Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

রাশেদ খান মেননের ‘বিবেক’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৪ এএম

স্থানীয় সরকারসহ দেশের সার্বিক নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। গতকাল শনিবার দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। তবে সব বক্তব্য দলের সভার সিদ্ধান্ত হিসেবে জানানো হয়।

মহাজোটের শরীক দল হিসেবে ক্ষমতার মধু খেলেও বিবেকের দংশনে ভুগছেন রাশেদ খান মেনন এমপি। ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর বরিশাল নগরীর টাউন হলে ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমিও নির্বাচিত হয়েছি। তারপরও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকি পরবর্তীতে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ।’ এই বক্তব্য দেয়ার পর তাকে বিপদে পড়তে হয়। তাই বর্তমান নির্বাচন পরিস্থিতি দেখে বিবেকে নাড়া দিলেও সরাসরি কিছু বলতে সাহস করেন না। ওই সময় ‘দুই আনা, এক আনা তথ্য দিয়ে হাসানুল হক ইনুকেও বিপদে পড়তে হয়েছিল। ফলে বক্তব্য কমিটির হিসেবেই প্রচার করা হয়।

দলের সভাপতি রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে ভার্র্চুয়ালি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা হয়। পরে নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাার প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি ক্রমাবনতিতে বিশেষত: সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনসমূহে বিরোধী দল, এমনকি ক্ষমতাসীন দলের সাথে জোটভুক্ত দলসমূহের নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্ব›িদ্বতাকে অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। নির্বাচনে রাষ্ট্রযন্ত্রের হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণ এখন আর গোপন নয় প্রকাশ্য। নির্বাচন কমিশন তা পরিপূর্ণ জ্ঞাত থাকার পরও সে সম্পর্কে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। জিয়া-এরশাদ আমলের হুন্ডা-গুন্ডা ভোটারহীন নির্বাচনের ঐতিহ্যও এখন ম্লান হয়ে গেছে। আগামী ইউপি নির্বাচনেও যদি এর পুনরাবৃত্তি ঘটে তাহলে দেশের মানুষ নির্বাচনীব্যবস্থা সম্পর্কে পরিপূর্ণ আস্থা হারিয়ে ফেলবে। এখন যেমন রাউজান ফেনীসহ কয়েকটি অঞ্চলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার অর্থই ‘নির্বাচন’ হয়ে যাওয়া, তারই বিস্তৃতি ঘটবে সারা দেশে।

ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে বলা হয়, ভোট প্রদানে ইভিএম ব্যবস্থা প্রবর্তনের মধ্যদিয়ে ভোট বাক্স পূর্বাহ্নে পূর্ণ করে রাখা, জোর করে ব্যালটে সিল প্রদান, ব্যালট ছিনিয়ে নেয়া, ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়ার যেসব অনিয়ম দূর করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল তা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ইভিএমে কারচুপির সুযোগ রাখার জন্যই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরবর্তীকালে ভোটের ফলাফল নিরীক্ষার জন্য ভোটার ভেরিফায়াবেল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিএটি) রাখার কারিগরি উপদেষ্টা কমিটি সুপারিশকেও উপেক্ষা করেছিল।

স¤প্রতি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ফলাফলের অসঙ্গতি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তা ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে আর্থিক অনিয়ম লুটপাট ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনৈতিক আচরণের সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দেখা ও নির্বাচন কমিশনকে যথাযোগ্য আস্থাভাজন প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান জানানো হয়।

ভার্চুয়াল সভায় আনিসুর রহমান মল্লিক, সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমদ বকুল, কামরূল আহসান, জোবায়দা পারভীন, মোস্তফা আলমগীর রতন ও ইন্দ্রনী সেন শম্পা সভায় বক্তৃতা করেন।



 

Show all comments
  • বয়ড়া খাল পাড় ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১:৩৮ এএম says : 0
    ভাইয়েরা এবার ঘুম থেকে জেগে উঠছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রাশেদ খান

৩১ জানুয়ারি, ২০২২
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ