বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনসহ গ্রেফতার নেতা কর্মীদের মুক্তি দাবি করেছেন বিএনপির নেতারা। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানান নেতারা চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে।
বিএনপির নেতারা বলেন, গত ২৯ মার্চ সোমবার বিকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির উদ্যোগে নগরীর কাজীর দেউড়ি নুর আহম্মদ সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীদের আহত করেছে। পরে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনসহ ১৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার ও কোতোয়ালি থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এম.এ আজিজ। এছাড়াও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ডা. শাহাদাত হোসেনের আইনজীবী এড. কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক এড. এ.এস.এম বদরুল আনোয়ার, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. এনামুল হক এনাম। লিখিত বক্তব্যে এম এ আজিজ বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেন একজন পরিছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে সর্বমহলে পরিচিত। তিনি একজন পেশাজীবী চিকিৎসক। যিনি বিগত চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করে জনতার মেয়র হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। যিনি মানুষকে বিনা টাকায় চিকিৎসা করেন, সাহায্য করেন। এমন একজন জনপ্রিয় নেতাকে বিনা-কারণে তার চেম্বার থেকে রোগী দেখার সময় পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে উপরোক্ত ২টি মামলা ছাড়া ও চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে অভিযোগ আনা হয়েছে তা হাস্যকর, মিথ্যা, কুরুচিপূর্ণ, যা বিশ্বাসযোগ্য নয়।
তিনি ষড়যন্ত্রের স্বীকার। পুলিশ কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই মামলা দায়ের হওয়ার সাথে সাথে গ্রেপ্তার করাও রহস্যজনক। আমরা আশা করব এই মামলাটির বিশ্বাসযোগ্য, নিরপেক্ষ তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। আমরা মনে করি চট্টগ্রামে সরকার বিরোধী আন্দোলন দমিয়ে রাখতেই তাকে গ্রেফতার করেছে। আমরা ডা. শাহাদাত হোসেন ও মনোয়ারা বেগম মনিসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নাজিমুর রহমান, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, শাহ আলমসহ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরাকৃত ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করে ডা. লুসি খান মামলা দায়ের করেছেন। মুজাফফর আহমেদ এবং তিন নম্বর আসামি ফাতেমা জহুরা, যিনি মুজাফফরের স্ত্রী। বলা হয়েছে, শাহাদাত হোসেনের নির্দেশে জনৈক ডা. লুসি খানের মহাসচিবকে অপহরণ করা হয়েছে এবং চাঁদা দাবি করা হয়েছে। বাদি লুসি খান বলছেন, গত ২০ মার্চ এনজিওর অফিসে গিয়ে তার সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়েছে এবং চাঁদা দাবি করা হয়েছে। মুজাফফর আহমেদ প্রায় ২০ বছর ধরে সৌদি প্রবাসী একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা। তার স্ত্রী ২০২০ সালে করোনা শুরুর আগে বাংলাদেশে আসেন এবং ১১ মার্চ ২০২১ সাল থেকে মুজাফ্ফর আহমদ সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। চাঁদা দাবি এবং অপহরণের কথা বলা হচ্ছে, যে লোক বাংলাদেশে নেই তার বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক হয়রানি এবং একজন শিক্ষিত লোকের চরিত্রহনন বিরোধী দল করলে বাংলাদেশে এখন কতটা সহজ হয়ে গেছে, সেটাই এ মামলায় প্রমাণ।
তিনি বলেন, চকবাজার থানার এজাহার অনুযায়ী লুসি খানের সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ এখনও নিখোঁজ। কিন্তু এই মহিউদ্দিনের সাথে লুসি খান প্রতিদিন তার ফিরিঙ্গী বাজারের ঘর থেকে বের হচ্ছেন, গত ২২ মার্চ থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আছে, ছবি ও সিডি আমাদের কাছে আছে। যদি কারো এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় তাহলে আমরা দিতে পারব। এই চাঁদাবাজির নাটকটা কেন করা হলো প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, শাহাদাত হোসেনকে কেন জড়ানো হল? আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, একটা রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হবে, আর তার আগেই থানায় গিয়ে লুসি খান এজাহার লেখা শুরু করলেন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ.এম নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান, সদস্য এনামুল হক এনাম, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ আজম উদ্দিন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইস্কান্দার মির্জা, আব্দুল মান্নান, বিএনপি নেতা এড. ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, নূর মোহাম্মদ, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, এড. মফিজুল হক ভুঁইয়া, মনজুর আলম চৌধুরী মঞ্জু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।