পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট সিলেটের রাতারগুল। সেই রাতারগুলের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো স্থানীয় কাপনা নদী। সম্প্রতি এ কাপনা নদীকে জলমহালে তালিকাভূক্ত করে ইজারা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জৈন্তাপুর ভ‚মি অফিস। এ ঘটনায় প্রতিবাদমুখর এখন পরিবেশবাদীরা। তারা আশঙ্কা করছেন এ নদীর ইজারা প্রদান করলে রাতারগুলের বাস্তুসংস্থান ও জীববৈচিত্র্য পড়বে হুমকির মুখে। গত মঙ্গলবার কাপনা নদীকে জলমহালের তালিকা থেকে বাদ দেয়র জন্য সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি পত্র দিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পদক শরীফ জামিল ও সারি নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল হাই আল-হাদী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য, ৭৮ মিটার গড় প্রস্থের সর্পিলাকার কাপনা সিলেটের একটি দীর্ঘ নদী। নদীটি বড়হাওরের কুশিগাঙ্গ থেকে উৎপত্তি লাভ করে পশ্চিম দিকে অতিবাহিত হয়ে স্থানীয় হরিপুর বাজারের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। একপর্যায়ে সিলেট-তামাবিল সড়ক অতিক্রম করে করিচ নদীকে সঙ্গে করে এটি আরও পশ্চিম দিকে অতিবাহিত হয়ে প্রবেশ করেছে রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টে। এই কাপনা নদী ও কৈয়ারখাল হচ্ছে রাতারগুলের বাস্তুসংস্থানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোনভাবে কাপনা নদীর স্বাভাবিকতা নষ্ট হলে সরাসরি এর প্রভাব পড়বে রাতারগুলের জীববৈচিত্রের উপর।
এমন বাস্তবতার পরও গত ১ মার্চ জলমহাল ইজারার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। জৈন্তাপুর ভূমি অফিস থেকে প্রকাশিত এ বিজ্ঞপ্তিতে ২০ একর পর্যন্ত ২৯টি জলমহালের যে তালিকা রয়েছে, তার মধ্যে নাম রয়েছে কাপনা নদীর। কাপনা নদীর উমনপুর হাওর এলাকার ৭.৭০ একর এলাকার ইজারার আবেদন আহবান করা হয়েছে। ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নড়েচড়ে উঠেছেন পরিবেশবাদীরা। তারা মনে করছেন, সোয়াম্প ফরেস্টের অস্তিত্বের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত কাপনা নদী। অথচ বাস্তবতা এড়িয়ে জলমহালের তালিকাভূক্তির মাধ্যমে ইজারা প্রদান করা হচ্ছে এ কাপনা নদীকে। বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলাবন এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রাতারগুলের অবস্থান এ নদীর তীরে। সে কারণে রাতারগুলের জীববৈচিত্রের স্বার্থে দ্রæত সময়ে কাপনা নদীকে জলমহালের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ইজারা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা।
জৈন্তাপুর ভূমি অফিস সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, কাপনা নদী কোন জলমহাল নয় এটি স্বীকৃত নদী। এমনকি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডে নদী হিসেবে তালিকাভূক্ত। হরিপুর বাজারে নদীর দু’পাশে নদীটির রয়েছে পরিচিতিমূলক সাইনবোর্ডও। এরকম একটি স্বীকৃত নদীকে জলমহাল ঘোষণা এবং ইজারা প্রদান কোনভাবেই স্বাভাবিক পন্থায় হওয়ার সুযোগ নেই। ক্ষমতাশালী ব্যক্তিবর্গের সাথে স্থানীয় ভূমি অফিস সংশ্লিষ্ট কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের আতাতে নদীকে জলমহাল বানিয়ে ইজারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সিলেট বনবিভাগের রাতারগুল বিটের বনকর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, কাপনা নদীকে ইজারা প্রদানের তথ্য এখনও তার নজরে আসেনি। তবে এ নদীর সাথে রাতারগুলের সর্ম্পক অবিচ্ছেদ্য। যদিও শুকনা মৌসুমে এ নদীর সাথে রাতালগুল সোয়াম্প ফরেস্টের সংযোগ চ্যানেল শুকিয়ে যায় তবে বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহের অন্যতম মাধ্যমে কাপনা নদী। শীত মৌসুমে পানি প্রবাহ অনেকটা স্বাভাবিক রাখতে কাপনা নদীর সংযোগ পথ খনন জরুরী। তিনি বলেন, ইজারা দিলে আরো সর্বনাশ বাড়বে। প্রকৃতির অমূল্যদান এ সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুলের স্বার্থেই এ নদীকে জলমহালের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে খনন করে স্বাভাবিক প্রকৃতি দেয়া দরকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।