বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কোন প্রতিষ্ঠান, কোনও ক্লাবকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের খেলার মাঠ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
সাপ্তাহিক নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টিটি পাড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠ পরিদর্শন শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস সাংবাদিকদেরকে এ কথা বলেন।
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, "আমরা এখন যে জমিগুলো দখলমুক্ত করছি, অবমুক্ত করছি, সেগুলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতায় উন্মুক্ত খেলার মাঠ হিসেবে আমরা উপযোগী করে গড়ে তুলছি। যাতে করে উক্ত ওয়ার্ডে আমাদের সন্তানেরা বা আশেপাশের ছেলেরা যেন সেখানে খেলাধুলা করতে পারে। সুতরাং কোনো প্রতিষ্ঠান, কোনও ক্লাবকে আমাদের খেলার মাঠ আমরা দেবো না।"
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস আরও বলেন, "আমরা ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি জায়গা দখল মুক্ত করেছি। সেখানে খেলার মাঠের উপযোগী করে গড়ে তোলার কাজ চলছে। ইনশাল্লাহ আগামী মাস থেকে আমাদের ছেলেরা সেখানে খেলতে পারবে। ৪২ ওয়ার্ড (লক্ষীবাজার) একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা সেখানে উপযুক্ত কোন খেলার মাঠ ছিল না। এখন থেকে ছেলেরা সেখানে খেলাধুলা করতে পারবে। মুক্তাঙ্গন জায়গাটি দখল অবস্থায় ছিল। সেই জায়গাটি আমরা দখল মুক্ত করেছি। সেখানেও খেলার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করছি। আমরা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মানিকনগরে বড় একটি জায়গা উন্মুক্ত করতে পেরেছি, অবমুক্ত করতে পেরেছি। সেখানেও আমরা যে অবকাঠামো নির্মাণ করছি, সেখানে উপযুক্ত খেলার মাঠের পরিবেশ আমরা তৈরি করে দিচ্ছি।"
খেলার মাঠ প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার তাপস আরও বলেন, "আমরা চাই, প্রতিটি ওয়ার্ডে অন্তত একটি করে খেলার মাঠ কিংবা উন্মুক্ত স্থান থাকুক, যেন আমাদের সন্তানরা খেলাধুলা করতে পারে। আমাদের কাজ বেগবান করেছি, যাতে করে নগরবাসীকে উন্নত ঢাকার সুফল আমরা দিতে পারি। আজ কমলাপুর সংলগ্ন টিটি পাড়া এলাকা পরিদর্শন করেছি। এখানে রেলওয়ের জমিসহ বেশ কিছু সরকারি জমি অবৈধ দখল অবস্থায় আছে। এসব জমি যেন আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়, সেজন্য আমরা চিঠি দিব। এসব স্থানে খেলার মাঠের ব্যবস্থা করতে আমরা কাজ চালিয়ে যাবো।"
এ সময় মশার উপদ্রব প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন,"মশার ওষুধ বা কীটনাশকের মান যেন ঠিক থাকে সেজন্য আমরা বারবার পরীক্ষা করাই। বেশিদিন ধরে যদি একই কীটনাশক বারবার ব্যবহৃত হয়, তাহলে সেটি মশার জন্য সহনশীল হয়ে যায়। সেজন্য আমরা কীটনাশক পরিবর্তন করে দিচ্ছি। আগামী দুই সপ্তাহ পর থেকে নতুন কীটনাশক ব্যবহার করা হবে। আশা করছি, দুই সপ্তাহ পর থেকে মশা আরও বেশি নিয়ন্ত্রণে আসবে।"
এ প্রসঙ্গ ডিএসসিসি মেয়র তাপস আরও বলেন, "অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মশক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শীত মৌসুমে যেহেতু পানির প্রবাহ কমে যায়, তাই কিউলেক্স মশা বৃদ্ধি পায় এ সময়। আমরা নিয়মিতভাবে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছ। আশা করছি আগামীতে মশা কমে যাবে।"
খালের বর্জ্য অপসারণ হলেও নদী দখল-দূষণমুক্ত করা না গেলে তার সুফল সঠিকভাবে পাওয়া যাবে কিনা - এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার তাপস বলেন, "বালু নদী ও রামপুরা খাল ভরাট করায় পানির প্রবাহ নেই। খাল পরিষ্কার কার্যক্রম মার্চ থেকে প্রসারিত করে এপ্রিল পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছি। আমরা পাম্প স্টেশনগুলো চালু করার পরিকল্পনা করেছি। একটি পাম্প (২টি পাম্প স্টেশনের মোট ৬টি পাম্প মেশিন) ইতোমধ্যে চালু করেছি। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাকি পাম্পগুলো চালু করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী। আগামী বর্ষা মৌসুমের মধ্যে খাল-কালভার্টের সংযোগগুলোতে যেন পানি প্রবাহ একটা অবস্থায় আনতে পারি, সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।
এ প্রসঙ্গে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, " নদীর নাব্যতা বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি কাজ করছে। আমাদের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সেটার সভাপতি। এরই মাঝে আমাদের দুটি সভা হয়েছে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী কমিটির সদস্য। ঢাকার চারপাশ ঘিরে থাকা চার নদী যাতে নাব্যতা ফিরে পাই, সে বিষয়গুলো আমরা কমিটিতে উপস্থাপন করেছি।"
এর আগে ডিএসসিসি মেয়র ৭৫ নং ওয়ার্ডের ফকিরখালীসহ বেশ কয়েকটি এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং বিভিন্ন ধরনের দিক-নির্দেশনা দেন। এছাড়াও তিনি খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ায় অঞ্চল-২ এর কার্যালয় নির্মাণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী রেজাউর রহমান, সচিব মো. আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ জাফর আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী মো. বোরহান উদ্দিন, মো. খায়রুল বাকের, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম, স্থানীয় কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।