বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
বাংলা ভাষাভাষী আলেম সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ সূচনা লগ্ন হতে আরবি, ফার্সি, উর্দু এবং ইংরেজি প্রভৃতি বিদেশি ভাষা হতে ইসলাম সম্পর্কীয় নানা বিষয়ের বঙ্গানুবাদ প্রকাশ করে বাংলা সাহিত্যের শ্রী বৃদ্ধি ও তাকে সমৃদ্ধশালী করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাপূর্বকাল পর্যন্ত যারা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন তারা সবাই ছিলেন অবাঙালী। যারা এখন বেঁচে নেই তাদের নামের তালিকা সুদীর্ঘ এবং মূল লেখক রচয়িতাদের সংখ্যাও বিরাট। কোরআন, হাদীস, ফেকা, ইতিহাস, কাব্য, সাহিত্য প্রভৃতিসহ ইসলামের রকমারি বিষয়ে বঙ্গানুবাদের ধারা তখন থেকে এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। বহু গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থের একাধিক অনুবাদও প্রকাশিত হয়েছে, কাহিনী গ্রন্থাবলির বঙ্গানুবাদ হয়েছে ব্যাপক। মুসলিম বিজ্ঞানী, মণীষীদের জীবনচরিত, মাশায়েখ-উলামা এবং আওলিয়া-সাধক দরবেশদের জীবনকাহিনী ছাড়াও অনেকের রচিত গ্রন্থাবলীর বাংলা তর্জমাও প্রকাশিত হয়েছে। অধিকাংশ অনুদিত গ্রন্থ-পুস্তকের অনুবাদক এ দেশের ইসলামী চিন্তাবিদ এবং বুদ্ধিজীবী উলামা এবং মাশায়েখ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
বাংলা অনুবাদ ও পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে যে সকল মাশায়েখ-উলামা সুদূরপ্রসারী অবদান রেখেছেন এবং বর্তমানেও অবদান রেখে চলছেন, তাদের মধ্যে অনেকের নাম বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সংগঠন-সংস্থার ভূমিকাও রয়েছে। বর্ণিত ক্ষেত্রগুলোর নাম উল্লেখ করলে নিবন্ধের কলেবর বৃদ্ধি হওয়ার আশংকায় তা থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে।
বাংলায় মৌলিক ইসলামী সাহিত্য : বাংলা ভাষায় অনুবাদ সাহিত্যের ন্যায় ইসলামের নানা বিষয়ে এ যাবত রচিত-প্রকাশিত পুস্তক-গ্রন্থাবলির সংখ্যা বিপুল। কেবল বাংলা একাডেমি ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত বিস্ময়কর গ্রন্থ সমাহার ছাড়াও দেশের প্রসিদ্ধ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানগুলো কর্তৃক প্রকাশিত ইসলামের মৌলিক গ্রন্থাবলির সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া গেলে আন্দাজ করা কঠিন হবে না যে, বাংলা ভাষায় ইসলামী গ্রন্থরাজি তথা ইসলামী সাহিত্য বিস্ময়করভাবে সমৃদ্ধ। ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশিত ‘ইসলামী বিশ্বকোষ’বহু খন্ডে বিভক্ত। এভাবে হিসাব মূল্যায়ণ করা হলে বাংলায় ইসলামী সাহিত্যে আলেম সমাজের ভূমিকা-অবদান অনন্য-অসাধারণ।
বাংলা সাংবাদিকতায় ইসলামী প্রভাব : বাংলা ভাষায় সাংবাদিকতার ইতিহাস তালাশ করতে গেলে এ ক্ষেত্রে ইসলামী রচনাবলি প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম রূপে সংবাদপত্র, সাময়িকী ইত্যাদি চোখে পড়বে। বাংলা ভাষায় ঐতিহ্যমন্ডিত এ প্রচার মাধ্যমের আশ্রয়ে যে মুসলিম সাংবাদিকতার জন্ম, তারই ধারাবাহিকতায় যুগে যুগে তৎকালীন বঙ্গদেশ হতে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পর্যন্ত অসংখ্য-অগণিত দৈনিক, সাপ্তাহিক, অর্ধ সাপ্তাহিক, মাসিক এবং সাময়িকী ম্যাগাজিন ইত্যাদি এবং মাদ্রাসা শিক্ষা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হতে নানা প্রকারের স্মরণিকা, মুখপত্র, রিপোর্ট, প্রতিবেদন প্রভৃতির সম্পাদনা, রচনা, প্রকাশণায় আলেম সমাজের সিংহভাগ ইসলামী সাহিত্যের ধারক বাহক।
আজকের বাংলাদেশে রাজধানী ঢাকা হতে প্রকাশিত দৈনিক ইনকিলাবসহ বিভিন্ন বাংলা দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ইত্যাদি সাময়িকীর লেখকদের মধ্যে আলেম সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ কর্মরত। অনুরূপভাবে সমগ্র বাংলাদেশের অবস্থা। এই সংক্ষিপ্ত আভাস-ইঙ্গিতের কিছুটা বিচার বিশ্লেষণ করলে এ দেশে বাংলা ভাষায় সাংবাদিকতায় ইসলামী প্রভাবের উজ্জ্বল সঠিক চিত্র ফুটে উঠবে।
সংবাদপত্র, সাময়িকীর ন্যায় অন্যান্য আধুনিক প্রচার মাধ্যমেগুলোতে আলেম সমাজের পদচারণা লক্ষ্য করার মতো, যারা কেবল ইসলামের ইসলামী আদর্শ-শিক্ষার প্রচার প্রসারে আত্মনিয়োগ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।