বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ময়মনসিংহে সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের ২০২০-২১ অর্থ বছরের অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পে কাগজেপত্রে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া মাস্টাররোল তৈরি করে শ্রমিকদের কোটি কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। তবে এসব লুটপাট বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের তদারকি কর্মকর্তা ও প্রকল্প সভাপতিগণ।
কর্মসৃজন প্রকল্পের তদারকির দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ময়মনসিংহ জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন জানান, অভিযোগ বিষয়ে শুনেছি। তবে জেলা প্রশাসকের অনুমতি পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ উঠেছে, মফস্বলের কর্মহীন প্রান্তিক শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকার ৪০ দিনের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্প শুরু করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তারা শ্রমিকের বদলে ভেকু মেশিনে নামমাত্র কাজ করিয়ে কোটি কোটি টাকা হরিলুট করছেন। ফলে সরকারের দেয়া অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ময়মনসিংহ জেলার প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগে শ্রমিক তালিকা তৈরির নির্দেশনা রয়েছে। পরে ওই তালিকা যাচাই-বাঁছাই করে চ‚ড়ান্ত হলে কাজ শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইব সাইট এবং সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের বোর্ডে প্রকল্পের নাম ও শ্রমিক তালিকা টানানোর বিধান রয়েছে। কিন্তু জেলার ১৩টি উপজেলার ১৪৭টি ইউনিয়নের কোন উপজেলা বা ইউনিয়নে এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। সরকার এ প্রকল্পের লুটপাট ঠেকানোর জন্য বেশ কয়েকটি সরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতিজন শ্রমিকের বিপরিতে ব্যাংক একাউন্টে টাকা উত্তোলনের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ও জনপ্রতিনিধিরা এসব নিয়ম না মেনে সিন্ডিকেট গড়ে তোলে ভুয়া শ্রমিক তালিকা মাস্টাররোলে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভাগ-বাটোয়ার আংশীদার বানিয়ে শ্রমিকদের অধিকার বঞ্চিত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
ভেকু মেশিনের কাজের সত্যতা স্বীকার করেছেন নান্দাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদ উদ্দিন। তিনি জানান, ভেকু মেশিনের কাজের খবর পেয়ে কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। প্রকল্পে ভেকু মেশিনের সত্যতা স্বীকার করেছেন তারাকান্দার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাকারিয়া। তিনি বলেন, লেবার কত টাকা পেয়েছে বা না পেয়েছে, সেটা ব্যাংকের বিষয়। আমাদের কয়েকটা প্রকল্পে ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করিয়েছি। একই চিত্র জেলার গৌরীপুর উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে। একই ভাবে ভেকু মেশিনে কাজ হয়েছে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার বাক্তা, নাওগাঁও, পুটিজানা, এনায়েরপুর, কুশমাইলসহ সবকটি ইউনিয়নে।
অপরদিকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরনিলক্ষীয়া ইউনিয়নে প্রকল্পে ৫৯৪ জন শ্রমিক তালিকাতে দেখালেও সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো ইউনিয়নে কাজ করেছেন মাত্র ২২৭ জন শ্রমিক। প্রকল্পের কার্যদিবস শেষ হলেও উপজেলার কোথাও প্রকল্পের কোন সাইনবোর্ড নেই। প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করতেই কোথাও সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, শ্রমিকদের কেউ সুস্পষ্ট অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তবে একজন ব্যাক্তি আমাকে এ বিষয়ে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। এ ধরনের অনিয়মে কোন ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।