Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গোপনে আসামিদের আত্মসমর্পণ ও জামিন

এনআইডি জালিয়াতি মামলা

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রির্পোটার : | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

কুষ্টিয়া এনআইডি জালিয়াতি মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের গোপনে আত্মসমর্পণ করে জামিন লাভের ঘটনা ঘটেছে। তবে আত্মসমর্পণের বিষয়টি জানতেনই না বলে জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হোসেন। মামলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি জানান, তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে।

মামলার বাদী এমএমএ ওয়াদুদ অভিযোগ করেন, মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তরের পর তদন্তের গতি মন্থর হয়ে যায়। দিন যত গড়াতে থাকে মামলার গতি তত মন্থর হতে থাকে। এখন এমন একটা অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে এতো বড় আলোচিত একটি মামলা অথচ দায়সারা তদন্তের মাধ্যমে মূল অভিযুক্তদের বাঁচাতে মামলাটির গতি থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাদী আরো দাবি করেন, এই জালিয়াতির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আসাদুর রহমান বাবু ও রাজু আহম্মেদ এবং তাদের পিছনে থেকে যারা বুদ্ধি পরামর্শ দিয়েছে তাদেরকে বাঁচানোর জন্য এখন চেষ্টা করা হচ্ছে। আসাদুর রহমান বাবু জামিন নিয়ে এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাজু গত মাসের ১৮ তারিখ আত্মসমর্পণ করেছে এবং জামিনের জন্য আদালতে আবেদন করেছে। রাজু গত মাসের ১৮ তারিখ আত্মসমর্পণ করলেও বিষয়টি জানতেনই না মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হোসেন। এতেই প্রমান হয় মামলাটিকে গুরুত্বহীন করতে সব ধরনের প্রভাব কাজে লাগানো হচ্ছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে এনআইডি জালিয়াতির ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় নির্বাচন কমিশনের এক উপ-সচিবসহ ৫ কর্মকর্তা-কর্মচারির বিরুদ্ধে মামলা করেছে করেছেন কুষ্টিয়ার সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। এ মামলার বর্তমান অবস্থা ও আসামিদের জামিন বিষয়ে কথা হয় মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা আবুল হোসেনের সাথে। তিনি বলছেন, রাজু আহম্মেদের আত্মসমর্পণের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না।
আর আসাদুর রহমান বাবু হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন। মামলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি জানান, তদন্ত কাজ চলমান।
এই মামলায় আসামিদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যেসব ব্যক্তির নাম এসেছে তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির এই কর্মকর্তা অনেকটা নিরুত্তর দেওয়ার ন্যায় বলেন তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা চলছে। এই মামলার দৃশ্যমান কোন সফলতা বা অগ্রগতির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি তিনি।
এদিকে জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে এতোবড় প্রতারণার ঘটনা সামনে আসার পর যখন সারাদেশে তোলপাড় চলছে তখন এই মামলার অগ্রগতি নিয়ে সন্দিহান মামলার বাদী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই জালিয়াতির সাথে জড়িতদের বিষয়ে কুষ্টিয়াবাসী পরিষ্কার বুঝতে পেরেছেন অথচ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের লোকজনের নিরবতা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। এই প্রভাবশালী মহলের সংশ্লিষ্টতার কারণে মামলাটির ধীরগতি বা মামলাটিকে ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও দাবি সচেতন মহলের।
এর আগে শত কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি দখল ও বিক্রি করে দেয়ার সংবাদ প্রকাশের সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় ১৮ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর বেশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুইজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। জমি ক্রয় করতে বিনিয়োগকারী শহরের বড়বাজারের ব্যবসায়ী বেঙ্গল হার্ডওয়্যারের মালিক মহিবুল ইসলাম তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পরিষ্কার করেন এই ঘটনার সাথে কারা কিভাবে জড়িত। এই ব্যবসায়ী বলেছিলেন, সাবেক মজমপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর আসাদুর রহমান বাবু ও রাজু আহম্মেদ এর সহযোগিতায় তিনি মজমপুর এলাকায় এমএমএ ওয়াদুদের ঐ জমিটি ৭৭ লাখ টাকায় কয় করতে সম্মত হন। ১০ কোটি টাকা মূল্যের এই সম্পত্তি এতো কম দামে ক্রয় করার পর কোন জটিলতা হলে সেগুলো সামলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয় এই ব্যবসায়ীকে।



 

Show all comments
  • Humayun ১১ মার্চ, ২০২১, ২:৫৪ এএম says : 0
    টাকা হলে ঘুষখোর কুজন্মা নর্দমার পোকা বিচারকদের কেনা যায়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জালিয়াতি-মামলা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ