পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলাম শান্তির ধর্ম। শক্তি প্রদর্শন ইসলাম কোনোভাবেই সমর্থন করে না। বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গিরা একটি ভ্রান্ত ধারণার ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। ইসলামের মূল্যবোধ এবং হজরত মুহাম্মদ (সা.) আদর্শিক দিকগুলো এ দেশের মুসলিম বাঙালিদের মধ্যে প্রতিষ্ঠা লাভের জন্য এবং আগত জেনারেশনকে (প্রতিষ্ঠা) এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে বিভিন্ন ইসলামিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের বিষয়েও সচেতন ছিলেন। এ অগ্রযাত্রা পরবর্তীকালে আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠেছিল। জঙ্গিরা যাদেরকে ইসলামবিরোধী বা বিদ্বেষী হিসেবে চিহ্নিত করতে চেয়েছিল তারা ইসলামকে সুপ্রতিষ্ঠার কাজে লিপ্ত। ইসলামের মূল্যবোধ সম্পর্কে আসামিদের ভ্রান্ত ধারণা ও তাদের এহেন কর্মে পুরো দেশ ও সমাজ অশান্তিতে নিমজ্জিত ছিল। এসব মন্তব্য করা হয়েছে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের এক পর্যবেক্ষণে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বুধবার দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত এ কথা বলেন। পরে আদেশে শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলায় জড়িত ১০ আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন। আদালত আরও বলেন, দেশের মানুষের কল্যাণের স্বার্থে জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গি তৎপরতা চিরতরে দেশ থেকে বিলীন হওয়া প্রয়োজন। এ ধরনের জঙ্গি তৎপরতার আড়ালে যাদের বিচরণ ছিল তাদের সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাদের ঘটনার আরও গভীরে যাওয়া উচিৎ ছিল। তারা তদন্তে আরও মনোযোগী হতে পারতেন। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম এবং বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত আরও বলেন, আসামিরা ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণার মধ্য দিয়ে তৎকালীন সরকারকে দোষারোপ করেছিল। অথচ আসামিরা যাদেরকে ইসলামবিরোধী বা বিদ্বেষী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল, তারাই এ দেশে ইসলামকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন।
রায়ে বলা হয়, দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, আসামিরা (হুজি জঙ্গি) দেশের প্রচলিত আইন মেনে চলতে নারাজ। তারা জঙ্গি তৎপরতার মাধ্যমে তাদের নিজস্ব চিন্তার প্রতিফলন ঘটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জঙ্গিদের এ ধরনের চিন্তা দেশের প্রচলিত আইন কখনও সমর্থন করে না। কারণ এরা সকলেই জন্মগতভাবে এ দেশেরই নাগরিক। ষড়যন্ত্র করে শক্তিশালী দুটি বোমা পুতে রাখার মধ্য দিয়ে যে অপরাধ আসামিরা সংঘটিত করেছে, তা ছিল অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ও জঘন্য।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামিদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আদালত বলেন, ষড়যন্ত্রকারী আসামিরা মূলত শেখ হাসিনাকে হত্যা করার জন্য এ ঘটনার অবতারণা করেছিল। তিনি তখন বৈধ সরকারপ্রধান হিসেবে ক্ষমতায় ছিলেন। একটি বৈধ সরকারপ্রধান এবং তার সহযোগীদেরকেসহ হত্যার প্রচেষ্টা ও তা বাস্তবায়ন করা কতখানি দেশ ও জাতির জন্য ক্ষতিকর তা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার পরবর্তী সময়ে এ দেশের নিরীহ স্বাধীনতাকামী জনগণ উপলব্ধি করেছে। আসামিদের এ ধরনের ভ্রান্ত চিন্তাচেতনা জাতির জন্য একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। দেশের মানুষের কল্যাণের স্বার্থে জঙ্গিবাদ এবং জঙ্গি তৎপরতা চিরতরে এ দেশ থেকে বিলীন হওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন আদালত। পরে হাইকোর্ট এ মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ১০ আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।