বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নওগাঁর আত্রাই থানা পুলিশের বিরুদ্ধে একটি পরিবারকে হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সকালে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই পরিবার।
আত্রাই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাকের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাঁর চাচাত ভাই হেলাল খাঁ শাপলা। এ সময় আব্দুর রাজ্জাক, তার ভাই সাজ্জাদ হোসেন ও চাচা আব্দুল গফুর উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, উপজেলার ভবানীপুর বাজারের মুদি ব্যবসায়ী সুশান্ত কুমার ঘোষ গত ৭ মার্চ রাত ৯টার দিকে তাঁর দোকান বন্ধ করে সমস্ত দিনের বেচাকেনার টাকা নিয়ে বাজারের পার্শ্ববর্তী ভবানীপুর গ্রামে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। বাড়ি যাওয়ার পথে বাজারের পাশে কালিদাশ মালাকারের বাড়ির পাশে দুর্বৃত্তরা তাঁর পথ রোধ করে টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে তার চিৎকার শুনে স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে গত ১১ মার্চ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুশান্ত ঘোষ মারা যান। এ ঘটনায় পর দিন নিহত ব্যবসায়ীর ছেলে সুদীপ্ত কুমার ঘোষ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে আত্রাই থানায় মামলা করেন। ওই মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান আত্রাই থানার এসআই হায়দার আলী। ওই দিন রাজ্জাকের বড় ভাই সাজ্জাদ হোসেনকে ফোন করে তাঁর ছেলে সাব্বির হোসেন খাঁকে (২০) নিয়ে থানায় যেতে বলেন। ওই দিন সন্ধ্যায় সাব্বিরকে নিয়ে তার বাবা সাজ্জাদ ও চাচা আব্দুর রাজ্জাক থানায় যান। থানায় গেলে সাব্বিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় থাকতে বলে তার বাবা সাজ্জাদ ও চাচা রাজ্জাককে বাড়ি চলে বলেন। ওই দিন সারারাত সাব্বিরকে থানায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করে পুলিশ। পর দিন সুশান্ত কুমার হত্যা মামলায় আসামি দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাব্বিরকে কোর্টে চালান দেওয়ার সময় লিখিত কাগজে পুলিশ লিখেছে তাঁকে মির্জাপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। অথচ আমি ও আমার বড় ভাই সাব্বিরকে নিজে থানায় গিয়ে পুলিশ হেফাজতে দিয়ে এসেছি। সেই দিনের থানার সিসি টিভির ফুটেজ দেখলেই তা প্রমাণিত হবে। কোর্টে চালান দেওয়ার সময় সাব্বিরকে আমাদেরকে বলেছেন, পুলিশ তাঁকে প্রচন্ড মারধর করে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বলা হয়েছে এবং এই খুনের ঘটনায় পরিবারের অন্য সদস্যদের নাম বলতে বলেছে। অথচ আমার ভাতিজা সাব্বির ও আমাদের পরিবারের কেউ ব্যবসায়ী সুশান্ত কুমার হত্যার ঘটনায় জড়িত নই। আমাদেরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে পুলিশ এই হত্যা মামলার প্রকৃত আসামিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে।’
অভিযোগের বিষয়ে আজ বুধবার বিকেল ৩টার দিকে আত্রাই থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ব্যবসায়ী সুশান্ত কুমার হত্যা মামলায় প্রাথমিক তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণের সাপেক্ষে আমাদের কাছে মনে হয়েছে এ ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন জড়িত রয়েছেন এবং এ জন্যই তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এখানে কাউকে হয়রানি করার উদ্দেশ্য পুলিশের নেই। অভিযুক্ত সাব্বিরকে পূর্ণাঙ্গ তদন্তে নির্দোষ পাওয়া গেলে তাঁকে মামলার চার্জশিট থেকে তাঁর নাম অবশ্যই বাদ যাবে। আর আসামিকে তার পরিবারের লোকজন থানা পুলিশের হেফাজতে দিয়ে গেছেন বলে যে কথা বলা হয়েছে সেটি সঠিক নয়। তাঁকে মির্জাপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।