গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বেঁধে দেওয়া সাত দিনের মধ্যে বেসরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের অনুমোদন ও প্রত্যয়ন দেওয়ার অনুমতি ফিরিয়ে দেওয়া না হলে রাজধানী ঢাকার বাসাবাড়ির ময়লা নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সংগঠন প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার (পিডব্লিউসিএসপি)। পাশাপাশি ১৯ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর রুটি-রুজি বন্ধের চক্রান্ত ‘বর্জ্যরে টেন্ডার’ বন্ধের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাফনের কাপড় পরে এক মানববন্ধনে এ হুমকি দেন।
মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি নাহিদ আক্তার লাকী বলেন, ঢাকার বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা অপসারণ ও ব্যবস্থাপনার মূল দায়িত্ব ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। কিন্তু প্রতিষ্ঠান দুটি শুধু নির্ধারিত কনটেইনার থেকে ল্যান্ডফিলে ময়লা অপসারণের কাজ করছে। তাদের যে জনবল রয়েছে তা দিয়ে বাসাবাড়ি থেকে ময়লা সংগ্রহ করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শুধু শহরের প্রধান প্রধান সড়কে ঝাড়– দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমাদের পিডব্লিউসিএসপি’র প্রায় ১৯ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী নাগরিকদের বাসাবাড়ির ময়লা সংগ্রহ করে সিটি করপোরেশনের কন্টেইনারে পৌঁছে দেয়। এজন্য সেবা মূল্য হিসেবে আমরা ২৫ থেকে ৩০ টাকা করে নিতাম। যা দিয়ে কর্মীদের বেতন-ভাতা ও অফিস ব্যয়সহ অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করা হতো।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের এই নেত্রী বলেন, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলেও সত্য যে, নগরবাসী তাদের হোল্ডিং ট্যাক্সের সঙ্গে মোট করের দুই শতাংশ বর্জ্যের জন্য বিল হিসেবে দিয়ে থাকেন। তার সঙ্গে আবার নতুন করে ১০০ টাকা ধার্য করে টেন্ডারের মাধ্যমে এই কাজ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে যেসব বেসরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল তারা এখন কর্ম হারানোর শঙ্কায় রয়েছে।
লাকী বলেন, এরই মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তাদের ময়লা সংগ্রহের কাজ টেন্ডারে দিয়ে দিয়েছে। এতে দক্ষিণ সিটিতে আমাদের ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী বেকার হয়েছে। তারা এখন কর্ম হারিয়ে বিভিন্ন অপরাধকা-ে জড়িত হচ্ছে। ময়লা সংগ্রহের এই সেবামূলক পুরো কাজ এখন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। টেন্ডারে দেওয়ার কারণে দক্ষিণ সিটিতে নাগরিকদের হয়রানি আরও বেড়েছে। ২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ময়লার বিল ১০০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতাধর কাউন্সিলর বা ঠিকাদারদের লোকজন সেই ১০০ টাকার পরিবর্তে কোথাও কোথাও ৩০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। এতে যেমন অতিরিক্ত করের চাপে পড়ছেন নগরববাসী, ঠিক একইভাবে এই করোনাকালে কর্ম হারাতে বসেছেন আমাদের বেসরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় আমাদের দাবি-আগামী সাত দিনের মধ্যে টেন্ডার বাতিল করে সিটি করপোরেশন কর্তৃক অনুমোদন ও প্রত্যয়ন ফিরিরে না দিলে নগরীর বাসাবাড়ির ময়লা নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতাকাজে নিয়োজিত সংগঠনগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রতি মাসে অন্তত একবার দুই মেয়রকে আমাদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে হবে।
কর্মসূচির আয়োজকরা জানান, ঢাকার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সংগঠন পিডব্লিউসিএসপি’র সংগঠক প্রয়াত মেয়র মো. আনিসুল হক। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠার পর তিনি ২০১৫ সালে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ওয়ার্ড ভিত্তিক সব সংগঠনকে একত্রিত করে ময়লা নিয়ে কাজ করার জন্য এই ফাউন্ডেশনকে প্রত্যয়ন দেওয়ার ক্ষমতা দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।