Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নদী খননে অনিয়ম-লুটপাট

বড়াইগ্রাম (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

নাটোরের বড়াইগ্রামের পঁচা বড়াল নদী খননে অনিয়ম-লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। তাদের অভিযোগ, বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে শিডিউল না মেনে নামকাওয়াস্তে চলছে খনন কাজ। এ অভিযোগে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী নদী খনন কাজ বন্ধ করে দেয়ার একদিন পর পুনরায় গায়ের জোরে খনন কাজ করছে ঠিকাদারের লোকজন। এতে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, মেরিগাছা বাজার হতে চিকনাই নদী পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ পঁচা বড়াল নদী খনন কাজ চলছে। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) ‘ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে নাটোর জেলায় সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পে’র আওতায় সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয়ে এ খনন কাজ চলছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস এমপি আনুষ্ঠানিক ভাবে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ১২ কিলোমিটারের মধ্যে প্রকল্পের শুরুতে মেরিগাছা বাজার এলাকায় ৭শ’ মিটার নদী খননের দায়িত্ব পায় নাটোরের এম এ কনস্ট্রাকশন। ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রায় অর্ধেক কাজ তাড়াহুড়া করে শেষ করা হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শামসুজ্জোহাসহ স্থানীয় লোকজন অনিয়মের অভিযোগে খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। নদীর একাধিক স্থানে খনন কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও শুরুর সাতশ’ মিটারে বেশি অনিয়ম হচ্ছে বলেই অভিযোগ তাদের। তবে খনন কাজ বন্ধের একদিনের মাথায় ঠিকাদারের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে পুনরায় খনন কাজ শুরু করায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিডিউল অনুযায়ী সমতল থেকে আট ফুট গভীরে নদী খনন করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। নদীর পানি শুকিয়ে বা সেচ দিয়ে পানি অপসারণ করে খনন করার কথা থাকলেও তা না করে পানি রেখেই খনন করা হচ্ছে, এতে এক্সকেভেটর দিয়ে নদীর তলদেশে পানির নীচ থেকে কিছু কাদামাটি সরানো হচ্ছে মাত্র, প্রকৃত খনন কাজ হচ্ছে না। পুরাতন পাড়ি ঢালু (স্লোপ) করে না কেটে নদীর তলদেশ থেকে তোলা কাদামাটি দিয়ে স্লোপ করা হয়েছে। এতে কাজ শেষ না হতেই একাধিক স্থানে স্লোপিং ভেঙে নদীতেই পড়ে গেছে। দুই তীরের মাটি কেটে নদীর পাড়ের উপরেই ফেলা হচ্ছে, যা সামান্য বৃষ্টি হলেই ধ্বসে নদীতে নেমে যাবে। এতে নদী পুনরায় নদী ভরাট হয়ে খননের প্রকৃত প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে বলে দাবী ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার পরিচয় দানকারী খোকন হোসেন জানান, শিডিউল অনুযায়ী কাজ হচ্ছে, তবে কোথাও কোথাও কাজের তারতম্য হতে পারে।
এ সময় তিনি সংবাদকর্মীদেরকে এ ব্যাপারে সংবাদ না লেখার অনুরোধ করে তাদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শামসুজ্জোহা বলেন, নদী খননে শিডিউল মানা হচ্ছে না। যেভাবে কাজ করা হচ্ছে তা মান সম্মত নয়। এছাড়া নদীর পাড়েই মাটি ফেলায় বৃষ্টি হলে তা ধসে গিয়ে পুনরায় নদী ভরাট হয়ে যাবে।
প্রকল্পের তদারকির দায়িত্বে থাকা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বড়াইগ্রাম অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল বাশার বলেন, পানি শুকিয়ে বা অপসারণ করে নদী খনন করার কথা। এছাড়া স্লোপিং ভেঙে যাওয়া ও পাড়ে রাখা মাটি ধসে পুনরায় নদীতে পড়ার বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ