বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ির কবলে শবে বরাত-৩
সুনানে ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে : হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
বছরাধিক ধরে করোনাভাইরাসের ধ্বংসলীলা নিয়ে আলোচনা, পর্যালোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার অন্ত নেই। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ও জাতীয়-আঞ্চলিক পর্যায়ে তুমুল আলোচনা-বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে, পর্যবেক্ষণ-গবেষণারও অন্ত নেই। এ খোদায়ী গজব-কহর বিশ্ব মানবের সঙ্গী হয়ে স্থায়িত্ব লাভ মহাপ্রলয়ের পূর্বাভাস কি না, তা বিশ্ব বিখ্যাত ভবিষ্যদ্বক্তা হজরত শাহ নেয়মতুল্লাহ (রহ.)-এর কাসীদায় তিনি উল্লেখ করেছেন কি না, তা এক বড় প্রশ্ন। কেননা তাঁর অসংখ্য ভবিষ্যদ্বাণী এ যাবত বাস্তবায়িত হওয়ার কথা অনেক ঐতিহাসিক উল্লেখ করেছেন।
এ পর্যায়ে আমরা হজরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ (রহ.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীর প্রতি করোনা কবলিত বিশ্ববাসীর দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে চাই, যাতে তিনি বলেছেন: হিন্দুস্থানে তাউন (মহামারি) ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে, এই কারণে সকল স্থানে মুসলমান মারা যাবে। (২য় কাসীদা)।
ব্যাখ্যা: হিন্দুস্থানে মহামারি ও দুর্ভিক্ষের সূচনা হবে এবং সকল স্থানে মুসলমান মারা যাবে- এ বক্তব্যের তাৎপর্য অনুধাবনযোগ্য। কবিতায় বিশেষভাবে হিন্দুস্থানে মহামারি ও দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়ার এবং সর্বত্র মুসলমান মারা যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। শাহ সাহেব বিশেষভাবে হিন্দুস্থানী মুসলমানদের অবস্থা বর্ণনা করেছেন। তাই তিনি দু’টি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মুসলমানদের নিহত হওয়ার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করলেও এ দুটি খোদায়ী পরীক্ষার বিস্তৃতি ‘হারজা’ (সর্বত্র) বলে ব্যাপকতা বুঝিয়েছেন। মানুষের খোদাদ্রোহীতা ও নাফরমানির দরুন নানা প্রকারের প্রাকৃতিক বিপর্যয় এসে থাকে বলে কোরআন ও হাদীসে বহু ঘটনা-কাহিনীর বিবরণ রয়েছে। আর এসব ঘটনার শিকার হতে হয় সকলকে। হজরত শাহ সাহেব আলোচ্য ভবিস্যদ্বাণীতে যে দুটি বিপদের নাম উল্লেখ করেছেন তা হিন্দুস্থানে (ভারতবর্ষে) সীমাবদ্ধ নয়, যার সূত্রপাত ভারতে হলেও তা নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত বহন করে এবং অমুসলিমরা ছাড়াও মুসলমানদের প্রাণহানির কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। খরা-দুর্ভিক্ষ দুনিয়ার নানা স্থানে অহরহ হয়ে থাকে, অনুরূপভাবে তাউন (মহামারি) ও দেখা দিয়ে থাকে। চলমান করোনা মহামরি সেই তাউনেরই সম্প্রসারিত অংশ কি না সে প্রশ্নই উঁকি দিচ্ছে।
পরবর্তী ভবিষ্যদ্বাণী জাপানে ভয়াবহ ভূমিকম্প। শাহ সাহেব বলেন: কেয়ামতসম একটি ভূমিকম্প হবে তাতে জাপানের দুই তৃতীয়াংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ও জাপানে পুনঃ পুনঃ ঘটে আসছে। এ দ্বিতীয় কাসীদার সূচনা করা হয়েছে এই ভাবে: পুরনো কাহিনীকে আমি উপেক্ষা করছি, হিন্দুস্থান সম্পর্কে আমি টাটকা (ঘটনাবলী) বর্ণনা করছি যে, দ্বিতীয় যুগে যেগুলো সংঘটিত হবে।
দ্বিতীয় যুগ বলতে হজরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ (সম্ভবত) মোগল যুগকে বুঝিয়েছেন। তাই সে যুগে যারা ভারতে পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতার অধিকারী হবেন তাদের উত্থান-পতনের ধারাবাহিক বর্ণনা সমাপ্ত করার পর ভারতে তাউন-দুর্ভিক্ষ ও জাপানে একটি ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলার আগামবার্তা প্রদান করেছেন যা ওপরে বর্ণিত হয়েছে। চলমান করোনা শাহ নেয়ামতুল্লাহর ভবিষ্যদ্বাণীর অংশ কি না সেই প্রশ্ন অনেকের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।