রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা গ্রীন সিটি হাউজিংয়ে সিআইডি নারায়ণগঞ্জের পুলিশ পরিদর্শক গাজি মিজানুর রহমানকে ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও লাঠি দিয়ে মারপিট করে আহত করার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত সোমবার দিনগত গভীর রাতে মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় সিআইডি কর্মকর্তার লুট হওয়া সরকারি অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- জামিউল হক মোকাররম ওরফে বুলেট ও হাবিবুর রহমান হাবিব।
গতকাল তেজগাঁও জোনের ডিসি হারুন অর রশীদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় হাউজিং, চন্দ্রিমা উদ্যানসহ বিভিন্ন হাউজিং সিটিগুলোতে মানুষ জমি কিনে থাকে। কারণ সহজে এসব জমি কেনা যায়। কিন্তু এই সব এলাকায় জমি দখলে নিতে গেলে বা বিক্রি করতে গেলে কঠিন হয়ে যায়। মোহাম্মদপুর বসিলা গার্ডেন সিটি থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলায় কর্মরত সিআইডি কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তার বাসা থেকে সিআইডি হেডকোয়ার্টারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথিমধ্যে বাসার কাছে তার নিজ নামে কেনা মোহাম্মদপুর গ্রীন সিটি হাউজিং-২ এ প্লট দেখতে যান। ওই দিন দুপুর দেড়টার দিকে ওই জমিতে পৌছালে আগে থেকে সেখানে দলবদ্ধভাবে অবস্থান করা কিছু লোক তার গতিরোধ করে তাকে ধারালো অস্ত্র, লোহার রড ও কাঠের লাঠি দিয়ে মারপিট শুরু করে। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক গাজি মিজানুর রহমান রক্তাক্ত আহত হন। আসামিরা মিজানুর রহমানকে মেরে তার ব্যবহৃত সরকারি পিস্তল, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক গাজি মিজানুর রহমানের স্ত্রী অভিযোগ দায়ের করলে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজন আসামির জড়িত থাকার তথ্য সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত সোমবার গভীর রাতে ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি জামিউল হক মোকাররম ওরফে বুলেটকে মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ও জড়িত অন্য আসামিদের নাম প্রকাশ করে। পরবর্তীতে তার দেয়া তথ্যমতে এই ঘটনায় জড়িত অপর আসামি হাবিবুর রহমান হাবিবকে মোহাম্মদপুর জাকির হোসেন রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তার কাছ থেকে মিজানুর রহমানের নামে ইস্যুকৃত সরকারি ৭.৬২ এমএম পিস্তলটি ৮ রাউন্ড গুলিসহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়।
প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এই ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের নামও তারা প্রকাশ করেছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, প্রায়ই মোহাম্মদপুরে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আরও সাত-আট জনের নাম আসছে। আমরা তাদের রিমান্ড চাইবো আদালতে। রিমান্ডে নেয়া হলে জানা যাবে তারা কার হয়ে কাজ করে। তাদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে যেসব ভ‚মিদস্যুর নাম আসবে তাদের সবাইকেই গ্রেফতার করা হবে।
মোহাম্মদপুর থানার এসআই আলতাফ হোসেন জানান, আদালতের মাধ্যমে আসামিদের একদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।