বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
হযরত মূসা (আ.)-এর আগমনের সম্ভাবনা নেই, তবে হযরত ঈসা (আ.) কেয়ামতের পূর্বে আগমন করবেন। অর্থাৎ আসমান হতে অবতরণ করবেন এবং শেষ নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর উম্মত হিসেবে রাজত্ব করবেন এবং দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তার ধর্ম বলবৎ থাকবে না। তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচার করবেন। আর এ ধর্ম হচ্ছে বিশ্ববাসীর মুক্তির উপায়। কোরআন মাজিদের আয়াতে এ ধর্ম সম্পর্কেই বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি যদি ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্ম অবলম্বন করে তবে আল্লাহর কাছে তা গ্রহণীয় নয়’।
কোরআনে আল্লাহ তা‘আলার এ স্পষ্ট ঘোষণা থাকা সত্তে¡ও মুসলমানগণ কখনো কাউকে জোরপূর্বক ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করেননি। তারা কোরআনের অপর আয়াত, লা ইকরাহা ফিদ্দীন, অর্থাৎ দ্বীন প্রচারে কোনো জোর জবরদস্তি নেই (সূরা : আলে ইমরান)-এ নীতি অনুসরণ করে আসছেন সর্বদা, সর্বকালে। ইসলামবিদ্বেষীরা কোরআনের অনেক শিক্ষা জেনেও না জানার ভান করে থাকে। ইসলামের নবজাগরণে ভীত-শঙ্কিত হয়ে নানাভাবে ইসলামের নবী এবং এলাহী বিধান কোরআনের অবমাননা, বিকৃতি, বিভ্রান্তি এবং কোরআনের আয়াত বাদ দেয়ার মতো ধৃষ্টতা-দুঃসাহস দেখাতে শুরু করেছে।
কোরআনের প্রতি অমর্যাদা প্রদর্শনে ইহুদী-খ্রিষ্টানদের জুড়ি না থাকলেও বর্তমান যুগে কোরআনের আয়াত বাদ দেয়ার উদ্যোগের ন্যায় ঘৃণ্য অপরাধ তাদের দ্বারা সঙ্ঘটিত হবার ঘটনা সাম্প্রতিক জানা যায় না। তবে তাদেরই গোপন ইঙ্গিতে মুসলমান নামধারী কোনো গোষ্ঠী-সম্প্রদায় এ অশুভ তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে কি-না, তা ভেবে দেখার বিষয়। ভারতে কোরআনের আয়াত পরিবর্তনের উদ্যোগের প্রতি আমরা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।
সূরা আলে ইমরানের অন্যত্র আল্লাহ নিশ্চিত করে আরো ঘোষণা করেছেন। ‘ইন্নাদ্দীনা ইন্দাল্লহিল ইসলাম,’ অর্থাৎ নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম (আয়াত : ১৯)।
সারকথা এই যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আবির্ভাবের পর কোরআন ও তার শিক্ষার সাথে সমঞ্জস্যপূর্ণ ধর্মই ইসলাম এবং এ ধর্মই আল্লাহ তা‘আলার কাছে গ্রহণযোগ্য, অন্য কোনো ধর্ম নয়। বিষয়টি কোরআনের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন আঙ্গিকে বর্ণিত হয়েছে। ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব, বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য সম্পর্কে কোরআনের এসব ঘোষণা কাফের, মোশরেক, মোনাফেক তথা আল্লাদ্রোহী ও ইসলামবিদ্বেষীরা কখনো সহ্য করতে পারে না।
কেননা, তারাই জাহান্নামের ইন্ধন হবে, কোরআন বারবার এ কথা ঘোষণা করেছে। আল্লাহর হারাম (নিষিদ্ধ) বস্তুগুলোকে যারা হালাল বা বৈধ করে, তারাই বহু প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং তা থেকে খাঁটি মুসলমানরাও রেহাই পায় না। তাই আল্লাদ্রোহীদের সম্পর্কে রসূলুল্লাহ (সা.)-এর একটি হাদীস রয়েছে, যা মোহাম্মদ ইবনে ইসহাক কর্তৃক বর্ণিত।
রসূলুল্লাহ (সা.) একটি দলকে উদ্দেশ করে বলেন, তোমরা ইসলাম গ্রহণ কর। তারা বলল, আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি। রসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমরা মিথ্যা বলেছ। তোমাদের ইসলাম কীভাবে শুদ্ধ হবে, অথচ তোমরা আল্লাহর সাথে পুত্র সাব্যস্ত কর এবং তোমরা সলীবের (ক্রুশ) পূজা কর এবং শূকর ভক্ষণ কর। (তফসীরে কবীর)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।