বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী সেচ প্রকল্পের অধীনে রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের দুই গ্রামের শতাধিক পরিবারের হাজারো মানুষের ভোগান্তির অবসান হচ্ছে না দীর্ঘ বছর ধরে। কিছু স্থায়ী রাস্তার অভাবে সারা বছর এসব গ্রামের লোকজন বর্ষায় সময় পানিবন্দি আর শুষ্ক মৌসুমে ইরিক্ষেতের আইল ধরে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছে। এসব বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দারস্থ হলেও কোন লাভ হয়নি।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী সেচ প্রকল্পের অধীনে রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের মাঝিপাড়া ও কৈরাবো গ্রামের শতাধিক পরিবারের লোকজনের যাতায়াতের জন্য নেই স্থায়ী রাস্তা। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও দেশের বৃহত্তম পাইকারি মার্কেট ভুলতা গাউছিয়ার সন্নিকটে এ গ্রাম দুটির অবস্থান হলেও স্থানীয় লোকজন দীর্ঘ বছর ধরে স্থায়ী রাস্তার আবেদন করেও কোন সাড়া পায়নি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দক্ষিণ মত্তুর্জাবাদ থেকে মাঝিপাড়া মহব্বতপুর মাদরাসার কাছ দিয়ে মুড়াপাড়া উপজেলা পরিষদ কার্যালয় পর্যন্ত একটি সরু রাস্তা থাকলেও গ্রামের ভেতরে প্রবেশের জন্য নেই কোন স্থায়ী রাস্তা। ওই রাস্তা থেকে মাঝিপাড়া মাদরাসার পেছন দিকে রয়েছে শতাধিক পরিবারের বসবাস। অথচ বেরিবাঁধের অধীনে থাকায় নতুন করে নীচু জমিতে বাসস্থান বেড়ে গেলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নজর নেই বললেই চলে। আবার স্থানীয়রা সমঝোতায় জমি দিতে চাইলেও পরিষদের বরাদ্দ না থাকায় স্থায়ী রাস্তার সঙ্কটে পড়েছেন তারা।
এদিকে এ গ্রামের পাশেই রয়েছে রবিন টেক্স, হারবেস্ট, এনজেট, শরীফ ম্যালামাইনসহ বৃহত্তম শিল্পকারখানা। এসব শিল্পকারখানার শ্রমিকরা এ গ্রামের ঘর বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করেন। তাই শ্রমিক থেকে ভাড়া পাবার আশায় নীচু জমিতে ঘর বাড়ি বেড়ে চলেছে পাল্লা দিয়ে। কিন্তু এসব বাড়ি ঘরে যাতায়াতের জন্য নেই স্থায়ী ব্যবস্থা। তাই স্থানীয় বাসিন্দা ও শ্রমিকদের যাতায়াত অসুবিধায় পড়তে হয় প্রতিনিয়ত।
স্থানীয় মাঝিপাড়ার বাসিন্দা শফিক মিয়া বলেন, পাউবোর খাল নিয়মিত পরিষ্কার না করায় বর্ষার দিনে বাড়ি ঘর তলিয়ে থাকে। এ সুযোগে একটি প্রভাবশালী মহল ওই পানিতে মৌসুমি মাছ চাষ করে থাকে। সে সময় বাধ্য হয়ে কোমর পানি ভেঙে মূল রাস্তায় ওঠতে হয়। আবার শুষ্ক মৌসুমে ফসলি জমিতে চাষাবাদ করায় ক্ষেতের আইল ছাড়া যাতায়াতের জন্য কোন উপায় থাকে না। আবার স্থানে স্থানে পাউবোর খাল পার হতে অস্থায়ী বাঁশ ও কাঠের পুল ব্যবহার করতে হচ্ছে তাদের। এতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন তারা।
স্থানীয় অপর বাসিন্দা মনসুর আলী বলেন, মাঝিপাড়া ও কৈরাবোর নীচু এলাকায় রয়েছে ২শ’র অধিক পরিবারের বসবাস। তাদের কারোই নেই স্থায়ী রাস্তা। ঘনবসতি গড়ে ওঠলেও কিংবা তারা এখানকার ভোটার হলেও তাদের ভাগ্যে জুটেনি রাস্তা। এ সমস্যা বিগত ২০ বছর ধরে।
সাবেক ইউপি সদস্য শামীম ভূঁইয়া বলেন, বহুবার চেষ্টা করেছি এ এলাকার রাস্তার সমস্যা দূর করতে। সরকার থেকে বরাদ্দ না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তাই এখানকার বাসিন্দাদের মধ্য থেকে শ্রমিকরা সময়মতো তাদের কলকারখানায় যেতে পারেন না। শিশু ও বৃদ্ধরা আরো বেশি ভোগান্তিতে পড়ে।
এ বিষয়ে ভুলতা ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, রাস্তার দাবি আছে কিন্তু সরকার ১২ ফুটের নিচে বরাদ্দ দেয় না। তবু নিজ অর্থায়নে মাটি ভরাট করে এ সঙ্কট দূর করতে চেষ্টা করবো। তাছাড়া পাউবোর খাল পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছি ফলে সামনের বছর পানি জমে থাকবে না।
এছাড়াও ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আরিফুল হক ভুঁইয়া বলেন, বরাদ্দ যতটুকু পাই তাই দিয়ে রাস্তাঘাট হচ্ছে। মাঝিপাড়া কৈরাবোর বসবাসকারী লোকজনের ভোগান্তি বিষয়ে জানি কিন্তু সরকারি জমি সঙ্কটে রাস্তা হয়নি। তবে স্থানীয়রা মিলে জমি ছাড়লে রাস্তার ব্যবস্থা করা যাবে।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুঁইয়া বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তাগুলো সাধারণত স্থানীয়দের সমঝোতায় তৈরি হয়। প্রথমে মাটি ভরাট কাজ পরে পাকা করা হয়। ভুলতার সমস্যাটা বিচ্ছিন্ন ঘর বাড়ি থাকার কারণে হয়েছে। শিগগিরই এসব গ্রামে রাস্তার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।