বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মোটামুটি প্রশস্ত হলেও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কটি প্রশস্ত নয়। ফলে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে কোনো যানবাহন বিকল হয়ে পড়লে যানজট লেগে যাওয়ার ঘটনা নিত্যদিনের। প্রতিদিন এ সড়কে যানজটের অন্যতম আরেকটি কারণ কাঞ্চন সেতুতে টোল আদায় প্রক্রিয়া। আবার নারায়ণগঞ্জ সওজের পক্ষ থেকে মেয়াদ ছাড়াই এ সেতুর টোল আদায় করার কারণে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের রয়েছে ক্ষোভ।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) একটি সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর ও সিলেটের সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের সরাসরি সংযোগ স্থাপনের জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয় ২০০৬ সালের অক্টোবরে। সে সময় উদ্বোধনের পরবর্তী ১০ বছর পর্যন্ত টোল আদায় করার কথা বলা হয়েছিল। সে অনুযায়ী ২০১৬ সালে টোল আদায়ের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৪ বছর ধরে চলছে টোল আদায়। সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে গাজীপুর জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ঢাকা-বাইপাস সড়ক নামে ৪৮ কিলোমিটার রাস্তাকে কাঞ্চন সেতুর মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে। এদিকে টোল এলাকায় মাঝে মধ্যে চারটি কাউন্টারের মধ্যে দু’টি বন্ধ রাখা হয়। অতিরিক্ত টোল আদায় করার কারণে প্রায় সময়ই আদায়কারীদের সঙ্গে চালকদের বাক-বিতন্ডা ঘটছে। মাঝে মধ্যে মারধরের ঘটনাও ঘটে। এতে কেটে যায় ২০ থেকে ৩০ মিনিট। এসময়ে যানজট লেগে যায়। এক ঘণ্টার মধ্যে এ যানজট সেতুর দু’পাশে প্রায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার এলাকা ছাড়িয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী সাধারণ থেকে শুরু করে মালবাহী যানবাহনের চালকরা।
এ অঞ্চলে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর (টিআই) জহিরুল ইসলাম বলেন, আমার সঙ্গেও পর্যাপ্ত জনবল নেই। ফলে সাধ্য দিয়েই যানজট মোকাবেলা করে আসছি। আরো পুলিশ সদস্য বাড়িয়ে দেয়া হলে যানজট নিরসন করা সম্ভব বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর কাঞ্চন সেতুর টোল আদায়ের নির্ধারিত সময়সীমা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। নিয়ম বহিভর্‚তভাবে ব্যস্ততম এ সেতুতে টোল আদায় করে আসছে দীর্ঘ বছর ধরে। আর চলাচলরত যানবাহন, পরিবহন থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার টোল আদায় করছে নারায়ণগঞ্জ সওজ বিভাগ। যদিও সওজের দাবি, সরকারের সিদ্ধান্তেই টোল আদায় করা হচ্ছে এ সেতুতে। এর আগে সেতু মন্ত্রণালয় শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর রাজধানী ঢাকায় প্রবেশের জন্য চারটি সেতু নির্মাণ করে। এর মধ্যে রয়েছে কাঁচপুর সেতু, ডেমরা-তারাব সেতু, মুড়াপাড়া-ইছাখালী সেতু ও কাঞ্চন সেতু। এসব সেতুর মধ্যে শুধুমাত্র কাঞ্চন সেতুতেই মেয়াদ চলে যাওয়ার পরও আদায় করা হচ্ছে টোল।
অভিযোগ রয়েছে, সওজ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অসাধু ব্যক্তিদের যোগসাজসে মাসিক হারে গোপন লেনদেন করে স্থানীয়ভাবেই চলছে ৫ শতাধিক পরিবহন। ব্যস্ত ঢাকা-বাইপাস রুটে যানবাহনের বাড়তি চাপ আর টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।
কাঞ্চন সেতু প্রকল্প ও টোলপ্লাজার পরিচালক মোহাম্মদ কারিবুল ইসলাম বলেন, যানবাহনের চাপ না থাকলে মাঝে মধ্যে একটি বা দু’টি টোল বন্ধ রাখা হয়। সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে দায়িত্ব পেয়েই টোল আদায় কাজে নিয়োজিত আছি। টোল আদায়ের মেয়াদকাল শেষ হয়েছে বলে জানা নাই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৯ সালের অক্টোবরে সড়ক ও জনপথ থেকে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে তিন বছরের জন্য টোল আদায়ে ইজারা পায় মেসার্স এসইএল-ইউডিসি-জেভি নামে যৌথ মালিকানার একটি প্রতিষ্ঠান। ২০১২ সালের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠানটি আরো ৫ বছরের জন্য টোল আদায়ের ইজারা নেয়। এভাবে কোন সময় ইজারা নিয়ে, কোন সময় আউটসোর্সিং আবার মৌখিক মেয়াদ বাড়িয়ে টোল আদায় প্রক্রিয়ায় যুক্ত রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহা. জহিরুল ইসলাম বলেন, কাঞ্চন ব্রিজের টোল আউটসোর্সের মাধ্যমে আদায় করা হচ্ছে। এটাকে পিপিপি প্রকল্পের আওতায় নিয়ে এ টোল আদায় অব্যাহত থাকবে। তিনি আরো বলেন, দশ বছর টোল আদায়ের পর আর টোল আদায় না করার কথা সঠিক নয়। তবে আড়াইশ’ মিটার দীর্ঘ সেতু না হলে কোন টোল আদায়ের নিয়ম নেই। আর কাঞ্চন সেতুতে সরকারের সিদ্ধান্তেই টোল আদায় করা হচ্ছে। আমরা তদারকি করছি মাত্র।
তিনি আরো বলেন, এই সড়কটি পিপিপির আওতায় চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলমান। ফলে এ টোল আদায় প্রক্রিয়াকে পুরো ৪৮ কিলোমিটার সড়কে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে দেয়া হবে। পুরো সড়কটি টোল রোড হবে কাজ শেষ হওয়ার পর ২৫ বছরের জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।