মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মঙ্গলে সফলভাবে অবতরণ করেছে নাসার মহাকাশযান ‘পারসিভারেন্স’। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে মঙ্গলে পা রাখে সেটি। একই সঙ্গে তৈরি হয়েছে ইতিহাস। এই প্রথম মঙ্গলে উড়ল অত্যাধুনিক হেলিকপ্টার ইনজেনুইটি।
ল্যান্ডারের পেটে বাঁধা এই হেলিকপ্টার মঙ্গলের আকাশে ঘুরবে। সংগ্রহ করবে ছবি। একই সঙ্গে ইতিহাসে নাম উঠে গেল চার ভারতীয় বংশোদ্ভূতের নাম। যার মধ্যে দুইজন বাঙালি। বাংলাদেশ সময় সময় রাত দেড়টা নাগাদ নাসায় পা রাখে ল্যান্ডার রোভার পারসিভারেন্স। মঙ্গলে নাসার এটি তৃতীয় সফল অবতরণ। আগামী দশ দিন ধরে লালগ্রহে তন্ন তন্ন ঘুরবে এই মহাকাশযান। সেখান থেকে পাথর, মাটি সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসার কথা মহাকাশযানটির। সে সব পরীক্ষা করে মঙ্গলে প্রাণের সন্ধান করবেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়াও মঙ্গলের ছবি সংগ্রহ করবে মহাকাশযানটি। আর মঙ্গলের আকাশে এই প্রথম উড়ল মানুষের তৈরি হেলিকপ্টার। উপর থেকে মঙ্গলের খুঁটিনাটি ছবি নেবে ইনজেনুইটি।
নাসা জানিয়েছে, প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার বেগে মঙ্গলের কক্ষপথে ঢুকে পড়ে রোভার পারসিভারেন্স। এরপর একটি বিশাল প্যারাশুটের সাহায্যে তার গতিবেগ কমিয়ে তিন কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় নামিয়ে আনা হয়। মঙ্গলের মাটি ছোঁয়ার সময় ব্যবহার করা হয় এক অতিকায় ক্রেন। তার সাহায্যেই রোভারের মাটি ছোঁয় রোভারের চাকা। যে প্যারাশুটের সাহায্যে রোভারের গতিবেগ কমানো হয়েছে, তাও ঐতিহাসিক। এর আগে এত বড় প্যারাশুট মহাকাশে ব্যবহার করা হয়নি।
মঙ্গলের উত্তরে জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করেছে রোভার পারসিভারেন্স। অ্যামেরিকার কিউরিওসিটি এই অঞ্চলের ছবি আগেই পাঠিয়েছে নাসাকে। তবে রোভার এই অঞ্চলে আরো অনেক বেশি কাজ করবে। এই মুহূর্তে রোভারের থেকে কিউরিওসিটির দূরত্ব প্রায় তিন হাজার ৭০০ কিলোমিটার। গেল ক্রেটারে অবস্থান করছে মার্কিন মহাকাশযানটি। নাসা জানিয়েছে, শুধু ভূপৃষ্ঠের উপরে নয়, ভূপৃষ্ঠের তলার উপাদানও সংগ্রহ করবে পারসিভারেন্স। এই যানটির মূল কাজ হবে মঙ্গলে জলের সন্ধান করা এবং প্রাণের খোঁজ চালানো।
পারসিভারেন্সের এই ঐতিহাসিক অবতরণের সঙ্গে চারজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জড়িত। তার মধ্যে দুইজন বাঙালি। বেঙ্গালুরুর স্বাতী মোহন পারসিভারেন্সের গাইডেন্স, নেভিগেশন ও কন্ট্রোল অপারেশন্স (জিএনঅ্যান্ডসি)-এর প্রধান। দ্বিতীয় ব্যক্তিও বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা। তাঁর নাম জে বব বলরাম। ইনজেনুইটি হেলিকপ্টারের চিফ ইঞ্জিনিয়ার তিনি। এই প্রথম অন্য কোনো গ্রহে নাসা হেলিকপ্টার ওড়াচ্ছে। ফলে ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছেন বলরাম।
তৃতীয় ব্যক্তির নাম অনুভব দত্ত। মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যারোডায়নামিক্স ও অ্যারোইলেকট্রিসিটি বিভাগের অধ্যাপক তিনি। তিন দশক আগে লাল গ্রহে হেলিকপ্টার ওড়ানোর স্বপ্ন যাঁরা দেখতে শুরু করেছিলেন, মহিষাদলের অনুভব তাঁদের অন্যতম। তাঁদের ভাবনা থেকেই ইনজেনইটি ডিজাইন করা হয়েছে।
এছাড়াও আছেন বর্ধমানের সৌম্য দত্ত। বর্ধমানের বাসিন্দা হলেও বাবার চাকরির সূত্রে ছোটবেলায় দেহরাদুন, মুম্বইয়ে পড়াশোনা করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালিন তিনি অ্যামেরিকা চলে যান। যে বিশাল প্যারাশুটের সাহায্যে রোভারের গতিবেগ কমিয়ে মঙ্গলে অবতরণ করানো হয়েছে, সেই প্যারাশুটটি তৈরি করেছেন সৌম্য। ২১ মিটার ব্যাসের এই প্যারাশুটটির উচ্চতা ১৫ জন মানুষের সমান। তীব্র গতিবেগে রোভার যখন মঙ্গলের দিকে যাচ্ছিল, তখন মাত্র এক থেকে দুই সেকেন্ডে এই প্যারাশুটটি খুলে যায়। তারই সাহায্যে নিয়ন্ত্রমে আসে রোভারের গতি। এবং শেষ পর্যন্ত ঠিকমতো অবতরণ করতে পারে। সূত্র: রয়টার্স, এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।