি শাহিন ইকবালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সিএমজেএফ সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল, সিএফএর সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেয়ারবাজার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ