Inqilab Logo

সোমবার ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৯ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে উরশ শরিফ শুরু হচ্ছে শুক্রবার বাদ জুমা

করোনা সংকটে জনসমাগম বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে এবার উরশ ৮দিন

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ২:১৬ পিএম

ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে ৮ দিন ব্যাপী বিশ্ব উরশ শরিফ-এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হচ্ছে শুক্রবার জুমার নামাজ থেকে । হজরত মাওলানা শাহ সুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী(কুঃছেঃআঃ)ছাহেব’এর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে ইতোমধ্যেই অসংখ্য মুরিদান,ভক্ত ও মুসুল্লীবৃন্দের সমাগম শুরু হয়েছে। করোনা সংকটের কারনে জনসমাগম কিছুটা বিকেন্দ্রী করনের লক্ষ্যে এবার উরশ শরিফ ৪ দিনের স্থলে ৮ বিভাগের জন্য আটদিনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে এবার দেশের বাইরে থেকে এ দরবার শরিফে জাকেরারন ও আশেকানবৃন্দের সমাগম ঘটছে না বলে জানা গেছে।

উরশ শরিফ উপলক্ষে ইতোমধ্যেই বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও সন্নিহিত প্রায় ৩০বর্গ কিলোমিটার এলাকা যুড়ে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আপন পীর হজরত খাজা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী(কুঃছেঃআঃ)ছাহেবের নির্দেশে বাংলা ১৩৫৪ সালে শাহ সুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী (কু:ছে:আ:)ছাহেব ফরিদপুরের সদরপুরের আটরশী গ্রামে ইসলাম প্রচারে নিয়োজিত হয়েছিলেন। সেদিন মাত্র সাড়ে ৬টাকায় খেজুরের খোলের বেড়া ও ছনের ছাউনি দেয়া ঘর কিনে তিনি আটরশীতে ‘জাকের ক্যাম্প’ প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম প্রচার শুরু করেন। কালের বিবর্তনে তা জাকের মঞ্জিল থকে আজকের বিশ্ব জাকের মঞ্জিল। প্রতিবছর উরশ শরিফ এবং পীর ছাহেবের ফাতেহা শরিফ ছাড়াও বছর যুড়েই অসংখ্য
জাকেরান ও অশেকান সহ ধর্মপ্রাণ মানুষ পীর ছাহেবের রওজা শরিফ জিয়ারতের উদ্দেশ্যে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে আসেন।
শুক্রবার সুচনা দিবসে মুসুল্লীয়ানগন জুমা নামাজ আদায়ন্তে দু রাকাত নফল নামাজ ও মিলাদ শরিফ পাঠের পরে পীর ছাহেবের রওজা শরিফে ফাতেহা শরিফ পাঠন্তে মোনাজাতের মাধ্যমে এবার উরশ শরিফের কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর থেকে আসর নামাজ বাদ তওবা কবুলিয়াতের ফয়েজ এবং মাগরিব বাদে দু রাকাত করে ছয় রাকাত নফল নামাজ আদায় ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। ফাতেহা শরিফ পাঠন্তেও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এর পর থেকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ ও জিকিরের মাধ্যমে উরশ শরিফের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। দেশবরেণ্য ওলামায়ে কেরামগন এ উরশ শরিফে বয়ান করবেন।
তরিকায়ে নকসবন্দিয়া-মোজাদ্দেীয়ার আমল অনুযায়ী রাতের শেষ প্রহরে রহমতের সময়ে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে প্রতিটি দিনের এবাদত বন্দেগীর কার্যক্রমের সূচনা হবে। এরপরে মিলাদ ও দোয়া মোনাজাত ছাড়াও জিকির শেষে লক্ষÑলক্ষ জাকেরান ও আশেকানবৃন্দ জামাতের সাথে ফজরের নামাজ আদায়ন্তে ফাতেহা শরিফ ও খতম শরিফ আদায়ের মাধ্যমে এ উরশ শরিফের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

করোনা সংকটের কারনে ১৯ ফেব্রæয়ারী থেকে ২৬ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত দেশের আট বিভাগের মানুষ ভিন্ন ভিন্নভাবে এ উরশ শরিফে যোগ দেবেন।
এ মহা পবিত্র উরশ শরিফে ফজর থেকে এশার নামাজ জামাতের সাথে আদায় সহ নফল নামাজ আদায়, মোনাজাত এবং মোরাকাবা-মোশাহেদা অনুষ্ঠিত হবে। নকসবন্দিয়াÑমোজাদ্দেদীয়া তরিকতের নিয়ম অনুযায়ী বাদ ফজর ও বাদ মাগরিব ফাতেহা শরিফ পাঠন্তে মোনাজাত এবং বাদ এশা ৫শবার দরুদ শরিফ পাঠ করে নবী করিম(সাঃ)-এর পাক কদম মোবারকে নজরানা দেয়া হয়। এছাড়াও জোহর, মাগরিব ও এশার নামজন্তে নফল নামাজ আদায় এবং দোয়াÑমোনাজাতও অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে।

আপন পীর উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুফী সাধক হজরত মাওলানা শাহ সুফী সৈয়দ খাজা ইউনুস আলী এরায়েতপুরী(কুঃছেঃআঃ)ছাহেবের নির্দেশে বিশ^ জাকের মঞ্জিলের পীর ছাহেব তার জীবদ্বশায় এ দরবার থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হেদায়াত প্রদান করে গেছেন। নানা গঞ্জনা ও প্রবল প্রতিকুলতা অতিক্রম করেও ২০০১-এর ১মে ওফাত লাভ পর্যন্ত তিনি ইসলাম প্রচারে ব্রতী ছিলেন। এউপলক্ষে পীর ছাহেবের আধ্যাতিক উত্তরাধিকারী ও বড় ছাহেবজাদা আলহাজ খাজা মাহফুজুল হক মুজাদ্দেদী ছাহেব সমেবত জাকেরান ও আশেকানবৃন্দকে সাক্ষাত প্রদান সহ নানা অসিহত প্রদান করবেন বলে জানা গেছে।
আগামী ২৪ ফেব্রæয়ারী এ উরশ শরিফে বরিশাল বিভাগের অংশ গ্রহনের দিনে যাতায়াতের লক্ষে মহানগরীর ঈদগাহ থেকে বিশেষ বাস কাফেলা রওয়ানা হবে সকাল ৯টায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উরশ শরিফ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ