পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সিনিয়র সচিব হিসেবে অবসরে যাওয়া মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানের কমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জহুরুল হককে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন-২০০৪ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট তাদের এ দু’টি পদে নিয়োগ দেন। এ বিষয়ে গতকাল বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ৫ নং আইন) এর ৬(১) ধারার বিধান মতে নিম্ন উল্লিখিত ব্যক্তিগণকে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার নিয়োগ করা হলো : (১) জনাব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, সাবেক সিনিয়র সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয় এবং (২) জনাব মো. জহুরুল হক, সাবেক চেয়ারম্যান, বিটিআরসি, ঢাকা।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ৫(১) ধারার বিধান মতে, জনাব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, সাবেক সিনিয়র সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনকে কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হলো। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ১৩ ধারার বিধানমতে কমিশনের মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন আবদুল্লাহর বেতন, ভাতা, অন্যান্য সুবিধা ও পদমর্যাদা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারকের এবং কমিশনার মো. জহুরুল হকের বেতন, ভাতা, অন্যান্য সুবিধা ও পদমর্যাদা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের সমরূপ নির্ধারণ করা হলো। জনস্বার্থে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
প্রসঙ্গত: নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ দুদকের বর্তমান চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের স্থলাভিষিক্ত হবেন। মো. জহুরুল হক স্থলাভিষিক্ত হবেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলামের। অপর কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক পরে যোগদান করায় পদটি এখনই শূন্য হচ্ছে না। আগামী ৯ মার্চ দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এবং এএফএম আমিনুল ইসলামের শেষ কর্মদিবস। পদ দু’টি পূরণের লক্ষ্যে দুদক আইন অনুযায়ী ৫ সদস্যের ‘বাছাই কমিটি’ নিয়োগপ্রাপ্তদের নাম প্রস্তাব করে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ছিলেন বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান।
দুদক চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়ার আগ পর্যন্ত মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)র’ দশম ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ পদে তিনি ৩ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করে তাকে দুদকে যোগদান করতে হবে।
নব নিযুক্ত দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ টানা ৩৫ বছর সিভিল সার্ভিসে কর্মরত ছিলেন। ১৯৮৩ সালে জনপ্রশাসনে যোগদান করেন। ২০১৮ সালের আগস্টে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সিনিয়র সচিব হিসেবে অবসরে যান। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন। ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার হিসেবেও কর্মরত ছিলেন। এর বাইরে তিনি সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৫৯ সালে কুমিল্লায় জন্ম তার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যারয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১৭ সালে তিনি স্কাউটস কর্তৃক ‘রুপালি ইলিশ’ পদকে ভ‚ষিত হন। কৃষি মন্ত্রণালয়ে থাকাকালে মন্ত্রণালয়ের ‘অনার্ড বোর্ড’ থেকে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর নাম মুছে দেয়ার ঘোষণা দিয়ে আলোচিত হন।
অন্যদিকে মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হক ২০২০ সালের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ৩০ আগস্ট বিটিআরসির কমিশনার হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ (সিনিয়র জেলা জজ) হিসেবে অবসরে যান। মো. জহুরুল হক ১৯৫৫ সালের ৫ ডিসেম্বর জামালপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে জেলার মাদারগঞ্জ পলিশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৭৩ সালে জামালপুর সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। পরে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮০ সালে অনার্স এবং ১৯৮১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৩ সালে সহকারি জজ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মজীবনে তিনি সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা, পিলখানা হত্যা মামলা, হলমার্ক এবং ডেসটিনি মামলার বিচারক ছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের পিতা। স্ত্রী ঢাকা কলেজে মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।