রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সেলিম আহমেদ, সাভার থেকে
সাভারে মাদক বিক্রির ধরন পাল্টেছে। এখন মরণ নেশা ‘বাবা’ সয়লাব। এ নেশার উপকরণ হাতের নাগালে সহজেই পাওয়া যায় ফলে মাদকসেবীদের কাছে ‘বাবা’ এখন জনপ্রিয়। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, ভারত, মায়ানমার, টেকনাফ থেকে সরাসরি সাভারে আসছে ‘বাবা’র (ইয়াবা) চালান। ফলে সাভারে এ মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে। গড়ে উঠেছে ইয়াবা ব্যবসার শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটে রাজনৈতিক নেতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একশ্রেণির অসাধু সদস্যও জড়িয়ে পড়ছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষিত লোকজনও ঝুঁকছে ইয়াবা সেবনে। অল্প সময়ে বড়লোক হওয়ার নেশায় অনেকেই জড়িয়ে পড়ছে ইয়াবা ব্যবসায়। ঢাকা জেলা (উত্তর) গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক এএফএম সায়েদ ইনকিলাবকে জানান, গত এক মাসে সাভার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এক হাজারেরও বেশি ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে শতাধিক মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীকে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজাও দেয়া হয়েছে। এছাড়া বুধবার দুপুরে সাভারের ভাকুর্তা এলাকা থেকে ১০১ পিচ ইয়াবাসহ রতন নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, মাদক উদ্ধার অভিযার অব্যাহত থাকবে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সাভারে একসময় ফেন্সিডিলের ব্যবসা রমারমা থাকলেও সহজে বহনযোগ্য হওয়ায় অন্যান্য মাদকের চেয়ে ইয়াবার কদর এখন সবচেয়ে বেশি। এসব ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সেবীদের শতকরা ৩০ ভাগ নারী। বহন করতে সুবিধা হয় বলে মাদকসেবীদের কাছে ইয়াবা এখন জনপ্রিয়। তারা নানা কৌশলে কখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে আবার কখনও তাদের যোগসাযোশে এসব ব্যবসা চলাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে মাদক সেবীরাই এখন বাড়তি আয়ের আশায় ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। যাদের অনেকেই পুলিশের সোর্স হিসেবেই পরিচিত। তবে মাদক উদ্ধারে র্যাব পুলিশে সাফল্য উল্লেখযোগ্য। মাদক ব্যবসায়ীদের দাবি, থানা পুলিশের কিছু কর্মকর্তা তাদের কাছ থেকে মাসোহারা নেন তাই তাদের এ ব্যবসা চালাতে খুব একটা সমস্যা হয় না। আর এ সকল মাদক ব্যবসা এখন সাভারে ওপেন সিক্রেট। আবার ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে পুলিশ ২/১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করলেও রাতের আধারে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ারও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে এখন বেপরোয়া মাদক ব্যবসায়ীরা। একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছে, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট কোন স্থান না থাকলেও তারা সবসময় সক্রিয়। এ ব্যবসা মুঠফোনের মাধ্যমেই বেশি চলে। সাভারের সাধাপুর, চাকুলিয়া, গান্ধারিয়া, কাউন্দিায়া, পৌর এলাকার দক্ষিণ দড়িয়াপুর, কাতলাপুর, আশুলিয়া, শিমুলিয়া ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ী, জামগড়া, জামসিং, চাঁপাইন, রাজাশন, বিরুলিয়া, মজিদপুরে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে ইয়াবা সেবী ও ব্যবসায়ীর আনাগোনা। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানাগেছে, সাধাপুরের জালাল হাওলাদার, চুন্নু খান, শাহীনুর, ওহাব, মাসুম হাওলাদার, কামাল, ফরিদ আল রাজী, গোয়াইলবাড়ির হারিজ, আলী, সাত্তার, কাউন্দিয়ার রুবেল, আলতাব, বুড়ির টেকের ফারুক, পাঁচকানি এলাকার ইমরান, রনি, ঘাষিরদিয়া এলাকার কাজিমুদ্দিন, মাঝিরদিয়া এলাকায় ইদুসহ আরো অনেকেই এ মরণ নেশা ইায়াবা ব্যবসার সাথে যুক্ত রয়েছে। তারা খুচরা ও পাইকারী ‘বাবা’ (ইয়াবা) বিক্রি করছে এমন অভিযোগ রয়েছে। এ মরণ নেশার রয়েছে একাধিক কোড নম্বর। কোড নম্বর ভেদে বাবা’র দাম নির্ধারণ হচ্ছে। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ডাব্লিউ আর ৪শ’ টাকা, এক্স ওয়াই ৩শ’ ৫০ টাকা, চম্পা ৩৫০ টাকা, ডাব্লিউ আই ৩৫০ টাকা, আর ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়। আবার ভ্রাম্যমাণ মাদক ব্যবসায়ীরা অভিনব কায়দায় শার্টের কলার ও হাতলের ভাঁজে, মানিব্যাগে, জুতার ভেতরে, দিয়াশলাই ও সিগারেটেরে প্যাকেটের ভিতরে রেখে খুচরা ইয়াবা ট্যাবলেট ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছে বলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবছরের ৪জুলাই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বিপিএটিসির সামন থেকে একটি খালি ট্রাক তল্লাশি করে এক লাখ ৭৮ হাজার ২০০ পিচ ইয়াবা উদ্ধার করেছিল র্যাব। তবে এর পর আর এতোবড় চালান সাভার থেকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ প্রসঙ্গে ঢাকা জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মাহবুবুর রহমান জানান, মাদক বন্ধে আমাদের পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।