Inqilab Logo

বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাড়িতে খামারে পোষা গরু-মহিষেরও করিডোর শুল্ক দিতে হচ্ছে

প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহীতে দেশি গবাদিপশু কেনা-বেচায় কাস্টমসকে পাঁচশ টাকা করে শুল্ক দিতে হচ্ছে। এ নিয়ে দেশি গবাদিপশু পালনকারী খামারিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভারতীয় গরু না হলেও কেন তাদের উপরে এমন জুলুম চালানো হচ্ছে। কোরবানির সময় হাটে গরু নিতে গেলেই গবাদিপশু আমদানি স্থান শুল্ক সেন্টারের (করিডোর) ছাড়পত্র না নিয়ে দেশি গরু-মহিষ কেনা-বেচা করা যাচ্ছে না। করিডোরের ছাড়পত্র ছাড়া গবাদিপশু বহন করতে গেলে বিজিবি ও কাস্টমসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হয়রানি করছে। যারা হাটে আনছেন তাদেরকে পাঁচশ’ পঞ্চাশ টাকা শুল্ক দিতে হচ্ছে। এরপরও রয়েছে হাটের ফি। যার প্রভাব দামের উপর পড়ছে। কেন দেশীয় গরুর উপর শুল্ক নেয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে আমদানি করা গবাদিপশুর শুল্ক ফাঁকি রোধে আঞ্চলিক টাক্সফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুধুমাত্র সীমান্ত এলাকার সব ধরনের গবাদিপশুর শুল্ক নেয়া হচ্ছে। তবে সীমান্ত এলাকার বাহিরের গবাদিপশু স্থানীয় জনপ্রতিনিধির প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে কেনা-বেচা ও বহন করা যাবে।
নিয়ম অনুযায়ী ভারত থেকে আনা গরু-মহিষ বিজিবির টোকেন নিয়ে করিডোরে গবাদিপশু নিয়ে যেতে হবে। সেখানে পাঁচশ টাকা আমদানি শুল্ক দিয়ে ছাড়পত্র নেয়ার পর কাস্টম গবাদিপশুর গাড়ি একটি নাম্বার দিয়ে দিবে। তাহলে আর কেউ ধরবে না।
আবুল হোসেন জানান, আট মাস আগে তারা রাজশাহী সিটি হাট থেকে ছয়টি দেশি গরু কিনে বাড়িতে লালন-পালন করেছেন। আগামী রোববার সে গরুগুলো বিক্রি করার জন্য সিটি হাটে নিয়ে যাবেন। এজন্য তিনি গরুপ্রতি ৫০০ টাকা হারে করিডোরে শুল্ক দিয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন। করিডোরের ছাড়পত্র না থাকলে রাজাবাড়ি চেকপোস্টে বিজিবি গরুগুলো আটকে দেবে। দু’বছর আগে বাড়িতে পালন করা তিনটি মহিষ হাটে নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি ধরে নিয়ে গিয়ে নিলাম করে দেয়। সে ব্যাপারে আদালতে মামলা করা হলেও এখনো তার সুরাহা হয়নি বলে জানান তিনি।
করিডোর কর্মকর্তা বলেন, দেশি ও ভারতীয় গবাদিপশু নির্ণয় করা যায় না বলে সীমান্ত এলাকার সকল গরু-মহিষ করিডোর করতে হয়। পথে হয়রানি এড়াতে গবাদিপশু লালন-পালনকারী ও ব্যবসায়ীরা দেশি গরু-মহিষের করিডোর করানো হয়। উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তম পশুরহাট রাজশাহী সিটি হাটের গরু ব্যবসায়ী সমশের আলী জানান, করিডোরের ছাড়পত্র ছাড়া কোনো গরু-মহিষ হাট থেকে বের করতে দেয়া হয় না। যদি নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে পুঠিয়ার বেলপুকুর বিজিবি চেক পোস্ট পার হয় না। সেটি দেশি আর ভারতীয় হোক, বা ছোট আর বড় হোক। সাইজের গরু-মহিষের করিডোরের ছাড়পত্র বিজিবির চেক পোস্টে দেখাতে হয়। হাট সূত্র জানায়, ছাড়পত্র নেয়ার মেয়াদ থাকে তিনদিন। যার কারণে একাধিকবার শুল্ক দিতে হয়।
রাজশাহী কাস্টম ও এক্সাইজ ভ্যাট কমিশনার ড. আব্দুল মান্নান সিকদার বলেন, দেশি গবাদিপশু করিডোর করার কোনো নিয়ম নেই। তবে ভারতীয় গরু-মহিষের শুল্ক ফাঁকি বন্ধ করতে সীমান্ত এলাকার সকল গবাদিপশুর করিডোরে ছাড়পত্র নেয়ার নিয়ম করা হয়েছে। ২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর আঞ্চলিক টাক্সফোর্সের সভার সিদ্ধান্তে সীমান্ত এলাকার দেশি গবাদিপশুর করিডোর করার নিয়ম করা হয়।
জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে সীমান্ত এলাকার দেশি গবাদিপশু পালনকারীরা তাদের পশু বিক্রি করতে পারত। কিন্তু ভারতীয় গবাদিপশু দেশি বলে জনপ্রতিনিধির প্রত্যয়নপত্র দিতেন। এর প্রেক্ষিতে সে সময় এ নিয়ম করা হয়। তবে সীমান্তের বাইরের এলাকার গবাদিপশু জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে গবাদিপশু বেচা-কেনা ও বহন করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে তাদের গবাদিপশুর করিডোর করাতে হবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাড়িতে খামারে পোষা গরু-মহিষেরও করিডোর শুল্ক দিতে হচ্ছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ