পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে তিস্তা ইস্যুতে কোনো আলোচনাই হবে না। এমনটা সাফ জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শুধু তিস্তাই নয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে বাংলাদেশ-ভারত অমীমাংসিত দ্বিপক্ষীয় কোনো ইস্যুই আলোচনার টেবিলে গড়াবে না বলেও জানালেন পরাষ্ট্রমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদির সফর পুরোটাই হবে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব উদযাপনের।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর নিয়ে প্রত্যাশা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা সবচেয়ে খুশি, উনি আসছেন। তবে যদি আমাকে জিজ্ঞেস করেন সফরে কোনো ধরণের সমঝোতা স্মারক সই হবে কিনা- তবে আমি বলবো অপ্রাসঙ্গিক। আমাদের সাথে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের জন্য আসছেন। এটাই বড় পাওয়া। আর কী চাই?
নরেন্দ্র মোদির সফরে তিস্তা নিয়ে কোনো কথা হবে কিনা জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওগুলো বাদ। আমরা যেটা চাই সেটা হচ্ছে, এই যে একটি আনন্দ উৎসব, আমাদের এই বড় উৎসবে সবাই এসেছে, আমরা তাতেই আনন্দিত। এটাই তো আমাদের বড় পাওয়া, আর কী চান আপনি? আপনাকে কে কাপড় দিল, ভাত দিল ওইটা নিয়ে বেশি চিন্তিত, ওইগুলা আমরা ম্যানেজ করবো। তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি তাদের সমস্যা আছে। আমরা বুঝি, আমরা বোকা নই। আপনিও জানেন কেন হচ্ছে না। আপনিও বোকা নন, তাই এগুলো নিয়ে খামোখা প্রশ্ন করছেন কেন?
মন্ত্রী বলেন, করোনাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর বাংলাদেশে। উনি কোথাও যান নাই, এই কোভিডের পর কোথাও যাননি, প্রথম বিদেশ সফরে তিনি ঢাকায় আসছেন। সব সময় রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান ঢাকায় এসেই শেষ। উনি আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও যাবেন। সাতক্ষীরায় যাবেন, গোপালগঞ্জ যাবেন, ওড়াকান্দিতে যাবেন- চিন্তা করেন! আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী পৃথিবীর বড় গণতান্ত্রিক দেশ, তার সরকারপ্রধান এইসব জায়গায় ঘুরে বেড়াবেন। আমাদের জন্য এটা বিরাট আনন্দের। এরপরে কি চান আপনারা? মন্ত্রী বলেন, ভারতের সাথে আমাদের যতগুলো বড় বড় সমস্যা আলোচনার মাধ্যমেই দূর করেছি। আর যদি আরও কিছু থাকে এগুলো আস্তে আস্তে করবো।
পানির বদলে ধূ ধূ বালিতে ঢাকা তিস্তা। পানি শূন্যতার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে উত্তরের জনপদ আর সেখানকার মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর। পানির অভাবে অনিশ্চয়তায় দেশের সবচেয়ে বড় তিস্তা সেচ প্রকল্পও। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের মধ্যে ১৯৮৩ সাল থেকে দরকষাকষি চললেও, সুরাহা হয়নি আজও।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় বহুল আলোচিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সইয়ের কথা ছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সেই চুক্তি সময়কাল ধরা হয়েছিল ১৫ বছর। চুক্তি অনুযায়ী তিস্তা নদীর পানির ৪২ দশমিক ৫ শতাংশে ভারতের অধিকার ও ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতায় ভেস্তে যায় তিস্তা চুক্তি সাক্ষর।
২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে ঘিরে আশা তৈরি হয় তিস্তা চুক্তি সাক্ষরের। সফরে তিনি বৈঠকে বসেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে। কিন্তু সেবারও বেঁকে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হয়নি তিস্তা চুক্তি। এমনকি ২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঢাকা সফরে এসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিস্তার চুক্তির ব্যাপারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আশ্বাস দিলেও ফল হয় নি।
সবশেষ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যকার অনুষ্ঠিত হওয়া ভার্চুয়াল সম্মেলনে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশকে আশ্বাস দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তাই স্বভাবতই চলতি মাসে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর নিয়ে তিস্তা ইস্যুতে আশার বুক বেধেঁছিল বাংলাদেশ।
তবে গতকাল শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন জানালেন, নরেন্দ্র মোদির সফরে তিস্তা ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনাই হবে না। পাশাপাশি বাকি নদীগুলোর পানি কিংবা সীমান্ত হত্যার মতো দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার অমীমাংসিত ইস্যুগুলোও উঠবে না আলোচনার টেবিলে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফর শুধুই বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে- বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।