Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দুদককে নখ-দন্তবিহীন বাঘ হলে চলবে না

অর্থপাচার রিটের শুনানিকালে হাইকোর্টের মন্তব্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০১ এএম

দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নখ-দন্তবিহীন বাঘ হলে চলবে না। পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত আনতে এ সংস্থাটিকে সচেতন থাকতে হবে। গতকাল রোববার এ মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এক রিট পিটিশনের শুনানিকালে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি মহি উদ্দীন শামীমের ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালত বলেন, দুদককে কনসার্ন থাকতে হবে সুইস ব্যাংকের জব্দকৃত টাকা ফেরত ইস্যুর বিষয়ে। এ সময় দুদকের অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান আদালতকে বলেন, আমরা অবশ্যই কনসার্ন রয়েছি। আমাদের কাছে সকল তথ্য রয়েছে। সেগুলো আদালতে উপস্থাপন করতে পারব।

মুসা বিন শমসেরসহ অন্যদের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংক বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার নির্দেশনা চেয়ে এ রিট করা হয়। রিটের ওপর গতকাল প্রথম দিনের মতো শুনানি হয়। পরে আগামীকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।

রিটের পক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুল কাইয়ুম খান শুনানি করেন। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মালিক। রিটকারীর কৌঁসুলিরা জানান, গত ১ ফেব্রুয়ারি রিটটি করা হয়। রিটে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট ১৫ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। আবেদনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংবাদপত্রে এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। পিটিশনে বলা হয়, বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশের ব্যাংকে পাচার করা অর্থ ফেরত আনতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ হবে না- তা জানতে রুল জারির আবেদন জানানো হয়। সেই সঙ্গে সুইস ব্যাংকসহ বিদেশে বাংলাদেশি নাগরিকদের অতীতের এবং বর্তমানে এই ধরনের অর্থপাচার ও সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে একটি স্পেশাল কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়। পাশাপাশি পাচারের বিষয়ে তথ্য থাকলে প্রকাশ করে পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের প্রতি নোটিশ জারির আবেদন জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) প্রতিবেদনের উদ্ধৃত করে রিটে উল্লেখ করা হয়, বছরে ১ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। গত ৭ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৫ হাজার ২৭০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। বছরে পাচার হয়েছে প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে চারটি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব। অর্থ পাচার হচ্ছে দুইভাবে। একটি হচ্ছে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে মূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) এবং রফতানিতে মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং)।

টাকা পাচারে বিশ্বের শীর্ষ ৩০ দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নাম। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার এ বিষয়ক তালিকায় ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের প্রায় ১৯ শতাংশই কোনো না কোনোভাবে পাচার হচ্ছে।



 

Show all comments
  • বাশীরুদ্দীন আদনান ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৪:১৬ এএম says : 0
    চলছে তো সেভাবেই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুদক

২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
৪ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ