Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশি হয়রানি বন্ধে দু’বার আবেদন করেন চা-দোকানি বাবুল

প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর শাহআলীতে নিহত চা-দোকানি বাবুল মাতব্বর। পুলিশের অব্যাহত হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে দুই দফায় মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনারের (ডিসি) কাছে আবেদন করেছিলেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ থাকায় থানা পুলিশ কিছুদিন নিশ্চুপ ছিল। পরে আবারও তাকে হয়রানি করে পুলিশ।
এদিকে নিহত বাবুলের পরিবারের দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত পারুল দুই দিনের রিমান্ডে রয়েছে শাহআলী থানায়। কিন্তু অসুস্থতার নাটক সাজিয়ে পারুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি বলে নিহতের স্বজনদের অভিযোগ। তারা জানান, পারুল পুলিশেরই লোক। যেভাবেই হোক পুলিশ তাকে মুক্ত করবে। ওই হত্যা মামলার অপর আসামিদের গতকাল পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক বছর ধরেই বাবুলকে হয়রানি করে আসছিলো স্থানীয় থানা পুলিশ। এ জন্য নিজেকে বাঁচাতে বাবুল পুলিশের মিরপুর বিভাগের ডিসির কাছে একাধিকবার লিখিত আবেদন করেছেন। অনুনয়-বিনয় করে লেখা এরকম একটি আবেদনের ফটোকপি গতকাল গণমাধ্যম কর্মীরা উদ্ধার করেছে।
গত বছরের ১৬ আগস্ট মিরপুর বিভাগের ডিসি মো. কায়ুমুজ্জামানের কাছে লিখিত আবেদনে বাবুল পুলিশের হয়রানি থেকে মুক্তি এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনের আকুতি করেন। ওই আবেদনে তিনি গুদারাঘাট, বøক-এইচ, রোড নং ৬, কিংশুক এর গেইটের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করেন। তিনি লিখেছেন, আমি কোনও মাদক খাইও না এবং বিক্রয়ও করি না। লোকমারফত শুনতে পাই আশপাশের ঘরের লোকজন নাকি মাদক বিক্রয় করে। উক্ত ঘরের মাদক বিক্রেতাদের খুঁজতে এসে পুলিশ আমাকে নানাভাবে হয়রানি করে। গত বছর আমি আপনার অফিসে একটি দরখাস্ত দেওয়ার পর এক বছর থানা-পুলিশ আমাকে হয়রানি করেনি। বর্তমানে আবার থানা-পুলিশ আমাকে হয়রানি করে আসছে। ফলে আমি সবসময় পুলিশের ভয়ে থাকি।
থানা পুলিশ অন্যকে খুঁজতে গিয়ে যাতে আমাকে হয়রানি না করে এই বিষয়ে শাহ-আলী থানাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান এবং আমাকে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সুযোগদানে আপনার মর্জি হয়।
নিহত বাবুল হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহআলী থানার এসআই মোক্তারুজ্জামান গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, এ মামলায় গ্রেফতারকৃত পারুলকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে দুই দিনের রিমান্ডে আনা হয়। কিন্তু পারুল অসুস্থ। তাকে শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। অসুস্থতার জন্য সেভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি। পারুলের কাছে কিছু জানতে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। পরিস্থিতি খারাপ হলে আজ (রোববার) তাকে আদালতে পাঠানো হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে মিরপুরের ১ নম্বর গুদারাঘাট এলাকার নিজ চায়ের দোকানে পুলিশের স্টোভের আগুনে দগ্ধ হন বাবুল মাতব্বর। পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় শুক্রবার শাহআলী থানার ওসি শাহীন মÐলকে প্রত্যাহার করে রাজারবাগে পুলিশের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ শাখায় যুক্ত করা হয়েছে। এর আগে কর্তব্যরত কাজে দায়িত্ব অবহেলার কারণে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে একই থানার পুলিশের ৫ সদস্যকে। বাবুল মাতুব্বরের মৃত্যু ঘটনায় পুলিশের মিরপুর বিভাগ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) হেডকোয়ার্টার্স থেকে পৃথক কমিটি দুটি গঠন করা হয়। বাবুলের পরিবার ৭ জনকে আসামি করে শাহ আলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় পারুল নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশি হয়রানি বন্ধে দু’বার আবেদন করেন চা-দোকানি বাবুল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ