বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
তিন শিক্ষকের বরখাস্তকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের পুণরায় স্বপদে বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে। এদিকে উচ্চ আদালত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ওই তিন শিক্ষকের চাকরিজীবনের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, চাকরিচ্যুতির পর আদালত স্থিতাদেশ জারি করেছেন। এর অর্থ হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের যে চাকরিচ্যুত করেছে, সেটি বলবৎ রয়েছে। একারণে ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের বেতন দেয়া হয়নি।
সূত্র জানায়, পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘উসকানি’ দেয়ার অভিযোগ এনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজলকে বরখাস্ত, একই ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলম এবং ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরীকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২১২তম সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন ওই তিন শিক্ষক। সূত্র জানিয়েছে, ৯ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানি শেষে আদালত ওই তিন শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি চালিয়ে যেতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি কেন তাঁদের চাকরিচ্যুতির আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন। বরখাস্তকৃত বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজল বলেন, আদালতের নির্দেশনার পর তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন শিটে তাঁদের স্বাক্ষর করতে দেয়া হয়নি। এ কারণে তাঁরা আদালতের নির্দেশনার কথা জানিয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু মাস শেষে দেখতে পেয়েছেন, তাঁদের ব্যাংক হিসাবে বেতন যায়নি। রেজিস্ট্রার মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, তাঁদের বেতন দেয়া হবে না।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন সংক্রান্ত সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হয় অর্থ ও হিসাব বিভাগের পরিচালকের দফতর থেকে। জানতে চাইলে ওই দফতরের পরিচালক শেখ মোস্তাক আলী বলেন, ওই তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা ও তাঁদের সব ধরনের আর্থিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার জন্য রেজিস্ট্রারের দফতর থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এ কারণে ওই তিন শিক্ষককে বেতন দেয়া হয়নি। তবে অন্য সবাই মাসের শেষ দিনে বেতন পেয়েছেন।
এ বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, ওই তিন শিক্ষক আদালত থেকে স্থিতাদেশ নিয়ে এসেছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের প্যানেল আইনজীবীরা বলছেন যে, ওই স্থিতাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁদের যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, সেটির স্থিতাদেশ।
অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি বলবৎ আছে। তবে ওই শূন্য পদে আদালতের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো শিক্ষক নেয়া যাবে না।
তিন শিক্ষকের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশনার ভুল ব্যাখ্যা করছেন। আদালত শুনানির সময় স্পষ্ট করেই বলেছেন, যেহেতু ওই তিন শিক্ষক তখনো দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি, তাই তাঁদের নতুন করে দায়িত্ব নেয়ার কিছু নেই। তাঁরা আগের মতোই স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন। তাঁদের বেতন না দেয়া হলে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা হবে।
এদিকে তিন শিক্ষককে স্বপদে বহালের দাবিতে গত বুধবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেছে বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি শিক্ষকদের স্বপদে বহাল না করে, তবে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আজ শুক্রবার তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।