Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মুসলমানদের সাহায্য করা নিউজিল্যান্ডের দায়িত্ব

ক্রাইস্টচার্চ হত্যাকান্ডের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে জাসিন্দা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০২১, ১২:০৫ এএম

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আর্ডার্ন বলেছেন, মুসলিম স¤প্রদায়কে সাহায্য করার ক্ষেত্রে তার দেশের দায়িত্ব আছে। ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে নৃশংস হামলার দুবছর পূর্তি উপলক্ষে এক আবেগঘন বক্তৃতায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। গতকাল শনিবার কঠোর নিরাপত্তায় নিহতদের স্মরণানুষ্ঠানে কয়েকশ’ লোক যোগ দেন।
২০১৯ সালের ১৫ মার্চ শুক্রবার জুমার নামাজের সময় এক খ্রিষ্টান চরমপন্থীর হামলায় অন্তত ৫১ মুসলমান নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন কয়েক ডজন। এ হামলার ঘটনায় মুসলমানদের প্রতি সহানুভ‚তি প্রকাশ করে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন জাসিন্দা। এছাড়া নিউজিল্যান্ডে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনও কঠোর করেন তিনি।
জাসিন্দা বলেন, নারী-পুরুষ-শিশুরা সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন। আমাদের দেশের মুসলমানদের ওপর যে আতঙ্ক নেমে এসেছে, কেবল কথা দিয়ে তা দূর করা সম্ভব হবে না।

তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে একটি একীভ‚ত জাতি গড়ে তুলতে হবে, যাতে আমাদের বৈচিত্র্য নিয়ে গর্ব করা যায় এবং এটাকে এমনভাবে বুকে আগলে রাখবে, যদি তাদের ডাকা হয়, তবে একনিষ্ঠভাবে দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। প্রসঙ্গত, একই ধরনের স্মরণসভার আয়োজন করার কথা ছিল গত বছর। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে তা বাতিল করা হয়।

স্মরণসভায় ছিলেন কিরন মুনীর, যার স্বামী হারুন মোহাম্মদ এ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছিলেন। তিনি সমবেত জনতাকে বলেন, তিনি তার জীবনের ভালোবাসাকে ও তার প্রিয়তমকে হারিয়েছেন। তিনি বলেন, তার স্বামী তাদের দুসন্তানের স্নেহময় বাবা ছিলেন। তিনি সবেমাত্র তার ডক্টরেট ডিগ্রি সম্পন্ন করেছিলেন। তিনি তার সমাবর্তনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। এমন সুন্দর সময়ে তিনি তার হাসিমুখটা শেষবারের জন্য দেখেছিলেন। তিনি আর কখনো তাকে দেখতে পাবেন না।

তিনি আরো বলেন, নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের এ ভয়ঙ্কর দিনটি আবার ফিরে আসবে কিনা তিনি জানেন না। কিন্তু ওই দিনটি তার হৃদয়কে চ‚র্ণ করে দিয়েছে হাজারো অংশে, যেমনটা হৃদয় ভেঙেছে অন্য ৫০টি পরিবারের। আল-নুর মসজিদের ওই হমলায় ৯ বার গুলিবিদ্ধ হবার পরও বেঁচে যাওয়া টেমেল আটাচুকুগো বলেন, ‘এ হত্যাকাÐ হয়েছে বর্ণবাদ ও অজ্ঞতার কারণে। তারা সমস্ত মানবতার ওপর আক্রমণ করেছে।’
হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা কখনো তাদের হৃদয়ের যন্ত্রণা মুছে ফেলতে পারবেন না। তারা আর কখনো স্বাভাবিক মানুষ হতে পারবেন না। সে যা হোক, ভবিষ্যৎ আমাদের হাতে। আমরা এর মধ্য দিয়েই এগিয়ে যাব। আমাদের সকলকে ইতিবাচক হতে হবে,’ বলেন তিনি।

২০১৯ সালের ১৫ মার্চের এ আক্রমণে অস্ট্রেলীয় ব্রেন্টন ট্রান্ট আল-নুর মসজিদে শুক্রবারের জুমার নামাজের সময় ৪৪ ব্যক্তিকে হত্যা করেন। পরে লিনউড মসজিদেও তিনি হামলা চালান। সেখানে তিনি আরো সাত ব্যক্তিকে হত্যা করেন।

গত বছর ব্রেন্টন ট্রান্ট (৩০) অভিযুক্ত হয়েছেন ৫১ জনকে হত্যার জন্য। এছাড়াও তিনি ৪০ জনকে হত্যার চেষ্টা ও একটি সন্ত্রাসবাদের মামলায় অভিযুক্ত হন। তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। দন্ডকালীন সময়ে তাকে জামিনে মুক্তিও দেয়া হবে না। হামলার পর নিউজিল্যান্ড দ্রুততার সাথে আধা স্বয়ংক্রিয় এসব অস্ত্র নিষিদ্ধ করে একটি নতুন আইন পাস করে।

শনিবারের স্মরণসভায় নিহত ৫১ ব্যক্তির নাম পাঠ করা হয়। প্রথম প্রতিরোধ চেষ্টাকারীরা, এমনকি পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়। সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি ও ডেইলি সাবাহ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ