Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুদকে ‘অনুসন্ধান-বাণিজ্য’

বহু রাঘব বোয়ালকে ছেড়ে দেন ইকবাল মাহমুদ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০২১, ১২:১৬ এএম

বিদায়ের আগে দুর্নীতির বহু রাঘব বোয়ালকে ছেড়ে দেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তাদের দায়মুক্তি আড়াল করতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন কিছু নিরীহ ও দুর্বল ব্যক্তিকে। সব মিলিয়ে শেষ ৫ মাসে তিনি ২ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি (দায়মুক্তি) দেন। তথ্য নির্ভরযোগ্য সূত্রের।

সূত্রটি জানায়, ইকবাল মাহমুদ বিদায় নেয়ার আগে স্বীয় কৃতকর্মের অনেক দালিলিক প্রমাণই যথাসম্ভব ‘নিশ্চিহ্ন’ করে যান। এর পরও এ প্রতিবেদকের হস্তগত হয় বেশকিছু নথি। সে অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই শতাধিক দুর্নীতির অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। সূত্রমতে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগগুলো সত্যিকারার্থে অনুসন্ধান হয়নি। হয়েছে অনুসন্ধান-বাণিজ্য। কথিত ‘নথিভুক্তি’ কিংবা ‘অনুসন্ধান পরিসমাপ্তি’র নেপথ্যে রয়েছে কোটি কোটি টাকার লেনদেন। এ দুর্নীতিকে আড়াল করতেই একদিকে ধামরাই বালিয়া ইউনিয়ন ভ‚মি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত এমএলএসএস মো: দীন ইসলাম ভুইয়াকে (প্রধান কার্যালয়ের নথি নং-০০.০১.২৬০০.৬১৩.০১.০২০.১৯) ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সোনা ও হীরা চোরাচালানের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা সম্পদ অর্জন এবং ভারতে অর্থ পাচারের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকেও দায়মুক্তি (ঢাকার নথি নং-০০.০১.০০০০.৫০২.০১.১৭২.১৭) দেয়া হয়। দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে (ঢাকার নথি নং-০০.০১.০০০০.৫০২.০১.০১৪.১৯) টেন্ডার-জালিয়াতির মাধ্যমে চীনা কোম্পানিকে আড়াইশ’ কোটি টাকার কার্যাদেশ প্রদানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদেরকেও। ‘অভিযোগ পরিসমাপ্তি’ সংক্রান্ত বেশিরভাগ নথিতে স্বাক্ষর করেন মহাপরিচালক (বিশেষ অনু:-তদন্ত-১) সাঈদ মাহবুব খান।

সূত্রমতে, ‘ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘সফার্স’র মালিক দিলীপ কুমার আগরওয়ালাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সোনা এবং হীরা চোরাচালানের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকিসহ শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল। এটি ‘নথিভুক্ত’ করা হয় ২৩ নভেম্বর। এটি স্বাক্ষর করেন মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান। কয়েকবার কর্মকর্তা পরিবর্তনের পর উপ-পরিচালক মোশাররফ হোসাইন মৃধার নেতৃত্বে একটি টিম অভিযোগটি অনুসন্ধান করে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (এফএফডি) ও সেলস ডাটা কন্ট্রোলারসহ (এসডিসি) ফিসক্যাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএফডিএমএস) কেনার দরপত্রে অভিজ্ঞতাহীন চীনা কোম্পানি এসজেডজেডটিকে ২৪৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকার কার্যাদেশ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ ছিল প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এর সঙ্গে ভ্যাট অনলাইন প্রজেক্টের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর শামীম আরা বেগম, ডেপুটি কমিশনার মো. খায়রুল আলম ও ডেপুটি কমিশনার রাবেয়া খাতুন, এনবিআরের সদস্য ও সিস্টেম ম্যানেজার মো. শফিকুর রহমান, ভ্যাট অনলাইনের প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুশফিকুর রহমান, আইসিটি ডিভিশনের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট মো. নবীর উদ্দীন, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সুমন কুমার পাটওয়ারী, বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কমিশনার মোহাম্মদ মুবিনুল কবীর, এনবিআর-এর মূসক ও ভ্যাট নীতি মেম্বার ড. আব্দুল মান্নান শিকদার ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।

দুদকের ‘নথিভুক্তি’র ফরোয়ার্ডিংয়ে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ২৭.০৯.২০২০ ইং তারিখে দাখিলকৃত প্রতিবেদনের আলোকে বর্ণিত অভিযোগ অনুসন্ধানে প্রমাণিত না হওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তা পরিসমাপ্ত করা হয়েছে।’ এভাবেই ‘পরিসমাপ্ত’ (দায়মুক্তি প্রদান) করা হয় বহুল আলোচিত কাস্টমস কমিশনার নূরুল ইসলাম, সিভিল এভিয়েশনের প্রধান প্রকৌশলী শুধেন্দু গোস্বামী, পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লি: ও তৎকালিন পরিচালক ও চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন, বাপেক্স’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (তিতাসের সাবেক এমডি) নওশাদুল ইসলাম, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নূরুল হুদা, এলজিইডি’র সাবেক প্রধান প্রকৌশলী খলিলুর রহমান, হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. কফিলউদ্দিন, প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ‘আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন,’ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে এলজিইডি’র প্রকল্প, দুদক উপ-পরিচালক আব্দুছ ছাত্তার সরকার, জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল কবীর ভুইয়া, সওজ’র নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম আজাদ খান, রাজউকের নির্বাহী প্রকৌশলী ছাইদুর রহমান, একই প্রতিষ্ঠানের মো. সিরাজুল ইসলাম, সওজ’ নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার শরীফ খান, ঢাকা ওয়াসার প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো.নূরুল ইসলাম, সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.হারুনুর রশীদ, ডি বিল্ডার্স অ্যান্ড প্রপার্টিজ লি:’র মালিক মো. সরোয়ার খালেদ, প্রাণি সম্পদ অধিদফতরের প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. বেলাল হোসেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক কাজী মোস্তফা সারোয়ার, কাস্টমস কমিশনার (রাজস্ব) ড. মো.সহিদুল ইসলাম, উপ-প্রধান বন সংরক্ষক মো.শফিউল আলম চৌধুরী, বিডিবিএল’র এমডি মঞ্জুর আহমেদ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, গোয়াইনঘাটের সাব-রেজিস্ট্রার স্বপ্না বেগম, স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা মো.নাছির উদ্দিন, কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ক্যাশিয়ার মো. দেলোয়ার হোসেন, বিয়ানী বাজার উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান, গণপূর্তের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা একেএম মজিবুর রহমান, যুগ্ম-সচিব মো.আবুল হাসনাত হুমায়ুন কবীর, পুলিশ ইন্সপেক্টর মাহবুবুল আলম ভুইয়া, পুলিশ ইন্সপেক্টর সাইদুর রহমান, সিটি ব্যাংকের ডিএমডি মো.ওয়াদুদ, আশুলিয়ার সাব-রেজিস্ট্রার গাজী মো. আবদুল করিম, চট্টগ্রাম সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ডকীপার বাবু ভজন বৈদ্য, বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানি লি:’র ম্যানেজার (নাম নেই), বিআরটিএ, ঢাকার সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি) মো. শামসুল কবির, একই অফিসের মোটরযান পরিদর্শক মো.রিয়াজুল ইসলাম, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো.নজরুল ইসলাম।

পদ্মা অয়েল কোম্পানি লি:সহ কয়েকটি রিফাইনারি কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্রুড অয়েল তেল রিফাইন না করে সরাসরি কনডেনসেট করে বিক্রির মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি এবং আত্মসাতের অভিযোগ ছিল। এটি অনুসন্ধান করেন পরিচালক (বর্তমানে বদলি) কাজী শফিকুল আলম। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল খায়েরকেও অব্যাহতি দেয়া হয় পৃথক অনুসন্ধানের মাধ্যমে। এটি অনুসন্ধান করেন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক। গত ১৯ নভেম্বর অনুসন্ধানটি ‘নথিভুক্তি’র নথিতে স্বাক্ষর করেন মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামী এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের রক্ষণাবেক্ষণ, অবকাঠামো নির্মাণ, ক্রয় এবং তহবিল ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল। এ দুর্নীতির সঙ্গে বেবিচকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এ কে এম মাকসুদুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুল ইসলাম, মো. শহীদুজ্জামান, মো. মোকাব্বর আলী ও উপসহকারী প্রকৌশলী কাজী বায়েজিদ আহমেদ।

অভিযোগ অনুসন্ধান করেন উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। গতবছর ১৯ অক্টোবর সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীসহ সবাইকে দায়মুক্তি দেয়া হয়। ‘নথিভুক্তি’র নথিতে স্বাক্ষর করেন মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান। হানিফ এন্টারপ্রাইজের মালিক কফিলউদ্দিন, তার স্ত্রী রাহেলা বেগম, ছেলে সিরাজুল ইসলাম রিকু, আজহারুল ইসলাম অভির বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ ছিল। এটি অনুসন্ধান করেন উপ-পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক। গত ৩ ডিসেম্বর ‘নথিভুক্তি’র নথিতে স্বাক্ষর করেন সাঈদ মাহবুব খান।

দুদকের উপ-পরিচালক আব্দুছ ছাত্তার সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের একটি অনুসন্ধান ফাইল আটকে রেখে সংশ্লিষ্ট ৫ কর্মকর্তার কাছ থেকে ১ কোটি ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ ছিল। দুদকেরই পরিচালক বেনজীর আহমেদ অভিযোগটির অনুসন্ধান করেন। অব্যাহতিপত্র দেন মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান।

বিলুপ্ত ফার্মার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিস সরাফত, ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এহসান খসরু, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এম.আতিফ খালেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট সাব্বির মোহাম্মদ সায়েম, ব্যাংকটির মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান সারওয়ার জাহান চৌধুরী, সিএফও মো.শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছিল ‘কতিপয় অন্যায় ও অনিয়ম’ সংক্রান্ত অভিযোগ। রেকর্ডপত্রে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রকৃত বিষয়বস্তু গোপন করা হয় নথিতে। কে এটি অনুসন্ধান করেছেন- সেটিও গোপন করা হয়। গত বুধবার ২১ অক্টোবর ‘নথিভুক্তি’র নথিটি স্বাক্ষর করেন তৎকালিন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল। দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ বিধায় তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে দুদক। পরে তাদের দায়মুক্তি দেয়া হয়। দায়মুক্তি লাভকারীদের মধ্যে একজন নিরীহ স্কুল শিক্ষকও নি:খরচায় বেরুতে পারেননি বলে জানায় সূত্রটি।

দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের আইনের ১৯ ও ২০ ধারা অনুসারে দুদক ৯টি বিষয়ে অনুসন্ধান এবং তদন্তের জন্য বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত। বিষয়গুলো হচ্ছে : (১) ভূমি, ভূমি রাজস্ব ও বন্ধক (২) ঘুষ (অর্থ, সম্পদ ও পরিষেবা), (৩) অবৈধ উপায়ে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন (৪) সরকারি নির্মাণ কাজ ও যোগাযোগ খাতের দুর্নীতি (৫) সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বেসরকারি সংস্থার দুর্নীতি (৬) শুল্ক ও রাজস্ব, ব্যবসায়ী/ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের দুর্নীত (৭) সরকারি কেনাকাটা, লাইসেন্স ইস্যু (৮) ক্ষমতার অপব্যবহার, শপথ ভঙ্গ এবং (৯) দুদক আইনের ২০০৪ এর তফসিলে উল্লেখিত সকল অপরাধ। ৬টি অনু-বিভাগের মাধ্যমে দুদক এসব দুর্নীতির অনুসন্ধান ও তদন্ত করে। অনুসন্ধানের আগে সম্পন্ন হয় প্রাথমিক বাছাই।

এ ক্ষেত্রেও অবলম্বন করা হয় ৯টি মানদন্ড। (১) অভিযোগটি কমিশনের তফসিলভুক্ত অপরাধ কি-না। (২) অভিযোগটি সুনির্দিষ্ট ও তথ্যভিত্তিক কি-না। (৩) অপরাধ সংঘটনের সময়কাল। (৪) অভিযুক্ত ব্যক্তির অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা। (৫) অভিযুক্ত ব্যক্তি/ব্যক্তিবর্গের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে কি-না । (৬) অভিযোগের গুরুত্ব ও মাত্রা (৭) অভিযোগের আর্থিক সংশ্লেষের পরিমাণ (৮) অভিযোগকারীর নাম ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে কি-না এবং (৯) সর্বোপরি অভিযোগটি আদালতে প্রমাণযোগ্য কি-না। আর দুদকের এসব ‘বিচার-বিশ্লেষণ’ই বড় দুর্নীতির ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত।

‘অনুসন্ধান-বাণিজ্য’র আওতায় রাঘব বোয়ালদের ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবি)র প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, দুদক সম্পর্কে প্রায়শই অনৈতিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। দুদক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের একাধিক মামলাও বিচারাধীন। সম্প্রতি হাইকোর্ট বলেছেন, সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎকারী পি কে হালদারকে পালিয়ে যেতে দুদকই সহযোগিতা করেছে।
সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলোর কারণে মানুষের কাছে দুদকের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পেয়েছে। যদি আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে দুর্নীতিবাজদের ছেড়ে দেয়া হয়ে থাকে তাহলে বর্তমান কমিশনের উচিত অভিযোগগুলোর পুন:অনুসন্ধান করা। আইনে সেই সুযোগ রয়েছে। দুর্নীতি অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুদক কর্মকর্তারাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন এই আইনজীবী।



 

Show all comments
  • Habib ১৪ মার্চ, ২০২১, ৫:৩৪ এএম says : 0
    Because He had hidden interest...
    Total Reply(0) Reply
  • Yusuf samin ১৪ মার্চ, ২০২১, ৫:৩৫ এএম says : 0
    দুদকের তদন্ত কারীরা নিজেরাই একটি দুর্নীতিবাজ তদন্ত করতে গিয়ে টাকা পয়সা ঘুষ নেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Jaker ali ১৪ মার্চ, ২০২১, ৫:৩৫ এএম says : 0
    সরষের মধ্যে ভূত
    Total Reply(0) Reply
  • নাইম আহ মেদ ১৪ মার্চ, ২০২১, ৫:৩৮ এএম says : 0
    দুদকের দুরনিতির জন্ন্যে আরেকটা কমিশন বানাতে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Amir Hossain ১৪ মার্চ, ২০২১, ৬:৪৬ এএম says : 0
    ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • মেহেদী ১৪ মার্চ, ২০২১, ৬:৪৭ এএম says : 0
    এই সাহসী প্রতিবেদনের জন্য ইনকিলাবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • তরুন সাকা চৌধুরী ১৪ মার্চ, ২০২১, ৬:৪৮ এএম says : 0
    এ সমস্ত দুদক গঠন করে দেশ এবং জাতির কোন উপকারে আসে নাই , বারণ এই দুদুকের পিছনে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা অপচয় হচ্ছে, এসমস্ত কর্মকর্তারা সরকারি দলের লোক এরা কখনো নিরপেক্ষভাবে রাষ্ট্রের হয়ে কাজ করে না।
    Total Reply(0) Reply
  • কে এম শাকীর ১৪ মার্চ, ২০২১, ৬:৪৮ এএম says : 0
    দুদকের অনেকেই দুর্নীতিতে প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত , তার দুর্নীতি দমন করার জন্য আর একটি দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • গাজ ওয়া তুল হিন্দ ১৪ মার্চ, ২০২১, ৬:৪৮ এএম says : 0
    আমি মনে করি দুদক নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত। দুদকের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালানো উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • Mominul+Hoque ১৪ মার্চ, ২০২১, ১০:১২ এএম says : 0
    দেশে কিছু ক্লিন ইমেজের কর্মকর্তা আছে যা আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে দেখতে পাই। কিন্তু তাদেরকে দূর্নীতি দমন কমিশনের দায়িত্ব না দিয়ে সরকার দূর্ণীতিবাজদের দূর্ণীতি দমনের নামে দূর্ণীতি পোষণের দায়িত্ব দিয়ে থাকেন। আর ক্লিন ইমেজের কর্মকর্তাগুলোকে কোন অফিসের পেছনের সারীর অফিসার পর্যায়ে ফেলে রাখেন। উদাহরণ স্বরূপ- ম্যাজিষ্ট্রে সরওয়ার আলম এর মত আরো বিভিন্ন কর্মকর্তারা।
    Total Reply(0) Reply
  • আশরাফ চৌধুরী ১৪ মার্চ, ২০২১, ২:৫৭ পিএম says : 0
    তথ্য বহুল প্রতিবেদনের জন্য ধন্যবাদ। দুদক যে প্রভাবিত হয়ে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পরম যত্ন নিয়ে তদন্ত করে মহৎ সেবা প্রদান করছে সেই বিষয়ে লেখা হয়নি। নতুন চেয়ারম্যান এবং নতুন কমিশনার সাহেবের কাছে প্রত্যাশা এরূপ অনৈতিক মহৎ কাজ যেন সম্পূর্ণ রুপে বন্ধ হয়। দোয়া করি দুদক সকল বিতর্কের উর্দ্ধে উঠে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Mamun ১৪ মার্চ, ২০২১, ৭:১০ পিএম says : 0
    "বেহুলা কখনো বিধবা হয় না এটা বাংলার রীতি"। তাই ইকবাল মাহমুদ বা কোন রাঘব বোয়ালের বিচার ও এই বাংলায় হবেনা। যে যায় লংকায় সেই হয় রাবন। সব সমান।
    Total Reply(0) Reply
  • Mamun ১৪ মার্চ, ২০২১, ৭:১১ পিএম says : 0
    "বেহুলা কখনো বিধবা হয় না এটা বাংলার রীতি"। তাই ইকবাল মাহমুদ বা কোন রাঘব বোয়ালের বিচার ও এই বাংলায় হবেনা। যে যায় লংকায় সেই হয় রাবন। সব সমান।
    Total Reply(0) Reply
  • করিম উল্যা ১৪ মার্চ, ২০২১, ১০:৩৪ পিএম says : 0
    দুদক একটি কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্টান
    Total Reply(0) Reply
  • আব্দুল জব্বার ১৫ মার্চ, ২০২১, ৬:১৪ এএম says : 0
    প্রাক্তন চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদকেও জবাবদিহির আওতায় এনে দেশে-বিদেশে তার সম্পদের অনুসন্ধান করা উচিৎ!!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুদক

২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ