Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০২১, ১:৪৬ পিএম

রাজশাহীতে আবারও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি হিসেবে স্বাস্থ্য বিভাগ দেশের যে ২৯টি জেলাকে চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে রাজশাহী জেলাও আছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হলেও বালাই নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার। আগের তুলনায় কমেছে পরীক্ষা নিরীক্ষার হার। ভ্যাকসিন নেবার সংখ্যাও দিন দিন কমছে। শুরুতে একদিনে দুই আড়াই হাজার মানুষ ভ্যাকসিন নিলেও এখন তা পাঁচশোর নীচে নেমেছে। হাট বাজার, বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন আর নগরীর মোড়ের আড্ডাগুলো এখনো জমজমাট। বিনোদন কেন্দ্র গুলোতেও গা ছাড়া ভাব। অধিকাংশের মুখে নেই মাস্ক। অনেকের থুতনিতেই ঝুলছে। চলাচলের অন্যতম বাহন অটোরিক্সার চালক ও যাত্রীদের বেশীর ভাগেরই মুখে মাস্ক নেই। দুরত্ব বজায় রাখারও কোন বালাই নেই।

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ক’দিন ধরেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য বাড়ানো হয়েছে আরও দুটি ওয়ার্ড। গত সোমবার হাসপাতালের ২৫ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড দুটিকে করোনা ওয়ার্ড হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
করোনার সংক্রমণের প্রথম দিকেও এই ওয়ার্ড দুটিতে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা হতো। তারপর সংক্রমণ কমে এলে ওয়ার্ড দুটিতে অন্য রোগীদের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। এখন আবার সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়লে ওয়ার্ড দুটিও বাড়ানো হলো। রামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস একথা জানিয়েছেন।

তিনি জানান, করোনার প্রথম দিকে এ দুটি ওয়ার্ড ছাড়াও হাসপাতালের ২৯, ৩০, ৩৯, ৪০, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), কেবিনের ২২টি শয্যা, খ্রিষ্টিয়ান মিশন হাসপাতাল, এবং সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা চলত। পরে ২৫ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং মিশন হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা বন্ধ করা হয়। এখন আবার হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ বেড়েছে। তাই ২৫ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড করোনা রোগীদের জন্য র্নির্ধারণ করা হলো।
তিনি জানান, রাজশাহীতে করোনা শনাক্তের পর হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা সর্বনিম্ন চারজনে নেমেছিল। এখন রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই আবার বাড়ছে। মঙ্গলবার হাসপাতালে ২৯ জন করোনা রোগী ভর্তি ছিলেন। এছাড়া করোনার লক্ষণ নিয়ে ছিলেন আরও ৩৬ জন। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ছিলেন ১০ জন করোনা রোগী।

এর আগে গত শনিবার দিবাগত রাতে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক চিকিৎসকসহ দুইজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বৃহৎ এই হাসপাতালে রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের রোগী আসেন চিকিৎসা নিতে। তাই হাসপাতালটির প্রস্ততিও রাখতে হয় বেশি।
এদিকে গতকাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ১০২ জনের। এ নিয়ে বিভাগে করোনা শনাক্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ২৬ হাজার ৭৭৮ জনে। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৪০৯ জনের। এরমধ্যে ২৪ হাজার ৭৭৩ জন সুস্থ হয়েছে। এরমধ্যে রাজশাহী জেলায় ৬৪৭৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৮৪৪ জন, নওগাঁ ১৬৯১ জন, নাটোর ১৩০২ জন, জয়পুরহাট ১৪০২ জন, বগুড়া জেলায় ১০ হাজার ৩৮২ জন, সিরাজগঞ্জ ২৮৬৯ জন ও পাবনা জেলায় ১৮০৫ জন। মৃত্যু হওয়া ৪০৯ জনের মধ্যে রাজশাহী ৫৬ জন, চাঁপাইনবাগঞ্জে ১৪ জন, নওগাঁ ২৬ জন, নাটোর ১৩ জন, জয়পুরহাট ১০ জন, বগুড়া ২৬১ জন, সিরাজগঞ্জ ১৮ জন ও পাবনায় ১১ জন। মোট হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিল ৬৬ হাজার ৯৪৮ জন। রাজশাহী জেলার সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, মানুষের মাঝে সচেতনতা কমে গেছে। এ রকম হলে সংক্রমণ বাড়বেই। টিকা আসার পর মানুষ মনে করছেন, সংক্রমণ কমবে। কিন্তু এখনও সবাই তো টিকা নেননি। তাই বেপরোয়া চলাচলে সংক্রমণ বাড়ছে। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আবারও অভিযান প্রয়োজন বলে মনে করেন সিভিল সার্জন। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু আসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে আমরা অভিযান চালিয়েছি। মাস্ক বিতরণ করেছি। দু’একদিনের মধ্যে আবারও অভিযান শুরু হবে। নগর পুলিশের পক্ষ থেকেও নগরীর বিভিন্ন স্থানে মাস্ক বিতরন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংও করা হচ্ছে। তবে কে শোনে কার কথা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা ভাইরাস

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ