Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উত্তরে খরাতপ্ত পরিস্থিতি : শুকাচ্ছে বোরো ক্ষেত

বগুড়া থেকে মহসিন রাজু | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২১, ৫:২৮ পিএম

ক্রমশ খরাতপ্ত ও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে উত্তরের প্রকৃতি। শুকিয়ে যাচ্ছে বোরো ফসলের সবুজ মাঠ। আম,জাম,লিচু,কাঁঠালের গুটি বাড়ছেনা স্বাভাবিক গতিতে । পুষ্ট হচ্ছেনা গাছের সজনে ডাঁটা।
ফারাক্কা বাঁধ আর গজলডোবার ব্যারাজের কারণে উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদনদীর মধ্যে পদ্মা, যমুনা, তিস্তা, ব্রম্ভপুত্র,বাঙালী , মহানন্দা,ছোট যমুনা,ধরলা, বাঙালী, করতোয়ার বুক জুড়ে এখন ধু ধু বালু চর !
প্রধান প্রধান ওই নদনদীর শাখা নদীগুলোর অবস্থা এখন আরও করুণ। ২৩ মার্চে এই রিপোর্ট লেখার সময় বগুড়া আবহাওয়া অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেল , গত ডিসেম্বর থেকে মার্চের ২৩ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে মাত্র একবার। ১৩ মার্চ তারিখে বগুড়ায় ৬.৪ মিলিলিটার বৃষ্টির রেকর্ড রয়েছে । একই দিনে উত্তরের প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি বৃষ্টির রেকর্ড রয়েছে ।
এত দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়া উদ্বেগ জনক বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা । তাদের মতে মাঘের শেষের দিকে বৃষ্টি হওয়াটাকে সুলক্ষণ বলে মনে করা হয় গ্রাম বাংলায় । খনার বচনে আছে ‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ , ধন্যি রাজার পুণ্যি দেশ ।’ অর্থাৎ বর্ষা , শরত হেমন্তের বিদায় পর্বের শেষ দিকে বৃষ্টি না হওয়াটা রবিশস্যের মধ্যে সরিষা ও আলু সহ বিভিন্ন ফসলের জন্য যেমন উপকারি তেমনি মাঘের শেষের বর্ষনে খরিফ ফল মাকড়ের জন্য তা’ বিশেষ ফলদায়ী ।
এবছর মাঘে এবং মাঘের পরে ফালগুন চৈত্রের শেষেও বৃষ্টি না হওয়াটাকে উদ্বেগজনক মনে করছেন আবহাওয়া পর্যবেক্ষকরা। দেশের বিশিষ্ট পানি ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ এবং বগুড়া পল্লী উন্নয়ন ও গবেষনা কেন্দ্রের সাবেক ডিজি আব্দুল মতিন মনে করেন । ভু-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে এখন পর্যন্ত উত্তরের লক্ষ লক্ষ হেক্টেরের বোরো আবাদের জমি এখন পর্যন্ত সবুজাভ ভাবের সুরক্ষা হয়েছে । তবে চলমান খরা আরো দীর্ঘায়িত হলে কি হবে বলা মুশকিল অভিমত তার।
বোরো চাষীদের অনেকেই বলেছেন , আকাশের বৃষ্টির পানিতে হয়তো বিশেষ গুণ বা আল্লাহর রহমত ও অপার রহস্য নিহিত রয়েছে । তাই বোরো জমিতে বৃষ্টির পানি জমা হলে একদিকে যেমন সেচ খরচ কমবে তেমনি ধানের ফলনও বাড়বে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি।
হটি কালচার সুত্রে জানা গেছে, উত্তরের রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ , নওগাঁ, রংপুর ও দিন্াজপুর অঞ্চলের গাছে গাছে প্রচুর আমের মুকুল দেখা দিলেও খরাতপÍ পরিস্থিতির কারণে আমের মুকুলের গুটি স্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারছেনা। অনেক ধরনের ভাইরাস ইনফেকশনও হচ্ছে আম গাছের মুকুলে । বৃষ্টি না হওয়ায় আমের পাশাপাশি জাম, কাাঁঠাল , লিচু , সজনে ডাঁটার ফলন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে । খরা মওশুমের শুরুতে বাজারে সজনে কেজি ছিল ২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও ক্রেতারা এখন ১শ টাকা কেজিতে তা কিনতে পারছেন। মাঘ ফাল্গুনের বৃষ্টির প্রত্যাশা পুরণ না হওয়া শংকা থেকে অনেকে বলছেন , এখন বৃষ্টি না হয়ে যদি এপ্রিল ও মে মাসের দিকে ঝড় শিলা -বৃষ্টি কালবৈশাখীর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় তাহলেও মারাত্মক ক্ষতির শিকার হবে বোরোধানের আবাদ ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবহাওয়া

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ