Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সচল হলো সুয়েজ খাল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

অবশেষে আংশিকভাবে সচল হলো বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান নৌপথ সুয়েজ খাল। প্রায় সপ্তাহখানেক আটকে থাকার পর ‘এভার গিভেন’ নামের কনটেইনারবাহী জাহাজটি চলতে শুরু করার পর সোমবার নৌপথটি সচল হয়। তবে ব্যস্ত এই নৌপথ কখন থেকে পুরোপুরি সচল হবে সে সম্পর্কে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। খালের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সুয়েজ খালের তীরের বালিতে আটকে পড়া বিশালাকৃতির মালবাহী জাহাজটিকে সোমবার মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। ৪০০ মিটার লম্বা এবং দুই লাখ টন ওজনের দানবাকৃতির এই জাহাজটিকে পানিতে ভাসানো হয়েছে। সেটি আপাতত সুয়েজ খালের বাইরে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। সেখানে এটি পরিদর্শন করবেন বিশেষজ্ঞরা। সুয়েজ খাল হচ্ছে বিশ্ব বাণিজ্যের সবচেয়ে ব্যস্ততম পথগুলোর একটি। এই নৌপথ দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে শুরু করে বিশ্ব বাণিজ্যে। জাপানি মালিকানাধীন এই জাহাজটি প্রায় ২০ হাজার কন্টেইনারসহ বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপ‚র্ণ এই খালটি অতিক্রমের সময় বালিতে আটকে যায়। জাহাজটির মাথা খালের তীরে আটকে সেটি আড়াআড়ি হয়ে পড়লে খালে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে খালের দুই দিকে সাগরে আটকা পড়ে কয়েকশ জাহাজ। অনেক জাহাজ জটে আটকা না থেকে দীর্ঘ পথে অন্য রুটে রওয়ানা করে। গত সাত দিনে মিসরের তো বটেই পুরো বিশ্ব বাণিজ্যের বিশাল ক্ষতি হয়ে গেছে। এখনও বিশ্ব বাণিজ্যের ১২ শতাংশ এই খালের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ টন জ্বালানি তেল এবং বিশ্বের মোট তরলীকৃত জ্বালানি গ্যাস এই খাল দিয়ে পার হয়। রবিবার পর্যন্ত পাওয়া হিসাবে, ৩৬৯টি মালবাহী জাহাজ ১২০ মাইল লম্বা খালের দুই দিকে সাগরে আটকা পড়েছে। সোমবার পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, ৪৫০টির মতো জাহাজ জটের মধ্যে পড়েছে। খাল চালু হলেও জট কাটাতে কয়েকদিন লেগে যাবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। সুয়েজ খালের ওপর মিসরের অর্থনীতির অনেকটাই নির্ভর করে। করোনাভাইরাস প্যানডেমিকের আগে দেশটির জিডিপির প্রায় দুই শতাংশ আসতো এই নৌপথ থেকে পাওয়া মাশুল থেকে। সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষের প্রধান ওসামা রাবি শনিবার বলেন, খাল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন তাদের গড়ে এক কোটি ৫০ লাখ ডলার ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে লয়েডস লিস্টে প্রকাশিত পরিসংখ্যান বলছে, শত শত মাল ভর্তি জাহাজ আটকে থাকায় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯৬০ কোটি ডলারের ব্যবসা বন্ধ ছিল। তার অর্থ প্রতি ঘণ্টায় ৪০ কোটি ডলার এবং ৩৩ কোটি টন পণ্যের ব্যবসা আটকে ছিল এই নৌপথে। জাহাজ পরিবহন খাতে শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান এসিএম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পত্রিকাকে জানিয়েছে, এই জটের কারণে ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য কিছু জাহাজের ভাড়া হঠাৎ ৪৭ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। সুয়েজ খালের জটের মধ্যে বসে না থেকে কিছু কিছু জাহাজ দীর্ঘ পথে যাত্রা করে। ফলে গন্তব্যে পৌঁছাতে তাদের অতিরিক্ত আট দিন লাগবে। সুয়েজ খাল বন্ধ হয়ে পড়ায় শুধু যে মিসরের অর্থনীতি বা জাহাজ পরিবহন ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে তা নয়। বহু দেশে অভ্যন্তরীণ পরিবহন, সুপারমার্কেটের মত খুচরা ব্যবসা বা পণ্য উৎপাদনকারী অসংখ্য প্রতিষ্ঠান লোকসানে পড়েছে। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ