Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ষণ প্রতিরোধে ২১ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘঠিত ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণসহ যৌন সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এই সংগঠন ছাড়াও বিশিষ্ট ২১ নাগরিক নারী ও কন্যার প্রতি ধর্ষণসহ সকল প্রকার সহিংসতার ঘটনা প্রতিরোধে বিবৃতি দিয়েছেন। গতকাল রোববার মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা দীর্ঘদিন ধরে তীব্র ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছি যে, ঘরে-বাইরে, বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত নারী ও কন্যারা অব্যাহত ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা এবং যৌন নিপীড়নের মতো সহিংসতার শিকার হচ্ছে। একশ্রেণীর দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিপরায়ন, স্বার্থান্বেষী অপরাধীচক্র, সাম্প্রদায়িক ও উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠীর কাছে সমাজ জিম্মি হয়ে পড়ছে, বিশেষ করে শিশু, নারী, প্রতিবন্ধী, সংখ্যালঘু, আদিবাসী, সুবিধাবঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। যা আমাদের মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও মানবিকতায় আঘাত হানে। নারীর প্রতি সহিংসতা সমাজকে কলুষিত করছে, শিশু, কিশোর, তরুনদের একাংশ অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে, প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনলাইন মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার করছে। বহুলাংশে সমাজের উদাসীনতায় বেআইনী সালিশের মাধ্যমে মিটমাটের ঘটনা ঘটছে, ধর্ষকের সাথে বিয়ের ঘটনা ধর্ষণের মতো অপরাধের গুরুত্ব লঘু করে সমাজে অন্য বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করছে।
এই পরিস্থিতি নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে ধর্ষকের সর্বোচ্চশাস্তি মৃত্যুদন্ড ঘোষণাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হলেও অবস্থার কোন উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছেনা জানিয়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আজ ঘরে, বাইরে, কর্মক্ষেত্রে কোথাও নারী নিরাপদ নয়, যা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে পাশাপাশি নারীর সার্বিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করছে। নারী ও কন্যার প্রতি নৃশংস নির্যাতনের ঘটনার বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা, বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অপরাধ সংগঠনকারীরা বেপরোয়া এবং তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
লিখিত বিবৃতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে এই সকল ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রæত গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির লক্ষ্যে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ এবং ঘটনার শিকার নারী ও কন্যা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানায় সংগঠনটি। এছাড়াও নারীর প্রতি এ ধরনের সহিংসতা ও নির্মম নির্যাতনের ঘটনা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নিস্পত্তি করাসহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নিকট দাবি জানানো হয়েছে।
বিশিষ্ট নাগরিকদের মধ্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম, হাশেম খান, ডা. সারোয়ার আলী, সৈয়দ আবুল মকসুদ, বেগম মুশতারী শফী, রামেন্দু মজুমদার, সেলিনা হোসেন, মামুনুর রশিদ, জেড আই খান পান্না, সামন্তলাল সেন, আবুল মোমেন, মফিদুল হক, শাহরিয়ার কবীর, ড. মিজানুর রহমান, ড. শাহদীন মালিক, অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, অ্যাড. এস এম সবুর, মাহবুব জামান, অ্যাড. জেয়াদ আল মালুম, সঞ্জীব দ্রং, হাসান আরিফ এর পক্ষে স্বাক্ষর করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ