Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেপরোয়াভাবে বাড়ছে প্রাণহানি সড়কে প্রতিদিন নিহত ১৮ জন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে প্রতিদিন গড়ে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ২৪ জন করে। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক পরিসংখ্যানে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
গতকাল সংগঠনটি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে ৪০৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫১৭ জন এবং আহত হয়েছেন ৬৫৯ জন। নিহতের মধ্যে ৯৭ জন নারী ও ৬৮ শিশু। একই সময়ে ৬টি নৌ দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত এবং ৫৫ জন আহত হয়েছেন। আর রেলপথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৪ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বেপরোয়াভাবে বাড়ছে। গেল জানুয়ারি মাসে ৪২৭টি দুর্ঘটনায় ৪৮৪ জন নিহত হয়েছিলেন। গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছিলেন ১৫ দশমিক ৬১ জন। আর ফেব্রুয়ারিতে প্রতিদিন নিহত হয়েছেন গড়ে ১৮ দশমিক ৪৬ জন। ফেব্রুয়ারিতে প্রাণহানি বেড়েছে ১৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। এছাড়া ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ৬৮১টি যানবাহন। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে মোটরসাইকেল, ১৬৩টি। এ ছাড়া ১২১টি ট্রাক, ৭৯টি বাস, ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও অটোভ্যান ১৩৬টি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাবে, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৭১ জন। তাদের মধ্যে ১২৭ জন পথচারী। আর যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৭৬ জন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগের বয়স ১৩ থেকে ৪০ বছর। সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে তরুণদের অজ্ঞতা, অবহেলা এবং ট্রাফিক আইনের প্রয়োগহীনতা এর প্রধান কারণ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
মোটরসাইকেলের নিবন্ধন ফি কমানো এবং সিসি বা অশ্বশক্তির সীমা উন্মুক্ত করার সরকারি সিদ্ধান্ত মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বৃদ্ধি করবে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বিষয়টি সরকারকে ভেবে দেখতে আহ্বান জানানো হয়।

দুর্ঘটনার সময় ও স্থান পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সকালে ও বিকেলে সড়কে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটে ভোরে। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এ বিভাগে ১০১টি দুর্ঘটনায় ১১৩ নিহত হয়েছেন। আর সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে। এ বিভাগে ২১টি দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত হয়েছেন।
জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ২৯টি দুর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুর জেলায়, ২টি দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত হয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে শিক্ষক ১৮ জন, ৮ পুলিশের সদস্য এবং বিভিন্ন পর্যায়ের ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৮৩ শিক্ষার্থী রয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, তরুণদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতিও দুর্ঘটনার কারণ। সড়ক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ১০টি সুপারিশ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এগুলোর অন্যতম হলো ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়ানো, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, মহাসড়কে পার্শ্বরাস্তা (সার্ভিস লেন) তৈরি করা, সড়কে ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সড়ক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ