বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় নিহত সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবার।
গতকাল সকালে নোয়াখালী জেলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের বড় ভাই নূর উদ্দিন। তিনি বলেন, নিহত মুজাক্কির সাংবাদিকতা পেশার পাশাপাশি সামাজিক ও মানবিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন। অসুস্থ্য ও মুমূর্ষু রোগীদের পাশে দাঁড়াতেন। তিনি রোগীদের প্রয়োজনে এ নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত ২৬ জনকে দিয়েছেন।
নূর উদ্দিন বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত মুজাক্কির বাঁচার জন্য বার বার আকুতি জানালেও উপস্থিত স্থানীয় লোকজন, জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ সদস্যরা তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে নি। গুলিবিদ্ধ হয়ে দীর্ঘসময় বাজারে পড়ে থাকার কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মুজাক্কির মৃত্যুবরণ করেন বলে জানিয়েছেন ঢামকের চিকিৎসক।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের বাবা মাওলানা নূরুল হুদা মো. নোয়াব আলী মাস্টার বলেন, ওইদিন ঘটনাস্থলে তিনি বা তার পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তাই কারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তারা দেখিনি। তবে যারা এ হত্যার সাথে জড়িত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের দাবি করেন। খুনিদের ফাঁসির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান তিনি। নিহতের মা মমতাজ বেগম বলেন, আমার ছোট ছেলে মারা যাওয়ার পর আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে গত বুধবার একটি ভিডিও দেখেছিলাম। ভিডিওতে দেখা যায় গত কয়েক মাস আগে একজন ব্যক্তি তাকে অকথ্যভাষায় গালাগালি করে মারধর করে। ওই হামলাকারী তাকে বলে তোর কোন বাবা আছে? আমি ওই হামলাকারীকে গ্রেফতার করার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করছি।
এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন নিহতের ভগ্নিপতি আবদুস সাত্তার।
আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর আগেও একবার শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির। গত ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বরের মুজাক্কিরকে নির্যাতনের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এখন ভাইরল। ওই ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, হাসান ইমাম রাসেল নামের কোম্পানীগঞ্জের এক ব্যক্তি বসুরহাট বাজারের একটি ইলেট্রিক দোকানে বসিয়ে রেখে সাংবাদিক মুজাক্কিরকে মারধর করে। এসময় মুজাক্কিরকে মারধর করতে করতে অকথ্যভাষায় গালমন্ধ করে হাসান ইমাম রাসেল।
এবিষয়ে জানতে হাসান ইমাম রাসেলের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি লাইনটি কেটে দেন। তবে তার ব্যবহৃত ফেসবুক আইডিতে তিনি লিখেন, মুজাক্কির আমাদের সাথে একসাথে কাজ করতো, তখন যে মাঝে মাঝে অসতো, নোয়াখালীতে পড়াশোনা করতো, কারো প্ররোচনায় পড়ে সে আমার ফেসবুকে ফেক আইডি থেকে বাজে কমেন্ট করতো, তখন রনির দোকানে তাকে জিজ্ঞেস করলাম কেনো এসব করছো। তিনি দাবি করেন মুজাক্কিরের মৃত্যুর ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি বলেন, মুজাক্কিরকে নির্যাতনের ভিডিওটি ইতোমধ্যে আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। ভিডিওটিতে দেখা গেছে উপজেলার কথিত সাংবাদিক রাসেল (হাসান ইমাম রাসেল) মুজাক্কিরকে গালমন্ধ ও মারধর করছে। ওই দোকানটা বসুরহাট বাজারের অন্য একজন সাংবাদিকের। ওই সাংবাদিক আমাদের জানিয়েছেন মুজাক্কিরকে রাসেল মারধর করতে দেখে তিনি এসে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছিলেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভিডিওটি দেখছেন। অপরাধী যেই হোকনা কেন তাকে ছাড় দেয়া হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।