Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্মাণ কাজ বন্ধ

পাথরের বদলে ইটের খোয়া

চুয়াডাঙ্গা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

সিডিউল টেম্পারিং করে নির্মাণ কাজে পাথরের বদলে ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেই অনিয়ম ধরা পড়াই ৩ বছর চুয়াডাঙ্গা পরিবার-পরিকল্পনা উপ-পরিচালকের নতুন কার্যালয় নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ১ বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার কাজে অনিয়ম করলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বিলের ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপ-সহকারি প্রকৌশলী গনেশ চন্দ্র সিংহ (বর্তমানে নড়াইল জেলায় কর্মরত) বলেন, ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে চুয়াডাঙ্গা পরিবার-পরিকল্পনা উপ-পরিচালকের নতুন কার্যালয় নির্মাণ কাজের অনুমোদন পাওয়া যায়। এরপর মাটি ভরাট ও চারিদিকে প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। ৪ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ এ কাজ বাস্তবায়ন করার সকল প্রক্রিয়া শেষ করে গত ২০১৮ সালের ৮ মার্চ সিরাজগঞ্জ জেলার মেসার্স পিয়াস কনস্ট্রাকশনকে কাজ করার জন্য কার্যাদেশ দেয়া হয়। সেই মোতাবেক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে।
চুয়াডাঙ্গার স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদ আলম জানান, ভবনের দ্বিতীয়তলা ছাদ ঢালাইয়ের পর গোপনে অভিযোগ পেয়ে ঢাকা ও খুলনা থেকে তদন্ত দল এসে নিশ্চিত করে যে, এই ঢালাই কাজে পাথরের বদলে ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতি ঘনফুট পাথর আর ইটের খোয়ার দামের পার্থক্য ১২৬ টাকা। এছাড়াও ওই কাজে আরো অসংগতির প্রমাণ পায় তদন্ত দল। এরপর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার জানান, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার আওতাধীন তৎকালীন কুষ্টিয়া স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে দিনাজপুর জেলায় কর্মরত) এএফএম আনিসুর রহমান ও উপ-সহকারি প্রকৌশলী গনেশ চন্দ্র সিংহ আর্থিক সুবিধা নিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স পিয়াস কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে যোগসাজস করে। তারা সিডিউল টেম্পারিং করে সিডিউলে পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া লিখে নেয়। ওই সিডিউল ফটোকপি করে সেটা ব্যবহার করে নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করতে থাকে। এই বিল্ডিং-এর প্রায় সবকিছুই ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় নির্মাণ করা হয়েছে। যা তদন্ত দলের কাছে ধরা পড়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আর্থিক সুবিধার বিষয়টি অস্বীকার করে নির্বাহী প্রকৌশলী এএফএম আনিসুর রহমান ও উপ-সহকারি প্রকৌশলী গনেশ চন্দ্র সিংহ। তারা বলেন, ক্ষমতার কারণে অনেক সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ওপর খবরদারী করা সম্ভব হয় না। খবরদারী করতে না পারার কারণেই এই সমস্যাটি হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সদ্য যোগদান করা সহকারি প্রকৌশলী হাসান আল মামুন জানান, সম্প্রতি একটি দল এসেছিলো অর্ধনির্মিত ভবন পরিদর্শন করতে। তাতে বোঝা গেছে খুব তাড়াতাড়ি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
কুষ্টিয়া স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী জলিলুর রহমান বলেন, এই কাজ শুরু হওয়ার বিষয়টি এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। কোন দিন থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হবে তা প্রধান দফতর থেকে লিখিতভাবে জানায়নি। সে কারণে কাজ শুরু এখনো অনিশ্চিত। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। ২৫ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ