পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হত্যা, গুম, নির্যাতন ও জুলুমের বিরুদ্ধে সবাই সম্মিলিতভাবে রাজপথে আসুন। এই সরকার সহসাই জনগণের ক্ষোভে জ্বলে পুড়ে যাবে। ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী একথা বলেন।
এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জুর সঞ্চালনায় ও দলের আহবায়ক, সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ সোমবার সকাল ১১টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে "কণ্ঠরোধ, হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ ও সংহতি সভা" অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি, মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ডঃ দিলারা চৌধুরী, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক সাবেক ডাকসু ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক, সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ হাসান নাসির, পীর মাশায়েখ পরিষদের সমন্বয়ক ডা. শামসুল আলম চিশতি, এবি পার্টির যুগ্ম-আহবায়ক অধ্যাপক ডাক্তার মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন যারা জনগণের জন্য সংগ্রাম করবে নেতৃত্ব অটোমেটিকালি তাদের হাতে থাকবে। আলেম ওলামারা প্রতিবাদ করেছেন, গুলী খেয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন তাদের এই ত্যাগের জন্য আমরা তাদের সমর্থন দিয়েছি। তিনি সরকার কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা বার বার ভুল পথে হাঁটছেন। বঙ্গবন্ধুকে আপনারাই বেশী ছোট করেছেন। ওমানের বাদশাহ’র সাথে শেখ মুজিব কে গান্ধী পুরস্কার দেয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন এটা অবমাননাকর। তিনি বলেন, আজকে লুকিয়ে থাকলে চলবে না, লুকিয়ে থাকবে যারা অন্যায় করেছে তারা, না হয় আমরা কেউ ভাল থাকবো না। নরেন্দ মোদিকে দেশে এনে প্রধানমন্ত্রী "অশ্বডিম্ব" পেয়েছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে বলেন শুভদিন আসছে। এই সরকার সহসাই জনগণের ক্ষোভে জ্বলে পুড়ে যাবে। হত্যা, নির্যাতন ও জুলুমের বিরুদ্ধে তিনি সবাইকে সম্মিলিতভাবে রাজপথে আসার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, প্রতিবাদ করা আমাদের অধিকার এটা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। ক্ষমতায় কেউ চিরকাল থাকেনি থাকতে পারবেও না। বিজেপি নেতাদের সাম্প্রদায়িক ও উস্কানিমূলক বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন ভারতের জনগণের সাথে আমাদের কোন শত্রুতা নেই, আমরা সবার সাথে বন্ধুত্ব চাই কিন্তু আমরা কারও আধিপত্য মেনে নেবনা। গণহত্যা ও অধিকার হরনের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ চলবে। তিনি ডা. জাফরুল্লাহ কে বাংলার নেলসন মেন্ডেলা আখ্যায়িত করে বলেন সকল অধিকার বঞ্চিতদের নিয়ে জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগ নিন জনগণ আপনার পাশে থাকবে।
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিবিদ ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, হিটলার, গাদ্দাফীর পতনে যে সময় লেগেছে এই সরকারের পতন ঘটাতে তেমন সময় লাগবে না, কারণ এই সরকার জনবিচ্ছিন্ন, সরকারের পক্ষে কোনো জনমত নেই। তিনি বলেন হেফাজতের সাথে আমার রাজনৈতিক ভিন্নমত থাকতে পারে কিন্তু তাদের অধিকার ও বাক্ স্বাধীনতার জন্য আমি সংগ্রাম করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন এই জালেম সরকারের হাতে রক্ত, তাদের হাত খুনীর হাত। তাদের বিরুদ্ধে যে বা যারাই লড়বে, মানুষ তাদের পিছনেই যাবে। একদিন জনগণ তাদেরকেই সরকারে পাঠাবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, স্বাধীনতা দিবসে গুলি করে ১৭ জন নাগরিক হত্যা করার চেয়ে কলঙ্কের আর কি হতে পারে? সরকার যত অত্যাচার করবে তাদের শক্তি তত কমবে। এই ডাকাত সরকারকে ক্ষমতায় রাখা যাবে না। এই সরকারের বিরুদ্ধে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে অথবা ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলমান আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বীরপ্রতীক বলেন, আজ বাংলার মানুষ শ্লোগান তুলছে দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা। কেন এই শ্লোগান আজ জনপ্রিয় হচ্ছে তা ভেবে দেখতে হবে। জনগণকে এই সরকার বলির পাঠা বানিয়ে রেখেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন- স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা এটা শুধু এবি পার্টির স্লোগান থাকবে না এটা ক্রমান্বয়ে সারা বাংলার মানুষের স্লোগানে পরিণত হবে।
এবি পার্টির যুগ্ম-আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, আশ্চর্যের বিষয় হলো পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে ঘুমন্ত মানুষের উপর গুলি চালিয়েছিল আর ভোটহীন ফ্যাসিবাদী সরকারের পুলিশ বাহিনী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীন দেশের নীরহ সজাগ জনগণের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। ঢাকা চট্রগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তারা মানুষ মেরে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে। তিনি বলেন এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
এবি পার্টির সদস্য সচিব জনাব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ভারত সরকারকে ভাবতে হবে তারা কি এখনও শুধু ফ্যাসিস্ট সরকারের বন্ধু থাকবে না বাংলাদেশের মানুষের বন্ধু হবে? সুবর্ণ জয়ন্তীতে ভেবেছিলাম এই সরকার কী না কী চমক দেখাবে! শেষ পর্যন্ত দেখলাম তারা পাকিস্তানী জান্তাদের মত গুলী, লাশ আর ফেসবুক বন্ধ করে আমাদের জান এবং জবান বন্ধ করার পুরোনো চমকই দেখালো।
যুগ্ম-সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রে এটা লেখা ছিলনা যে আমরা ক্ষমতায় গেলে নির্বাচন দিব না। এটা লেখা ছিল না যে, জনগণকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করব, লুটপাট করব, নাগরিকদের গুম করবো, খুন করবো। তিনি বলেন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে যা ছিল তার কোনটাই কেউ বাস্তবায়ন করেনি। প্রত্যেকটা সরকার এই রাষ্ট্রকে রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে এএফএম সোলায়মান চৌধুরী রাষ্ট্রের প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, আমার টাকায় কিনলি গুলি, আমার বুকেই চালিয়ে দিলি? তিনি বলেন মানুষের মৌলিক অধিকার এভাবে খর্ব করার অধিকার কারো নেই। যারা মোদির আগমনের বিরোধীতা করেছেন তাদের বিরোধিতা করার অধিকার আছে। তাদের হরতাল ডাকার অধিকার আছে। আপনি তাদের কণ্ঠরোধ করবেন কেন?নিজেদের পেটোয়াবাহিনী লেলিয়ে দেবেন কেন? তিনি বলেন এবি পার্টি সকল ধরনের কণ্ঠরোধ, হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে। মজলুম যদি আমাদের নীতি আদর্শের বিরুদ্ধেরও হয় তাদের প্রতিও এবি পার্টির সমর্থন থাকবে বলে তিনি ঘোষণা করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।